জায়নামাজে কাবার ছবি থাকলে নামাজ হবে কি?
ছবি সংগৃহিত
জায়নামাজে নামাজ পড়লে সওয়াব বেশি হবে- এমনটি নয়। বরং নামাজের জায়গা যদি পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন থাকে তবে জায়নামাজ ছাড়াও সরাসরি মেঝের ওপর নামাজ পড়া যাবে। তবে নামাজের স্থানের পবিত্রতার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার জন্য জায়নামাজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
নামাজের একাগ্রতা ও ধ্যান-মগ্নতার জন্য প্রতিবন্ধক না হলে কাবার ছবিযুক্ত জায়নামাজে নামাজ পড়তে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু কাবার ছবি যদি কারো নামাজের ধ্যান ভেঙে দেয়- তবে তার জন্য উচিত হবে না এ ধরনের জায়নামাজে নামাজ পড়া। আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, একবার নবী (সা.) নকশা আঁকা এক চাদরে নামাজ আদায় করেন। নামাজের ভেতরে নবী (সা.)-এর দৃষ্টি একবার নকশার দিকে পড়ে যায়। নামাজ শেষে তিনি বললেন, আমার এ চাদর আবু জাহমার কাছে নিয়ে যাও। আর আবু জাহমার আম্বিজানিয়া চাদর নিয়ে আস। কেননা এটা এখনই আমার নামাজ নষ্ট করেছে।
হিশাম ইবনে উরউয়ার বর্ণনায় আছে, নবী (সা.) বলেছেন, ‘আমি নামাজের দিকে তাকাচ্ছিলাম আর ভয় পাচ্ছিলাম এ চাদর আমাকে গোনাহগার বানাবে।’ (বোখারি : ৩৭৩)
আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘আয়েশা (রা.)-এর একটি পর্দা ছিল। তিনি তা দ্বারা তার ঘরের এক পাশ ঢেকে রেখেছিলেন। নবী (সা.) বললেন, তোমার এ পর্দা আমার থেকে দূর কর। কেননা এর নকশাগুলো নামাজের ভেতরে বারংবার আমার সামনে পড়ে।’ (বোখারি : ৫৯৫৯)
অন্যদিকে কাবার জায়নামাজের যেখানে কাবার ছবি আঁকা রয়েছে, তা পা দিয়ে পদদলিত করা বা তার ওপর অবহেলা ভরে বসা ইত্যাদি কাবার অবমাননার পর্যায়ে পড়ে। সুতরাং পবিত্র কাবাসহ মসজিদের ছবিযুক্ত জায়নামাজ ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ৭/১১১)
একদল ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে, এটা মাকরুহ বা অপছন্দনীয়। সালাতের মধ্যে সেজদার জায়গায় আপনি দেখছেন যে কয়টা দরজা বা কয়টা জানালা, পাশে কী আছে। ওই দৃশ্য আপনাকে আকৃষ্ট করে। ফলে সালাতের মনোযোগ নষ্ট হতে পারে।
এসব ইসলামের নিদর্শনাবলীর অন্তর্ভুক্ত। আর ইসলামের নিদর্শনাবলীকে সম্মান করতে বলা হয়েছে। তাই এসব ছবিযুক্ত জায়নামাজ পরিহার করা উচিত। তবে এসবের ওপরে পা না রেখে সেজদা করলে নামাজ পড়া যাবে, এতে কোনো সমস্যা নেই। মাকরূহ হবে না।