'আমাগো জমিতে আমাগোই নামতে জেলের ভয় দেখায় ম্যাজিস্ট্রেট'
‘আমাগো জমিতে আমাগোই নামতে ৩ বছর জেলের ভয় দেখায় ম্যাজিস্ট্রেট। বৃদ্ধ শাশুড়িসহ আমরা ৩ পুত্রবধূ ম্যাজিস্ট্রেটের পায়ে পড়েও রক্ষা পাই নাই। কত কষ্টের ফল মূহূর্তে শেষ। কোনো নোটিশ নাই, আদালতের নির্দেশ নাই, হঠাৎ বাড়ির মধ্যে আইসা কয় মোবাইল কোর্ট। কারো কোনো কথা শুনলো না। দেয়ালটা তো ভাঙলই, বাড়ির তিন পুত্রবধূকে ধইরা থানায় নিয়া ৫ ঘন্টা আটকাইয়া রাখল, জরিমানাও করল। আমাদের সঙ্গে হওয়া অমানবিকতা ও মানহানির বিচার চাই, আমরা ডিসি ও ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে মামলা করব। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দিকে একটু দৃষ্টি দিন।’
বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে বরগুনা পৌর শহরের হাই স্কুল সড়কের বাসিন্দা সীমা রায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। এ সময় তার স্বামী, শাশুড়ি, স্থানীয় কাউন্সিলর জাহিদুল করিম বাবুসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আদালতের নির্দেশ ছাড়া বসতবাড়ির দেওয়াল ভাঙার অভিযোগ এনে বরগুনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আর নূরের বিরুদ্ধে করা এই সংবাদ সম্মেলন ছাড়াও এ নিয়ে মানববন্ধনও করেছে সংখ্যালঘু পরিবারটি।
সীমা রায়ের স্বামী নির্মল চন্দ্র রায় বলেন, ‘বরগুনা সদর উপজেলার ৩০ নম্বর বরগুনা মৌজায় এসএ ৯৯৫/১০৬৫/ ৯২৮/৩৭০ দাগের জমিতে পৈতৃক সূত্রে ঘরবাড়ি বানিয়ে বহু বছর আমরা সঠিকভাবে ভোগদখল করে আসছি। গত ২২ মার্চ সেখানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন বরগুনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আল নূর। তিনি আমাদের বাড়ির মধ্যে ঢুকে গেট ও দেয়াল ভাঙচুর করে আমাদের দুই লাখ টাকার ক্ষতি করেছেন। এ ছাড়া আমার স্ত্রীসহ আরও দুই নারীকে ধরে থানায় নিয়ে যান ওই ম্যাজিস্ট্রেট। পাঁচ ঘণ্টা থানায় আটকে রেখে তাদের জরিমানা ও ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ ছাড়া মালিকানাধীন রেকর্ডীয় সম্পত্তিতে বাড়িঘরের দেয়াল ভাঙচুরের এখতিয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেই। যা প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের হয়ে অনুপ্রবেশ করে তিনি অন্যায় করেছেন। প্রশাসন এভাবে আমাদের গুরুতর ক্ষতি করবে ভাবতে পারিনি।’
নির্মল চন্দ্রের ভাইয়ের স্ত্রী সঞ্জিতা রাণী বলেন, ‘২২ মার্চ দুপুরের দিকে হঠাৎ বাড়িতে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ এসে আমাদের দেয়াল ও গেট ভঙচুর করে। অথচ এ জমি আমার শশুরের। তাদেরকে বাঁধা দিলে আমিসহ বাড়ির তিনজন নারীকে ধরে নিয়ে যায়। পাঁচ ঘণ্টার মতো থানায় রাখার পর ভয়-ভীতি দেখিয়ে কাগজে স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেয়।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আল নূর জানান, যা হয়েছে সম্পূর্ণ আইন অনুযায়ী হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। যাদের আটক করা হয়েছিল, তারা সরকারি কাজে বাধা দিয়েছিলেন। মুচলেকা দিয়ে তারা ছাড়া পান।