‘কবুল’ শব্দ উচ্চারণ না করলে কি বিয়ে হয় না?
ছবি সংগৃহিত
ইসলামে, বিবাহ হল বিবাহযোগ্য দুইজন নারী ও পুরুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক প্রনয়নের বৈধ আইনি চুক্তি ও তার স্বীকারোক্তি। ইসলামে কনে তার নিজের ইচ্ছানুযায়ী বিয়েতে মত বা অমত দিতে পারে| একটি আনুষ্ঠানিক এবং দৃঢ় বৈবাহিক চুক্তিকে ইসলামে বিবাহ হিসেবে গণ্য করা হয়।
বিয়ে মহান আল্লাহ তাআলার এক বিশেষ নেয়ামত ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত। ঈমানের পূর্ণতার সহায়ক। যুবক-যুবতীর চরিত্র গঠনের অন্যতম উপাদান এবং তা অনেক সাওয়াবেরও বটে।
ইসলামে বিয়ের পদ্ধতি হলো, দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে এক পক্ষ ইজাব করেন বা প্রস্তাব দেন, আরেক পক্ষ গ্রহণ করেন বা কবুল করেন- এভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। সাধারণত বিয়ের ইজাব বা প্রস্তাব করা হয় কনেপক্ষের তরফ থেকে আর বর প্রস্তাব কবুল করেন।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোন বিধবা নারীকে তার স্পষ্ট সম্মতি বা নির্দেশনা ছাড়া বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারী নারীকে তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দেওয়া যাবে না।’ সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কীভাবে অনুমতি নেবো? রাসুল (সা.) বললেন, তার চুপ থাকাটাই অনুমতি গণ্য হবে। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
কিন্তু পূর্ববিবাহিতা বা কুমারি কারো ক্ষেত্রেই বিয়েতে সম্মতি জানাতে ‘কবুল’ বলা জরুরি নয় বা কবুল বলার প্রয়োজনও নেই। অভিভাবক কনের সম্মতি নিয়ে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে নিজে বা যিনি বিয়ে পড়াবেন তার মাধ্যমে প্রস্তাব দেবেন, বর ‘কবুল করলাম’ বললে বিয়ে হয়ে যাবে।
এখনকার অনেক বিয়েতে কনেকে সাক্ষীদের সামনে এনে তিনবার কবুল বলানো হয়। এতে তিনি লজ্জায় পড়েন, তার পর্দাও নষ্ট হয়। এটা অপ্রয়োজনীয় ও নতুন উদ্ভাবিত রীতি। বিয়ের মজলিসে কনেপক্ষের পক্ষ থেকে প্রস্তাবের পর বরের একবার ‘কবুল করলাম’ বলাই যথেষ্ট।
কিছু কিছু মানুষের ধারণা, বিবাহের ইজাব পেশ করার পর পাত্র যদি ‘কবুল’ শব্দ উচ্চারণ না করে তাহলে বিবাহ সহিহ হবে না। এ ধারণা ঠিক নয়।
আসল বিষয় হল সম্মতি জ্ঞাপন করা। এখন কবুল শব্দ ছাড়া যদি ‘আলহামদুলিল্লাহ আমি গ্রহণ করলাম’ বা এজাতীয় শব্দ উচ্চারণ করে তাহলেও সেটা সম্মতি বোঝাবে এবং বিবাহ সহিহ হবে।
সুতরাং ‘কবুল’ শব্দই উচ্চারণ করতে হবে- এ ধারণা ভুল।