যে ১০ আমল করলে মিলবে আল্লাহর রহমত
প্রতীকী ছবি
মহান আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি দয়াশীল ও অনুগ্রহশীল। তিনি বান্দাকে ক্ষমা ও দয়া করতে ভালোবাসেন। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে আল্লাহ নিজেকে দয়ালু ও অনুগ্রহশীল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমাদের উপাস্য এক উপাস্য, তিনি ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই।
তিনি দয়াময়, অতি দয়ালু। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৬৩)
আল্লাহর দয়া অগ্রগামী
আল্লাহ দয়া ও ক্রোধের গুণে গুণান্বিত। তবে তাঁর দয়া ক্রোধের ওপর প্রবল। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার রহমত আমার ক্রোধকে অতিক্রম করেছে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৭৫১)
রহমত লাভের আমলগুলো:
বান্দার কিছু আমল আল্লাহর অনুগ্রহ ত্বরান্বিত করে। নিম্নে এমন ১০টি আমলের বর্ণনা দেওয়া হলো।
১. দ্বিন ও শরিয়তের অনুসরণ করা : আল্লাহ মানবজাতিকে যে দ্বিন ও শরিয়ত দান করেছেন তা আনুগত্য আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের মাধ্যম। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এই কিতাব আমি অবতীর্ণ করেছি, যা কল্যাণময়। সুতরাং, তার অনুসরণ কোরো এবং সাবধান হও, তাহলে তোমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা হবে। ’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১৫৫)
২. তিলাওয়াত শ্রবণ করা : মনোযোগসহ কোরআন তিলাওয়াত শুনলে আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তোমরা মনোযোগের সঙ্গে তা শ্রবণ করবে এবং নিশ্চুপ হয়ে থাকবে, যাতে তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২০৪)
৩. ক্ষমা প্রার্থনা করা : আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ খুশি হন এবং বান্দার প্রতি দয়া করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা কেন কল্যাণের আগে অকল্যাণ ত্বরান্বিত করতে চাইছ? কেন তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছ না, যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পারো?’ (সুরা নামল, আয়াত : ৪৬)
৪. রাসুলের আনুগত্য : আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের মাধ্যম। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য কোরো, যাতে তোমরা দয়া লাভ করতে পারো। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩২)
৫. আল্লাহর রাস্তায় আত্মত্যাগ : ঈমানের সঙ্গে যারা আল্লাহর রাস্তায় ত্যাগ স্বীকার করে আল্লাহ তাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন। বিশেষত যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দেশত্যাগ করে এবং সংগ্রাম করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান আনে এবং যারা হিজরত করে ও সংগ্রাম করে আল্লাহর পথে, তারাই আল্লাহর অনুগ্রহ প্রত্যাশা করে। আল্লাহ ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২১৮)
৬. নামাজ পড়া ও জাকাত দেওয়া : মহান আল্লাহ নামাজ আদায় ও জাকাত প্রদানের প্রতি উৎসাহিত করে বলেছেন, ‘তোমরা নামাজ কায়েম কোরো, জাকাত দাও এবং রাসুলের আনুগত্য কোরো, যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পারো। ’ (সুরা নুর, আয়াত : ৫৬)
৭. অনুগ্রহ লাভের দোয়া : আল্লাহর কাছে দয়া লাভের দোয়া করলে আল্লাহ দয়া করেন। এ জন্য মহান আল্লাহ দোয়া শিখিয়েছেন, ‘হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি আমাদের আপনার পক্ষ থেকে অনুগ্রহ দান করুন এবং আমাদের জন্য আমাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা করুন। ’ (সুরা কাহফ, আয়াত : ১০)
৮. উত্তম আচরণের অধিকারী হওয়া : আচার-আচরণ, সামাজিকতা ও লেনদেনে উত্তম পন্থার অনুসারীদের আল্লাহ দয়া করেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘পৃথিবীতে শান্তি স্থাপনের পর তোমরা তাতে বিপর্যয় ঘটিয়ো না, তাঁকে ভয় ও আশার সঙ্গে ডাকবে। নিশ্চয়ই আল্লাহর অনুগ্রহ সৎকর্মপরায়ণদের নিকটবর্তী। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৫৬)
৯. আল্লাহকে ভয় করা : আল্লাহভীতির জীবন আল্লাহ অনুগ্রহ লাভের মাধ্যম। আল্লাহ বলেন, ‘আমার দয়া-তা প্রত্যেক বস্তুতে ব্যাপ্ত। সুতরাং আমি তা তাদের জন্য নির্ধারিত করব, যারা আল্লাহভীতি অবলম্বন করে, জাকাত দেয় ও আমার নিদর্শনে বিশ্বাস করে। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১৫৬)
১০. বিবাদ মিটিয়ে দেওয়া : যারা দুই মুসলমানের বিরোধ মিটিয়ে দেয়, আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করেন। আল্লাহ বলেন, ‘মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই; সুতরাং তোমরা ভাইদের মধ্যে শান্তি স্থাপন করো আর আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও। ’ (সুরা হুজরাত, আয়াত : ১০)
আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহ দ্বারা আমাদের আবৃত করে নেন। আমিন