কুয়াকাটায় খুলে দেওয়া হয়েছে খাবার হোটেল
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতে বাড়ছে পর্যটকদের চাপ। তবে এখন পর্যন্ত খাবারের মান বৃদ্ধি করতে পারেনি হোটেলগুলো। পর্যটকদের বাসি খাবার পরিবেশনের অভিযোগে একের পর এক অভিযান পরিচালনা করেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাসব্যাপী ভ্রাম্যমাণ আদালত। পঁচা বাসি খাবার পরিবেশনের দায়ে কয়েক দফায় অভিযান পরিচালনা করেও কোন শুরহা হয়নি। তবে এই অভিযানের প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়ে হোটেল গুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় ব্যবসায়ীরা।
পর্যটকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কোনো নোটিশ ছাড়াই খাবার হোটেল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সকাল থেকে খাবার হোটেল বন্ধ থাকায় নিরুপায় হয়ে পাঁচ কিলোমিটার দূরে আলীপুরে নাস্তা করি। কিন্তু পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় আলীপুরের হোটেলগুলোকে খাবার সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে দেখা যায়।
এদিকে পর্যটকদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে দুপুর থেকে পর্যটন মোটেলের রেস্তোরাঁ সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও যেসব আবাসিক হোটেলে রেস্তোরাঁ রয়েছে সেগুলোও খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আবাসিক হোটেল মালিকদের সংগঠন।
খাবার হোটেল মালিকরা বলছেন, এক মাসের মধ্যে তাদের হোটেলগুলোতে তিন থেকে চার বার জরিমানা করা হয়েছে। রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া তাদের অন্য কোনো উপায় ছিল না।
তবে কোনো প্রকার আগাম আলোচনা ছাড়াই খাবার হোটেল বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করায় জেলা প্রশাসন, আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এমন হটকারী সিদ্ধান্তে পর্যটনের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তারা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খাবার হোটেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নামে মোটা অংকের টাকা জরিমানা করেন। একই হোটেলকে একাধিকবার জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে। মোবাইল কোর্টের নামে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তাই কুয়াকাটার সকল খাবার হোটেল মালিক একত্রিত হয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ঢাকা থেকে কুয়াকাটা বেড়াতে আসা পর্যটকরা আলমগীর বলেন, সকাল থেকে কিছুই খাওয়া হয়নি। সঙ্গে পরিবারের শিশুসহ বয়স্ক লোকজন রয়েছে। তাই এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হওয়া জরুরি। বরিশাল থেকে আগত পর্যটক এনামুল ইসলাম বলেন, পরিবারের আট সদস্য নিয়ে সকালে কুয়াকাটা এসে পৌঁছেছি। কিন্তু খাবার হোটেল বন্ধ থাকায় শিশু সন্তান নিয়ে না খেয়ে আছি।
খাবার হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কলিম মাহমুদ বলেন, প্রশাসনের এই হয়রানি সামাল দিয়ে আমাদের পক্ষে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব না। তাই আমরা প্রায় ৫০টি খাবার হোটেল মালিক একমত হয়ে বুধবার থেকে প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মো. শহিদুল হক বলেন, পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় রেস্তোরাঁ মালিকদের আকস্মিক ধর্মঘট ডাকা অযৌক্তিক। পর্যটকদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশনের জন্য কুয়াকাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। জরিমানা করার পরও খাবার হোটেল মালিকরা পর্যটকদের পচা-বাসি খাবার পরিবেশন করছেন। খাবার হোটেল মালিকরা তাদের যৌক্তিক দাবি থাকলে জেলা প্রশাসককে জানাতে পারেন।
এএজেড