দুই ভারতীয় নাগরিকসহ আটজন পাচারকারীকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর ৫টায় বিসিজি স্টেশন সাঙ্গু কর্তৃক চট্টগ্রাম বহিঃনোঙ্গর এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন চট্টগ্রাম বহিঃনোঙ্গর এলাকায় একটি ইঞ্জিন চালিত কাঠের নৌকার গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে কোস্ট গার্ড সদস্যগণ নৌকাটিকে থামার সংকেত দেয়। নৌকাটি কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত দিক পরিবর্তন করে পালিয়ে যেতে শুরু করলে কোস্ট গার্ড সদস্যরা ধাওয়া করে নৌকাটিকে ধরতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে নৌকাটি তল্লাশী করে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা ৭ হাজার ৪৭৮ পিস শাড়ি, ৮৮০ পিস লেহেঙ্গা জব্দ করা হয় এবং ২ জন ভারতীয় নাগরিকসহ ৮ পাচারকারীকে আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, জব্দকৃত অবৈধ শাড়ি এবং আটককৃত পাচারকারীদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে পতেঙ্গা মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর (ইনসটে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন)। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের পোড়া ভবনে হামলা ও ভাঙচুর ছাত্রদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্য শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে নেয়নি, আর এই হামলা তারই প্রতিফলন।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন। "শেখ হাসিনা ভারতে বসে যে ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, তা ছাত্ররা ভালোভাবে নেয়নি। এটি তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ," বলেন তৌহিদ হোসেন।
তিনি আরও জানান, ভারতকে লিখিতভাবে অনুরোধ করা হয়েছিল শেখ হাসিনা যেন উসকানিমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকেন। ইতোমধ্যে ভারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে আবারও চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার ভারত থেকে অনলাইনে ভাষণ দেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে একটি সংগঠন 'বুলডোজার মিছিল' কর্মসূচির ডাক দেয় এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে যাত্রা করে।
সন্ধ্যা ৮টার আগে থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়িটিতে ঢুকে পড়ে এবং গভীর রাত পর্যন্ত ভাঙচুর চালানো হয়। এক পর্যায়ে একটি এক্সকেভেটর (বুলডোজার) আনা হয়, যা বৃহস্পতিবার সকালেও কার্যক্রম চালিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, এক্সকেভেটর দিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। আশপাশে উৎসুক জনতার ভিড়, কেউ ভাঙা স্লাব থেকে রড খুলে নিচ্ছে, কেউ এসি খুলে রিকশায় নিয়ে যাচ্ছে, কেউ ভিডিও করছে।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিও ভেঙে ফেলা হয়েছে, তবে আশপাশে কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দেখা যায়নি।
এর আগে, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর তিনি দেশত্যাগ করেন। তখনও বিক্ষুব্ধ জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে হামলা চালায় ও আগুন দেয়।
ভারতের সঙ্গে সই হওয়া বিভিন্ন চুক্তি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "বাংলাদেশ একতরফাভাবে এসব চুক্তি বাতিল করতে পারবে না। বিশেষ করে আদানির সঙ্গে করা চুক্তিতে দেশের স্বার্থ রক্ষা করা হয়নি।"
তিনি আরও জানান, আগামী এপ্রিলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফরে আসতে পারেন। বাংলাদেশের কূটনৈতিক অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমরা পাকিস্তানকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো স্বাভাবিকভাবেই দেখতে চাই।"
ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপি দীর্ঘদিন ধরে আড়ালে ছিলেন। প্রথম দিকে তার এই অনুপস্থিতিকে স্বাভাবিক মনে করেছিলেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা, তবে সময় গড়ানোর সাথে সাথে তার আড়ালে যাওয়ার রহস্য আরও গাঢ় হয়। এর মধ্যে সামনে আসে পপির গোপন সংসার এবং সন্তানের খবর।
শোবিজ থেকে দূরে থাকলেও সম্প্রতি জমি দখলের অভিযোগে আলোচনায় আসেন পপি। তার বিরুদ্ধে তার পরিবার, বিশেষ করে তার বোন, থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। আর এই ঘটনার পরই আড়াল ভেঙে ক্যামেরার সামনে হাজির হন পপি। দীর্ঘ তিন বছর পর সবার সামনে এসে তিনি জানান, তার পরিবার তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে এবং তাকে খুন করার জন্য খুনিও ভাড়া করা হয়েছিল।
স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপি। ছবি: সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিও বার্তায় পপি তার বিরুদ্ধে মা, ভাই, বোনের অভিযোগকে মিথ্যা বলে দাবি করেন।
ভিডিওতে পপি বলেন, ‘‘২৮ বছর ধরে চলচ্চিত্রে কাজ করেছি, মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, কিন্তু এই মুহূর্তে আমি একজন ব্যর্থ মানুষ হিসেবে কথা বলছি। কারণ, দীর্ঘ ২৮ বছর যাদের জন্য কাজ করেছি, যাদের লালন-পালন করেছি, তাদের কাছে আমি এখন অযোগ্য।’’
চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপি। ছবি: সংগৃহীত
তিনি আরও বলেন, ‘‘মানুষ সবসময় সবার কাছে ভালো হতে পারে না। একসময় আমি যাদের দুহাতে উপহার দিয়েছি, এখন তারা আমাকে শত্রু হিসেবে দেখে।’’ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমার পরিবার কতটা নিচে নামতে পারে, কতটা হিংস্র ব্যবহার করতে পারে, তা দেখে আমি অবাক। তাদের মিথ্যা অভিযোগগুলো আমাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে মিডিয়ার সামনে।’’
পপি জানান, তার সব অর্থ তার পরিবার নিয়েছে এবং তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শূন্য ছিল। ‘‘আমার দেহটা ছাড়া কিছুই আমার ছিল না। আমার সব কিছুই তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।’’
মায়ের ব্যাপারে তিনি জানান, ‘‘পৃথিবীতে সব মা ভালো মা নয়। দুর্ভাগ্যবশত, আমার মা আমাকে সেইভাবে ভালোবাসতে পারেনি।’’ তবে, তিনি মায়ের প্রতি কোনো অভিযোগ রাখেননি।
মায়ের সঙ্গে চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপি। ছবি: সংগৃহীত
পপির এই বক্তব্য, তার পরিবারের প্রতি তিক্ততার পাশাপাশি তার জীবনের এক বেদনাদায়ক সত্য উন্মোচন করেছে। তিনি বলেন, ‘‘আমার বাবা-মা আমাকে মেশিন হিসেবে দেখেছিলেন, তাদের কাছে আমি ছিলাম শুধু একটি উপার্জনের মাধ্যম।’’ এছাড়া, ২০০৭ সালে পপির অর্থ ও সম্পত্তি নিয়ে অনেক জটিলতা তৈরি হয়েছিল, কিন্তু সে সময় তার সিনেমার সহকর্মীরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন।
প্রসঙ্গত, পপি সবশেষ ২০২২ সালে শিল্পী সমিতির নির্বাচনের সময় প্রকাশ্যে এসেছিলেন এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আক্তারকে সমর্থন করেছিলেন।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের ১৪ নাগরিক এবং বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে একুশে পদক ২০২৫ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এ তথ্য জানান।
শিল্পকলায় চলচ্চিত্রে একুশে পদক পাচ্ছেন আজিজুর রহমান (মরণোত্তর), সংগীতে উস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া (মরণোত্তর), ফেরদৌস আরা (সংগীত), নাসির আলী মামুন (আলোকচিত্র), রোকেয়া সুলতানা (চিত্রকলা)।
সাংবাদিকতায় একুশে পদক পাচ্ছেন মাহফুজ উল্লা (মরণোত্তর) ও মাহমুদুর রহমান (সাংবাদিকতা ও মানবাধিকার)।
সংস্কৃতি ও শিক্ষায় একুশে পদক পাচ্ছেন ড. শহীদুল আলম, শিক্ষায় ড. নিয়াজ জামান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মেহেদী হাসান খান, সমাজসেবায় মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী (মরণোত্তর), ভাষা ও সাহিত্যে হেলাল হাফিজ (মরণোত্তর), ভাষা ও সাহিত্যে শহীদুল জহির (মো. শহীদুল হক) (মরণোত্তর) এবং গবেষণায় একুশে পদক পাচ্ছেন মঈদুল হাসান।
এ ছাড়া ক্রীড়ায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে একুশে পদক দেওয়া হবে।
দেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র বিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক দেয়া হচ্ছে। কারা একুশে পদক পাবেন সেটি বাছাইয়ের মূল দায়িত্ব পালন করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।