রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের পোড়া ভবনে হামলা ও ভাঙচুর ছাত্রদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্য শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে নেয়নি, আর এই হামলা তারই প্রতিফলন।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন। "শেখ হাসিনা ভারতে বসে যে ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, তা ছাত্ররা ভালোভাবে নেয়নি। এটি তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ," বলেন তৌহিদ হোসেন।
তিনি আরও জানান, ভারতকে লিখিতভাবে অনুরোধ করা হয়েছিল শেখ হাসিনা যেন উসকানিমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকেন। ইতোমধ্যে ভারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে আবারও চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার ভারত থেকে অনলাইনে ভাষণ দেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে একটি সংগঠন 'বুলডোজার মিছিল' কর্মসূচির ডাক দেয় এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে যাত্রা করে।
সন্ধ্যা ৮টার আগে থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়িটিতে ঢুকে পড়ে এবং গভীর রাত পর্যন্ত ভাঙচুর চালানো হয়। এক পর্যায়ে একটি এক্সকেভেটর (বুলডোজার) আনা হয়, যা বৃহস্পতিবার সকালেও কার্যক্রম চালিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, এক্সকেভেটর দিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। আশপাশে উৎসুক জনতার ভিড়, কেউ ভাঙা স্লাব থেকে রড খুলে নিচ্ছে, কেউ এসি খুলে রিকশায় নিয়ে যাচ্ছে, কেউ ভিডিও করছে।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিও ভেঙে ফেলা হয়েছে, তবে আশপাশে কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দেখা যায়নি।
এর আগে, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর তিনি দেশত্যাগ করেন। তখনও বিক্ষুব্ধ জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে হামলা চালায় ও আগুন দেয়।
ভারতের সঙ্গে সই হওয়া বিভিন্ন চুক্তি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "বাংলাদেশ একতরফাভাবে এসব চুক্তি বাতিল করতে পারবে না। বিশেষ করে আদানির সঙ্গে করা চুক্তিতে দেশের স্বার্থ রক্ষা করা হয়নি।"
তিনি আরও জানান, আগামী এপ্রিলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফরে আসতে পারেন। বাংলাদেশের কূটনৈতিক অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমরা পাকিস্তানকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো স্বাভাবিকভাবেই দেখতে চাই।"