বাঁশের খুঁটিতে হাইভোল্টেজ বৈদ্যুতিক সংযোগ
বোরো আবাদটি সম্পূর্ণ সেচ নির্ভর। একমাত্র ভরসা গভীর নলকূপ বা শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে সেচ পদ্ধতি। সেচ যন্ত্র চালাতে প্রয়োজন হাইভোল্টেজ বিদ্যুৎ সংযোগ। বৈদ্যুতিক পিলারের পরিবর্তে বাঁশের খুঁটিতে এসব হাইভোল্টেজ তর দিয়ে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে পরিণত হয়েছে মৃত্যুর ফাঁদ! আর এমন দৃশ্য চোখে পড়বে নওগাঁর বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠগুলোতে।
এসব দেখেও যেন না দেখার ভান করছেন দায়িত্বশীলরা। সেচ সুবিধা পেতে মাঠগুলোতে যেখানে সেখানে বসানো হয়েছে গভীর নলকূপ বা শ্যালো মেশিনে ব্যবহৃত হাইভোল্টেজ বৈদ্যুতিক মোটর। দায়সারাভাবে বাঁশের খুঁটিতে বৈদ্যুতিক তার নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেচ কাজে ব্যবহৃত গভীর নলকূপ বা শ্যালো মেশিনের মোটরে। মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়ায় এ তারে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে দুজনের মৃত্যুও হয়েছে বলে দাবি কৃষকদের।
নওগাঁ পল্লীবিদ্যুত সমিতির তথ্য অনুযায়ী, দুই সমিতির অধীনে বৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ মিলিয়ে সেচ গ্রাহকের সংখ্যা ১১ হাজার ৫৫৩ জন।
জেলার মহাদেবপুরে উপজেলার মাতাজী হাট এলাকার কৃষক আফছার আলী জানান, বাঁশের খুঁটিগুলো বেশি দিন টেকে না। ফলে অল্প দিনেই ভেঙে মাটিতে পড়ে যায়। ফলে বিদ্যুতের তার পড়ে মাটিতে। একটু অসাবধান হলেই হাইভোল্টেজ এসব তারে জড়িয়ে ঘটে দুর্ঘটনা।
তিনি আরও জানান, এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো নজরদারি নেই। পাশাপাশি গভীর নলকূপ বা শ্যালো মেশিন মালিকদেরও কিছুটা দোষ রয়েছে৷ এসব বৈদ্যুতিক তার যদি শক্ত খুঁটি দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে বিপদের আশঙ্কা থাকে কম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাণীনগর উপজেলার গোনা এলাকার শ্যালো মেশিন মালিক ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, 'পল্লী বিদ্যুতের উপআঞ্চলিক কার্যালয়ে গত দুই বছর আগে বৈদ্যুতিক পিলারের জন্য আবেদন করি। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও বাঁশের খুঁটিতে বিদ্যুতের তার টেনে জমিতে পানি সেচের ব্যবস্থা করছি।
মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউপির কৃষক সাইফুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, জমিতে এসব বাঁশের খুঁটিতে বৈদ্যুতিক তার বাতাসে মাটিতে হেলে যায়। জমির আইলে ঘাস কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের তার ছিঁড়ে পড়ে থাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই গত কয়েক মাস আগে দুই জন মারা যান।
নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার সন্তোষ কুমার সাহা জানান, সেচের সময় বিদ্যুৎ সংযোগ সম্প্রসারণ করতে হয় দ্রুতবেগে। আর এভাবে বাঁশের খুঁটিতে ঠেকিয়ে বৈদ্যুতিক তার টানা বিপজ্জনক। তবে এ লাইনগুলো অনেক আগে দেওয়া। ফলে এখন চাইলেও খুব সহজে এগুলো পরিবর্তন করা যাবে না। এখন যেসব লাইন দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে দেওয়া হচ্ছে।
এসএন