শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বৃষ্টিতে তরমুজের পচন, লোকসান নিয়ে বাড়ি ফিরছেন চাষিরা

পটুয়াখালীর গলাচিপার তরমুজ চাষি জলিল আকন ট্রলারে করে সাড়ে ৭ হাজার তরমুজ নিয়ে এসেছেন বরিশাল পোর্ট রোডের বালুর ঘাটে (বর্তমানে তরমুজের আরত)। তবে মন খারপ করে বসে আছেন ট্রলারের এক পাশে। এ সময় কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ক্ষেতের সব তরমুজ বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। পটুয়াখালীর গলাচিপা দিয়া তরমুজ নিয়ে বরিশাল আইজ তিন-চার দিন হইছে আইসি। ক্ষেত দিয়া সব তরমুজ কাইট্টা নিয়া আইসি। দুই কানি জমিতে তরমুজ চাষ করছি। যাতে খরচ হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। আর বরিশালে আসার পথেও অর্ধেক তরমুজ নষ্ট হইছে। যা বিক্রি করছি হেয়ার মধ্যে লেবারের টাকা, গাড়ির টাকা, ট্রলারের টাকা দিয়া ঘরে ১০টা টাকা নিয়াও উঠতে পারমু না। বাড়িতে এখন না খালি পকেটে যাওয়ার অবস্থা। এবার তরমুজ ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু মাঠেও টাকা নাই আর আমরা বেচতেও পারি না। সব ফেলায় দেওয়া লাগতেছে।’

বরিশালের তরমুজের পাইকারী আড়ত পোর্ট রোড বালুর ঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, বরিশালের বিভিন্ন স্থান থেকে তরমুজের শত শত ট্রলার ঘাটের চারপাশে খালের মধ্যে নোঙর করা আছে। সিরিয়াল অনুযায়ী এসব ট্রলারগুলো থেকে পণ্য নামাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঘাট শ্রমিক ও চাষিরা। অন্যদিকে আরতদার ও চাষিদের মধ্যে চলছে দাম-দর। কেউ কেউ হিসেব নিয়ে ব্যস্ত। তবে ঘাট ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, খালের মধ্যে নোঙর করা ট্রলার থেকে হাজার-হাজার পঁচা তরমুজ খালের মধ্যে ফেলছেন চাষি ও শ্রমিকরা। এতে পুরো খাল ভরে গেছে পঁচা তরমুজে।

জানা গেছে, বরিশালের ভোলার চরফ্যাশন, চর কাজল, চর বিশ্বাস, লাহারাহাট, পটুয়াখালীর গলাচিপা, আমতলী, কালাইয়া, কালেসসরী, চন্দ্রদ্বীপ, বাঘমারা, বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থেকে তরমুজ আসে। পরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে ভরে পাঠানো হয়।

তরমুজ চাষী মোহাম্মদ কোবির খান বলেন, ‘ট্রলারে যত মাল নিয়ে আইছি হেয়ার মধ্যে তিন ভাগের দুই ভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি এক ভাগ এখন কূলে উঠাইতেছি। তরমুজ সিজনের এখন এক মাস চলে। এর মধ্যে ২০ দিনই এই বৃষ্টি আর জোয়ারের পানি। বাকি ১০ দিনে যা পাইছি,ক্ষেতে সব কাইটা ফেলছি।

গলাচিপার চর বিশ্বাস এলাকার তরমুজ চাষী রিপন বয়াতি বলেন, ‘বরিশাল ঘাটে আসছি আজ পাঁচ দিন। আমরা আড়াই কানি জমির মধ্যে তরমুজ চাষ করছি। বরিশালে ৫৫০ পিস তরমুজ নিয়া বরিশালে আসছি। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টিতে সব তলায় যাওয়ার কারণে এখন পথে অনাতে আনতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সাড়ে পাঁচশোর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪৩০ পিস তরমুজ বিক্রি করতে পারছি। তাও কম দামে। এখন এই টলার ভাড়া এবং আড়তে টাকা দিয়ে বাড়িতে টাকা নিয়ে যাওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। পকেট খালি নিয়েই বাড়ি ফিরতে হবে। আমাগো এখন দুর্যোগ চলে। এত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না। ক্ষেতে ফলন ভালো হলে কি হবে বৃষ্টিতে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।’

অন্য এক চাষী মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ‘বৃষ্টি হইলে তরমুজ নষ্ট হয়। আর বৃষ্টি না হইলে তরমুজ মিষ্টি হয় না। মানুষ এখন বড় যন্ত্রণায় আছে। বর্তমানে ক্ষেতে যার তরমুজ আছে তারও অধিকাংশ পচা। রমজানের শুরু থেকেই বাজারে তরমুজ পঁচা আসতে আছে। তবে রমজানের আগে কিছুটা ভালো ছিল।’

এ বিষয়ে আড়তদার মো. হারুন বলেন, ‘একদিকে নদীর পানি। আরেকদিকে বৃষ্টি। যার কারণে এখন তরমুজ চাষীদের অকাল চলছে। বাজারে কি বিক্রি করবে, খরচ কেমনে উঠাবে? সেই চিন্তায় ব্যবসায়ীগো মাথা খারাপ। মাল (তরমুজ) টলারে এবং গাড়িতে তুলে বরিশাল ঘাটে আনতে আনতে তার অর্ধেকের বেশি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এগুলি অতিরিক্ত বৃষ্টি এবং পানির কারণে হচ্ছে। এখন টলার ঘাটে তরমুজ বিক্রির জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে চাষিরা। যার কারণে তারা ইফতার করারও সময়টুকু পায় না। কারণ যত বেশি ঘাটে তরমুজ রাখবে তত বেশি তরমুজ নষ্ট হবে।’

পোর্ট রোড বালুরঘাটের তরমুজ ব্যবসায়ী আড়তদার শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘অধিকাংশ তরমুজ চাষীরা নদীর পাশে চরে চাষ করেন। ফলে জোয়ারের পানিটা ক্ষেতে ওঠে। এ ছাড়াও উপর থেকে বৃষ্টি পড়ে অন্যদিকে অতিরিক্ত গরম। যার কারণে এই তরমুজ নষ্ট হচ্ছে। এর বেশির ভাগ ক্ষতি হয় অমাবস্যা অথবা পূর্ণিমায় হঠাৎ করে ক্ষেতে পানি ওঠে তলিয়ে যায় যা থামানোর মতো কোনো উপায় থাকে না। এই তরমুজটা নষ্ট হওয়ার কারণে চাষিরা সঠিক দামটাও পায় না।’

অন্যদিকে ঘাটের দুর্ভোগের কথা জানিয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘এই খালটির খনন কাজ না হওয়ার কারণে সব ট্রলারগুলো একত্রে ঘাটে ভিড়তে পারে না। এই কারণে সিরিয়াল নিয়ে ঘাটে ভিড়তে হয়। অনেক চাষীদের দুই থেকে তিন-চার দিনও ট্রলার দূরে ভিড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। এ জন্য রোদ আর অতিরিক্ত গরমের কারণে তরমুজ নষ্ট হচ্ছে। এই খালটি খননের দাবি জানাই। খনন হলে কিছুটা চাষীদের দুর্ভোগ কমবে। বরিশাল পোর্ট রোড এবং লঞ্চঘাটের আওতাভুক্ত যারা ভুক্তভোগী তাদের এই সমস্যাটা বেশি দেখা দিচ্ছে। যেখানে একটি তরমুজের ট্রলার খালি করতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা কিন্তু সেখানে ট্রলার ঢুকতেই সময় লাগে তিন থেকে চার দিন। ফলে ওই তরমুজের সঠিক দামটাও চাষিরা পায় না। ওই তরমুজের বাজার দর যদি থাকে ১০ থেকে ৯ হাজার টাকা সেখানে তারা তিন-চার দিন পরে পায় তিন থেকে চার হাজার টাকা। তাহলে চাষিরা দাম পাবে কিভাবে?’

আড়তদার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খালে পানি নাই। ট্রলার ভিড়তে পারে না। ঠিকমতো প্লেস পায় না। যার জন্য এখন চাষিরা লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে। আমরা ঘাট কর্তৃপক্ষের কাছে বলেছি এখানে ব্যবসা করতে হলে খালটিকে দ্রুত খনন করতে হবে। তা না হলে ব্যবসা করা সম্ভব হবে না। কারণ কোনো ট্রলার এখন ভিড়তে পারছে না ঘাটে।’

বরকত ফল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী বরকতুল্লাহ বলেন, ‘বৃষ্টির কারণ এবং পানির কারণে পঁচা তরমুজ বাজারে আসছে। তরমুজ এমনভাবে পচা শুরু করেছে, ভয়ে চাষিরা তাদের ক্ষেতে যা পেয়েছে তাই কেটে বাজারে নিয়ে আসছে। তাও পথে পথে অনেক তরমুজ পঁচে যাচ্ছে। যার কারণে এখন অর্ধেক তরমুজ ঘাটে এসে পৌঁছায় না। এমন অবস্থায় পৌঁছেছে। যেমন ৫০০ টাকার তরমুজে এখন কৃষক পাচ্ছে মাত্র ৫০ টাকা। এছাড়া আড়তদারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

মেসার্স বিসমিল্লাহ ফ্রটসের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, ‘বর্তমানে তরমুজের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। কারণ বর্ষার জন্য তরমুজ ক্ষেত তলিয়ে গেছে। গাছ মরে যাচ্ছে। এজন্য চাষিদের পাশাপাশি আড়তদারেও ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের মধ্যে অনেকে আছে দাধন দিয়েছি। যেখানে ৫ লাখ টাকার মাল আসার কথা সেখানে মাল নামতেছে ৫০ হাজার টাকার। তাতে চাষীও শেষ এবং দাদন দেওয়া আড়তদারাও শেষ। দিন শেষে আমরাই খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।’

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘এই বছর বৃষ্টির কারণে পটুয়াখালী অঞ্চলে ১২০০ হেক্টর জমির তরমুজ চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এই বৃষ্টি চলতি মাসের শেষ বা মাঝামাঝি সময়ে হলে চাষিরা বেশি ক্ষতি হতো না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্যান বিশেষজ্ঞ জিএমএম কবীর খান জানান, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তরমুজ ক্ষেতে পানি জমে গেছে। এ ছাড়াও কোথাও কোথাও শিলা বৃষ্টির কারণে তরমুজে পচন ধরে। তবে বরিশাল বিভাগে তরমুজে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাদের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। পানি নেমে যাওয়ার পর ওইসব ক্ষেতে ওষুধ ছেটানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খামার বাড়ির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে বরিশাল জেলায় তরমুজ চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭০০ হেক্টর জমিতে। তবে আবাদ হয়েছে ১০৪৬ হেক্টর জমিতে।

এসআইএইচ

Header Ad
Header Ad

পুড়িয়ে দেওয়ার আগেই দুই ট্রাক নথিপত্র আটক করলো জনতা  

ছবি: সংগৃহীত

বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের পুরোনো নথিপত্র নিয়ে যাওয়া দুটি ট্রাক স্থানীয় জনতার হাতে আটক হয়ে পুলিশে সোপর্দ হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের কাগাশুরা বাজারে ঘটে। পরে, ট্রাক দুটি সংশ্লিষ্ট অধিদফতরের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

চরবাড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা জিয়াউল ইসলাম সাবু জানান, সচিবালয়ে আগুন দিয়ে নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মাঝে সন্দেহ হয় সেই ধরনের কোনও ঘটনা কিনা। এ কারণে তারা ট্রাক দুটি আটকে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে সংশ্লিষ্ট দফতর প্রধানকে বিষয়টি জানায়। এরপর ঘটনাস্থলে এসে নির্বাহী প্রকৌশলী সবাইকে বলেন, এগুলো বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের পুরোনো কাগজ এবং আসবাবপত্র। পুড়িয়ে ফেলার জন্য পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য হওয়ার পর ট্রাক দুটি ছেড়ে দেয় স্থানীয় জনতা।

এ বিষয়ে বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, প্রায় এক যুগের পুরোনো দাফতরিক নথিপত্র এগুলো। যার কার্যকারিতা শেষ হয়ে গেছে বিধায় পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর ভাড়া করা দুটি ট্রাকে এসব নথিপত্র ও আসবাবপত্র ভর্তি করে তা নগরের ময়লা খোলার ভাগাড়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলার জন্য অফিসের দুই কর্মকর্তা ও এক কর্মচারীকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দু’দিন আগে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে গেছে। শুক্রবার যখন দুই ট্রাকবোঝাই পুরাতন নথি এই এলাকা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখনই সবার মনে সন্দেহ জাগে। বাজারের মধ্য দিয়ে এত কাগজ এর আগে কখনো নদীর ধারে নিতে দেখেনি কেউ। ট্রাক আটক করার পর গাড়ির চালক এগুলো সরকারি নথি এবং পোড়ানো হবে জানালে জনতা পুলিশে খবর দেয়।

এ ধরনের ঘটনা অনেকের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষত সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর।

Header Ad
Header Ad

নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে ফিরে যেতে চাই: উপাচার্য হাছানাত আলী

অধ্যাপক হাছানাত আলী। ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বছর থেকে ক্লাস শুরু করতে চেয়েছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক হাছানাত আলী। দায়িত্ব নিয়ে তিনি সেই ঘোষণাও দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে সাড়া পাননি। আর এতেই হতাশা নিয়ে ফেসবুকে ‘মেধার চর্চা করতে চাই’ শিরোনামে দীর্ঘ পোস্ট করেছেন তিনি।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে উপাচার্য অধ্যাপক হাছানাত আলী তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে পোস্টটি করেন।

ফেসবুকে পোস্টে তিনি লেখেন, ‌‘অনেক আশা নিয়ে গত অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলাম। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগদান করার পর তৎকালীন শিক্ষা সচিব মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এবছর থেকেই গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাঁর উৎসাহে অনুপ্রাণীত হয়ে আমি যোগদানের ঠিক ১০ দিনের মাথায় গত ১৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর চারটি অনুষদের অধীনে ৬টি বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছিলাম।

আশায় ছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদনক্রমে চলতি শিক্ষা বছর থেকেই নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারব।

একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নওগাঁ শহরে ৭তলা বিশিষ্ঠ একটি অস্থায়ী একাডেমিক ভবনের ব্যবস্থাও করে রেখেছিলাম। নওগাঁর একজন দানশীল ব্যক্তির আর্থিক সহায়তায় এক হাজার পাঠ্য পুস্তক সম্বলিত একটি লাইব্রেরি ও ৫০টি কম্পিউটার সম্মৃদ্ধ একটি কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠার সকল প্রস্ততি নিয়ে রেখেছিলাম। একটি ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ৬টি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও ক্লাস রুমের জন্য ৬টি ল্যাপটপ সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া অনেকটাই সম্পন্ন করে ফেলেছি। অন্য আরেকটি ব্যাংকের সহায়তায় একটি স্টাডি সেন্টার ও আরেকটি ব্যাংকের সহায়তায় আইটি সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাবটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক দু’টির সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট গঠনের কাজ শেষ করে ফেলেছি। ৫০ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্লান তৈরীর কাজ শুরু করেছি। এ লক্ষ্যে একটি লিখিত প্রস্তবনা ইউজিসিতে দাখিল করেছি। গত আড়াইটি মাস দিনরাত একাকার করে কাজ করেছি, শুধু শিক্ষক হিসেবে ক্লাসরুমে ফিরে যাব বলে। আমার বড় পরিচয় আমি একজন শিক্ষক।

আমি নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে ফিরে যেতে চাই। অত্র অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি। সবার জানা যে, গত ১৮টি বছর বগুড়া, নওগাঁ ও জয়পুরহাটকে চরমভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে।

প্রকাশ্যে প্রতিজ্ঞা করছি, নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করব, মেধাবীরা শিক্ষক হবেন, মেধার চর্চা হবে। আমি হাল ছাড়িনি, আশাহতও হইনি, বুকভরা আশা নিয়ে এখনও একটি ভালো সংবাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের দিকে তাকিয়ে আছি।’

Header Ad
Header Ad

সচিবালয় ছিল দালালদের হাটবাজার: ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি

প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ সচিবালয়কে দালালদের হাট বাজার বানিয়ে ফেলা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

আবুল কালাম আজাদ পোস্টে লেখেন, ‘কিছু লোক সরকারকে কঠোর হতে বলে আবার সামান্যতম কঠোর হলে গেল গেল রব তোলে। এই দ্বিচারিতা বন্ধ হওয়া জরুরি। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত করা নিয়ে যথারীতি এই দ্বিচারিতা আবার শুরু হয়েছে। প্রবেশাধিকার সীমিত করার এই সিদ্ধান্তটি খুবই সাময়িক।’

বিষয়টি পরিষ্কার করা দরকার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো সাংবাদিকের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বাতিল করা হয়নি। কেবল সচিবালয়ের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার সীমিত করা হয়েছে। তা-ও খুবই অল্প সময়ের জন্য। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অস্থায়ী পাস ইস্যু করা হবে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিগগিরই বিদ্যমান সব প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডই পর্যালোচনা করা হবে এবং নতুন অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড ইস্যু করার জন্য সমস্ত স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছে আবেদন চাওয়া হবে।’

সাংবাদিকদের কাজ আরও সহজ হবে জানিয়ে উপ প্রেস সচিব বলেন, ‘এটা এখন ওপেন সিক্রেট, বাংলাদেশ সচিবালয়কে দালালদের হাটবাজার বানিয়ে ফেলা হয়েছিল। সরকারের সর্বশেষ এই সিদ্ধান্তে দালাল ছাড়া কারও শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা মনে করি, এটা সাংবাদিকদের কাজ আরও সহজ করবে। এখন সাময়িক অসুবিধা হলেও চূড়ান্ত বিচারে এটা সবাইকে সহযোগিতা করবে। এ জন্যই সবার সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে।’

অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডে রাষ্ট্রের একটা বিপর্যয় হয়েছে, এটা মানতে কারও দ্বিধা থাকার কথা নয়। এ জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও করা হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কখনো স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক, সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দিয়ে একসঙ্গে কোনো ঘটনার তদন্ত করা হয়নি।’

সংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়ে আবুল কালাম বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী বলেই এই ধরনের কমিটি করা হয়েছে। সাংবাদিকদের দূরে রেখে তদন্ত কাজ চালানো হবে বলে যারা আবোল-তাবোল বকছেন, এরা মারাত্মক ভুলে আছেন। আমাদের বিশ্বাস, সাংবাদিকরাও বিষয়টি উপলব্ধি করবেন এবং চলমান পরিস্থিতিতে সরকারকে সহযোগতিা করবেন।’

এর আগে গতকাল শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সরকারি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের অনুকূলে ইস্যু করা অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দ্বারা সচিবালয়ে প্রবেশাধিকার বাতিল করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নানা মহলে সমালোচনা শুরু হলে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

ওই আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সচিবালয়ে সার্বিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির স্বার্থে সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুকূলে দেওয়া স্থায়ী প্রবেশ পাস (ডিজিটাল এক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম) এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য দেওয়া অস্থায়ী প্রবেশ পাস ছাড়া সব ধরনের অস্থায়ী (বেসরকারি ব্যক্তিদের জন্য) সচিবালয় প্রবেশ পাস বাতিল করা হলো।

সাংবাদিকদের অনুকূলে ইস্যু করা অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দ্বারা সচিবালয়ে প্রবেশাধিকার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাতিল করা হলো।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাতিল করা বিভিন্ন শ্রেণির সচিবালয় প্রবেশ পাসধারীরা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ, ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার, ডিএমপি, ১৫ আবদুল গণি রোড, ঢাকায় স্থাপন করা বিশেষ সেলের মাধ্যমে নতুন করে অস্থায়ী প্রবেশ পাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পুড়িয়ে দেওয়ার আগেই দুই ট্রাক নথিপত্র আটক করলো জনতা  
নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে ফিরে যেতে চাই: উপাচার্য হাছানাত আলী
সচিবালয় ছিল দালালদের হাটবাজার: ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি
সচিবালয়ে সাংবাদিক প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা সাময়িক: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
অর্থপাচারের ফাইল নষ্ট করতেই সচিবালয়ে আগুন দেয়া হয়েছে: রিজভী
ইউপি সদস্যকে ধর্ষণ, পরে মুখে বিষ ঢেলে হত্যা!
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে প্রেম, অতঃপর বিয়ে
ঐক্যবদ্ধ না হলে পরাশক্তিরা মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাবে: আজহারী
মোজাম্বিকে কারাগারে দাঙ্গায় ৩৩ জন নিহত, পালিয়েছে অন্তত ৬ হাজার বন্দি
আজ বন্ধুকে কল করার দিন
নাগরিক কমিটির ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী কমিটি ঘোষণা
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরো ৩৭ জন নিহত
ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরল ৬ বাংলাদেশি জেলে
সচিবালয়ের সকল বেসরকারি পাস বাতিল, ঢুকতে পারবেন না সাংবাদিকেরাও
শেখ হাসিনা-জয়ের ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের প্রমাণ পেয়েছে এফবিআই
দুর্নীতিবাজদের ফাইলগুলো পুড়ে গেছে : রুহুল কবির রিজভী
শনিবার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না
গুম অবস্থায় ভারতের কারাগারে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা সুখরঞ্জন বালির
শেখ হাসিনাকে ‘নারী’ বলতে রাজি নন মৎস্য উপদেষ্টা
সূর্যের সবচেয়ে কাছে মানুষের তৈরি যান