স্বরূপকাঠিতে গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের টাকা লাইনম্যানের পকেটে
স্বরূপকাঠিতে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের একাধিক গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের টাকা কালেকশন করে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে লাইনম্যান সাকিবের বিরুদ্ধে। তিনি অফিসের লাইনম্যান পরিচয়ে গ্রাহকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিলের কাগজে নিজ স্বাক্ষরসহ সিল মোহর দিয়ে মাসের টাকা সংগ্রহ করত। বিলের টাকা নিয়ে অফিসে জমা না দেওয়ায় প্রতি মাসে ভুতুড়ে বিল আসত গ্রাহকদের। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার(ডিজিএম) লাইনম্যান সাকিবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় আইনগত কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছেন।
রাজিব, আফসারসহ একাধিক গ্রাহক অভিযোগ করেন, আমরা পূর্বে অফিসে গিয়ে বিদ্যুৎ বিলের টাকা জমা দিতাম। বিগত কয়েকমাস যাবত অফিসের লাইনম্যান পরিচয়ে সাকিব নামে এক লোক বিলের টাকা নিত। আমরা তার কাছে টাকা দিলেও প্রতি মাসে পূর্বের মাসের বিলের টাকা যোগ হয়ে ভুতুড়ে বিল আসত। বিষয়টি তাকে জানালে তিনি বলত, কারিগরি সমস্যার কারণে এমনটা হচ্ছে। পরের মাসে ঠিক হয়ে আসবে। টাকা নেয়ার সময় সে বিলের কাগজে তার পদবীর সিলসহ নিজ স্বাক্ষর করত। এভাবে সে জানুয়ারি মাস থেকে আমাদের বিলের টাকা জমা নিত। সে ৪ মাস পর্যন্ত টাকা নিয়ে জমা না দেওয়ায় বর্তমানে আমাদের বিলের কাগজে অনেক টাকা বিল এসেছে। বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলার জোনাল অফিসের ডিজিএমের কাছে দিনের পর দিন ঘুরেও কোনো কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি না। কোনো কথা বলতে গেলেই ব্যস্ত আছি বলে দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জোনাল অফিসের এক কর্মচারি জানান,‘সাকিব আমাদের অফিসের সন্ধ্যা নদীর পূর্ব পাড় অঞ্চলের লাইনম্যান ছিল। গ্রাহকের বিলের টাকা জমা নিয়ে অফিসে জমা দিত না। এভাবে সে একাধিক গ্রাহকের সাথে এ রকম প্রতারণা করেছে। যে কারনে তাকে আমাদের ডিজিএম স্যার চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য লাইনম্যান সাকিবকে ফোন দিলে তিনি বলেন, গ্রাহকের টাকা নিয়ে আমি অফিসে জমা করেছি। তবে কিছু কিছু টাকা জমা হয়নি। টাকা নিয়ে জমা না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে অভিযুক্ত লাইনম্যান আরো বলেন, সেই বিষয় আমার ডিজিএম স্যার জানেন। আপনার কাছে বলব না।
এ বিষয়ে জানার জন্য পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) ওয়াহিদুজ্জামানের সাথে দেখা করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন কথা বলার সময় নাই। আমি অফিসের মহিলাদের নিয়ে বসেছি। পরে কথা বলব। যোহর নামাজের পরে আসেন।’ এই বলে তিনি অফিস থেকে বেরিয়ে পড়েন। নামাজের পর অফিসের সামনে ঘণ্টাব্যাপী বসে থাকলেও তিনি আর অফিসে আসেননি।
পরে ফোন দিয়ে জানতে চাইলে ডিজিএম বলেন, গ্রাহকের বিলের টাকা কালেকশন করে সাকিব অফিসে জমা দিত না। সালায় বিল কালেশন করে মদ গাজা খাইত। ওর চাকরি নট(বরখাস্ত) করে দিয়েছি।
গ্রাহকের বিলের টাকা কালেকশন করে জমা না দিয়ে আত্মসাতের ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে কিনা পুনরায় জানতে চাইলে তিনি লাইন কেটে দেন।
এসআইএইচ