কুয়াকাটায় অনির্দিষ্টকালের জন্য খাবারের হোটেল বন্ধ
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ঘন ঘন ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনার কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে খাবার হোটেলগুলো। বুধবার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে এ কর্মসূচি শুরু করেন হোটেল মালিকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা।
খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি জানায়, গত দুই বছর করোনায় লকডাউনের কারণে তাদের হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ ছিল। তবে হোটেল বন্ধ থাকলেও তাদের কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন হোটেল মালিকরা। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা আগের লোকসান পুষিয়ে উঠতে ধার-দেনা করে ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু বর্তমানে একের পর এক ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়। তাই প্রশাসনের কাছ থেকে ভালো কোনো ফলাফল না পাওয়ার আগ পর্যন্ত সব হোটেল বন্ধ থাকবে বলে জানান মালিকরা।
খুলনা থেকে আসা পর্যটক রাকিব মিয়া বলেন, মঙ্গলবার রাতে কুয়াকাটায় এসেছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করতে গিয়ে দেখি সব খাবার হোটেল বন্ধ। অনেক হাটাহাটি করেও কোনো হোটেল খোলা পাইনি। পরে মোটরসাইকেলে করে ৬০ টাকা ভাড়া দিয়ে আলীপুর গিয়ে নাস্তা খেয়েছি।
রংপুর থেকে আসা আমিনুল ইসলাম নামে এক পর্যটক জানান, পরিবারের সবাইকে নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। খবার হোটেল বন্ধ থাকায় বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভ্যানে করে মহিপুর গিয়ে সকালের নাস্তা করেছি।
এ বিষয়ে খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি মো. সেলিম মিয়া বলেন, আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। ধরেন সারা দিনে একজন হোটেল মালিক মাত্র ১০ হাজার টাকা বিক্রি করল। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসে তুচ্ছ কারণে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করল। এভাবে একের পর এক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ফলে আমরা এখন নিঃস্ব। হোটেল বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। কারণ আমরা জরিমানা গুণতে গুণতে ধার-দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছি। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সুরাহা না হলে আমাদের হোটেল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, কুয়াকাটায় পর্যটকরা এসে যাতে কোনোভাবে প্রতারিত না হন সে কারণেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের হোটেল খোলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। তারপর তাদের যদি কোনো কথা থাকে সেটা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের কথা জানিয়েছি।
এসআইএইচ