ইউটিউব দেখে মাল্টা চাষ, ৪ বছরে ১২ লাখ আয়

বরগুনার আমতলীর কুকুয়া ইউনিয়নের হাবিবুর রহমান। নিজ গ্রামে ১৫ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করে বাজিমাত করেছেন তিনি। এ ছাড়াও তার বাগানে রয়েছে আম, লিচু, লেবু, কলা ও পেঁপে এবং পুকুর ভর্তি রয়েছে নানা প্রজাতির মাছ।
খুব অল্প সময়ে আমতলীতে সফল এবং স্বাবলম্বী একজন কৃষক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন হাবিবুর রহমান মাতুব্বর। প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছেন তার বাগান ও পুকুর দেখার জন্য। মাল্টা বাগান দেখতে গিয়ে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হলে হাবিবুর বলেন, ২০ বছর সৌদি ছিলাম। ২০১৫ সালে দেশে ফিরে আসি। দেশে ফিরে বেকার হয়ে পড়ি। কি করব ভাবতেছিলাম। একদিন ইউটিউবে মাল্টা চাষে এক চাষীর সফলতার গল্প শুনে সিদ্ধান্ত নেই মাল্টা চাষ করব।
তিনি আরো বলেন, মাল্টা চাষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহায়তায় বাড়ির পাশে ১৫ বিঘা জমিতে ৫ হাজার মাল্টার চারা রোপনের পর পরিচর্যা শুরু করি। এক থেকে দেড় বছরের মাথায় অল্প কিছু ফল আসে তাতে আমি ১ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করি। কিন্তু বছর যেতেই আয় বাড়তেই থাকে। কারণ প্রতি বছর বাগানে ফলের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এভাবে আমি গত চার বছরে অনন্ত ১২ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছি। এ বছর যে ফল ধরেছে তাতে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করা যাবে।
হাবিবুর মাল্টার পাশাপাশি বাগানের এক পাশে কাগজী লেবু, সবরি কলা, পেঁপে এবং রাজশাহী থেকে বোম্বাই জাতের লিচু এনে চাষ করেছেন। এ সকল ফসল থেকেও বছরে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। বাড়ির ভেতরে রয়েছে ৩ বিঘার ২টি পুকুর সেখানে রুই, কাতলা, মৃগেল, চিরিংসহ নানা জাতের মা ছ চাষ করেছেন। মাছ থেকে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা আয় করেন বলে জানান তিনি।
এদিকে মাল্টা চাষে স্বাবলম্বী হাবিবুর রহমানকে এলাকার সবাই আদর্শ কৃষক হিসেবে কদর করেন। যেকোনও কৃষি কাজের জন্য স্থানীয়রা তার নিকট পরামর্শ নিতে আসেন। তার দেখা দেখি অনেকেই বাড়ির আঙ্গিনায় ফল চাষ করে পরিবারের খাবার চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে বাড়তি টাকা আয় করছেন।
প্রতিবেশী হারুন অর রশিদ বলেন, হাবিবুর রহমান এক সময় বিদেশ ছিলেন। দেশে ফিরে মাল্টা চাষ করে সফল কৃষক হয়েছেন। এটা আমাদের কাছে গর্বের বিষয়। তার কারণে আমাদের গ্রামটা এখন সাবাই চিনে। যেকোনও ফল চাষের আগে তার নিকট থেকে গ্রামের সবাই পরামর্শ নিয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিএম রেজাউল করিম বলেন, হাবিবুর রহমান একজন সফল চাষি। মাল্টা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। পাশাপাশি পেঁপে, কলা, আম, লিচু, পেয়ারা এবং পুকুরে মাছ চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। আমরা কৃষি অফিস থেকে তাকে সহ অন্যান্য কৃষকে উদ্ধুদ্ধ করছি ফল চাষে।
এসআইএইচ
