কমিউনিটি ক্লিনিক আছে, নেই সেবা

উপকূলীয় জেলা ভোলার বিভিন্ন উপজেলার বেশ কিছু ইউনিয়নে এখন পর্যন্ত গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবার মানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। তেমনি দৌলতখানের বিচ্ছিন্ন মদনপুরের চিকিৎসা সেবার ভরসাও কজন পল্লী চিকিৎসক ও একজন সিএইচসিপি, একজন স্বাস্থ্য সহকারী। এখানে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, নেই পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সেবা।
ভোলার দৌলতখানের মদনপুরে দেখা যায়, লোকবল সংকটের দোহাই দিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ভোলার দৌলতখান উপজেলার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল মদনপুরের ১০ হাজার মানুষ। সুবিধা বঞ্চিতদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিকের যাত্রা। এখন প্রায় ছয় হাজার মানুষের জন্য একটি করে ক্লিনিক গড়ে তোলা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় মদনপুরে ১০ হাজার মানুষের জন্য দুটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপিত হয়। যেখানে চিকিৎসা ও ওষুধ বিনামূল্যে পাবার বিধান থাকলেও লোকবলের সংকট দেখিয়ে চলছে কর্তব্যে অবহেলা।
মদনপুরের মতো বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল কমিউনিটি ক্লিনিক। দেশে এই ধরনের ক্লিনিক থেকে প্রতিদিন চার লাখের বেশি মানুষ পেয়ে থাকেন পরিবার পরিকল্পনা সেবা, পুষ্টিসেবা, কিশোর-কিশোরী, মা ও শিশুসহ বয়স্কদের নানা রোগের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা। তবে লোকবল সংকটের কারণে এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত ভোলার প্রান্তিক মানুষ।
একটি কমিউনিটি ক্লিনিকে সপ্তাহে ছয় দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একজন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারের থাকার কথা থাকলেও ভোলার বেশ কিছু জায়গায় রয়েছে ভিন্নতা। কোথাও ক্লিনিক আছে কিন্তু প্রোভাইডার নেই আবার প্রোভাইডর আছে কর্তব্যে অবহেলা করছে। এমনি অবস্থা জেলার মদনপুরের দুটি কমিউনিটি ক্লিনিকে। এর কোনোটিতেই কর্তব্যরত প্রোভাইডার সৌরভকে একদিনও পাচ্ছে না বলে দাবি করেন এলাকাবাসী। অভিযোগ রয়েছে সৌরভ নদী পার হয়ে মাসে দুই-একবার আসেন মদনপুরে। দুর্গম পথে পায়ে হেটে শিশুদের কোলে নিয়ে এসে ক্লিনিক বন্ধ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রোগীরা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সৌরভ বলেন, আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। এখানে দুটি কেন্দ্র আমার একাই চালাতে হয়।
প্রোভাইডার সৌরভ আরো বলেন, এই লোকবল সংকট নিরসনের বিষয়টি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবে। আমি দুটি কেন্দ্রেই সমানভাবে কর্তব্য পালন করছি।
এ বিষয়ে দৌলতখান উপজেলা দায়িত্বরত টিএস আনিসুর রহমান বলেন, আমরা মদনপুরের লোকবল সংকট নিরসনে ব্যাবস্থা নিচ্ছি। অতি শীঘ্রই সেখানে একজন প্রোভাইডার দেওয়া হবে।
মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম নাসিরউদ্দিন নান্নু বলেন, আমার মদনপুরের স্বাস্থ্য সেবার কথা কি আর বলব। এখানে দুটি কমিউনিটি ক্লিনিকে একজন সিএইচসিপি তাও মাসে একবার আসে। একজন স্বাস্থ্য সহকারী সেই কর্তব্যে ব্যাপক অবহেলা করেন।
ভোলা সিএইচসিপি সংগঠনের জেলা সেক্রেটারি মোহাব্বত আলি বলেন, ভোলায় আগের চেয়ে সেবা গ্রহীতার সংখ্যা বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে ক্লিনিক সংকট, লোকবল সংকট।
তিনি জানান, ভোলা জেলার সাত উপজেলায় ৭০টি ইউনিয়নে মোট ২২০টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু থাকলেও সিএইচসিপি ২২০ এর চেয়ে কম আছে।
এসআইএইচ
