সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ঈদুল ফিতর ও ছাদকাতুল ফিতরা

ঈদ আরবি শব্দ। এর অর্থ খুশি, আনন্দ, উৎসব ও ফিতর অর্থ রোজা ভঙ্গ করা অর্থাৎ ইফতার করা। ঈদুল ফিতরের অর্থ দাঁড়াল রমজান মাসের রোজার শেষে আনন্দোৎসব। ঈদুল ফিতরের অন্তর্নিহিত এই ধারণাটিই বাংলার বুলবুল কবিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল গেয়ে উঠতে “রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।” আর আউদুল শব্দের অর্র্থ পুনঃ ফিরে আসাও হয়। সেই অর্থে প্রতি বৎসর দুইটি ঈদ আমাদের নিকট ঘুরে ঘুরে আসে বলেও একে ঈদ বলে যেতে পারে।

ফিতরার পরিমাণ: প্রত্যেক লোক ৮০ তোলার ওজনে দুই সের গমের দাম দেবে। ইমাম আবু হানীফার মতে দুই সের চাউল অথবা চাউলের দাম দেওয়া দুরস্ত হবে না এবং যব, গম, খুরমা ও কিছমিছ এই চারটি জিনিস ব্যতীত অন্য জিনিস দ্বারা দিলে ফিতরা আদায় হবে না। গম দিলে দুই সের এবং যব, খুরমা ও কিছমিছ দিলে চার সের অথবা উহার মূল্য দিতে হবে। চারটি বা পাঁচটি পণ্য দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায়ের প্রমাণ ও বিধান রয়েছে ইসলামে। সেই হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতি বছর সবচেয়ে কম দামি পণ্য ও বেশি দামি পণ্যের হিসেবে করে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ পরিমাণ নির্ধারণ করে থাকে।

এবার জন প্রতি সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা সর্বোচ্চ ২৬৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সদকাতুল ফিতর দেওয়ার সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হলো- নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব বেশি মূল্যের খাদ্য বা পণ্য দ্বারা বা সেই খাদ্য বা পণ্যের মূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা। কারণ সদকাতুল ফিতর আদায়ের মূল লক্ষ্যই হলো গরিবদের প্রয়োজন পূরণ করা ও তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ। ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদেকের সময় অথবা তার আগে যে শিশুর জন্ম হয়েছে, তারও ফিতরা দিতে হবে। একজনের ফিতরা কয়েকজনকে এবং কয়েকজনের ফিতরা একজনকে দেওয়া যায়। ফিতরার পয়সা মসজিদ, মাদ্রাসা, পুল নির্মাণ বা মৃতের কাফন খরিদ ইত্যাদি কাজের দুরস্ত নাই, কিন্তু ধর্মবিদ্যা শিক্ষার খরচ দেওয়া দুরস্ত আছে। সদাকায়ে ফিতরা স্বামী স্ত্রীকে, স্ত্রী স্বামীকে, পিতামাতা পুত্র-পৌত্রাদিকে এবং পুত্র-পৌত্রাদিকে পিতা মাতাকে দেওয়া দুরস্ত নাই।

ঈদুল ফিতর বছরে একবার আসে। এদিনে বিশেষভাবে নামাজ আদায় করার জন্য আদেশ করেছেন নবীজি (সাঃ)। যেহেতু বছরে মাত্র দুইবার ঈদের নামাজ পড়তে হয়, তাই এই নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে অনেককেই জটিলতা ও দ্বিধা-সংশয় সৃষ্টি হয়। আর এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। এ জন্য ঈদের নামাজের আগে এই নামাজের নিয়ম-কানুন ও আদায় পদ্ধতিটি একটু ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। ঈদের নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে অনেকের ধারণা, নামাজের নিয়ত আরবিতে করা জরুরি। এমনটি ঠিক নয়। যেকোনো ভাষায়ই নামাজের নিয়ত করা যায়। নিয়ত মনে মনে করাই যথেষ্ট। ঈদের দিন ইমামের পেছনে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে মনে মনে এই নিয়ত করতে হবে যে, আমি অতিরিক্ত ছয় তাকবিরসহ এই ইমামের পেছনে ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করছি। এরপর উভয় হাত কান বরাবর উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে হাত বাঁধতে হবে। হাত বাঁধার পর ছানা অর্থাৎ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা.... শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। এরপর আল্লাহু আকবার বলে হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। ইমাম সাহেব তৃতীয়বার তাকবির বলে হাত বেঁধে আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহসহ সূরা ফাতিহা পড়বেন এবং সঙ্গে অন্য যে কোনো সূরা তিলাওয়াত করবেন। এ সময় মুক্তাদিরা নীরবে দাঁড়িয়ে থাকবেন। এরপর ইমাম সাহেব নিয়ম মতো রুকু-সিজদা সেরে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবেন। মুক্তাদিরা ইমাম সাহেবকে অনুসরণ করবেন। দ্বিতীয় রাকাতে ইমাম সাহেব প্রথমে সূরা ফাতিহা পাঠ করবেন এবং সঙ্গে অন্য সূরা পড়বেন। এরপর আগের মতো তিন বার তাকবির বলতে হবে। প্রতি তাকবিরের সময়ই উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। চতুর্থ তাকবির বলে হাত না উঠিয়েই রুকুতে চলে যেতে হবে। এরপর অন্যান্য নামাজের নিয়মেই নামাজ শেষ করে সালাম ফেরাতে হবে।

সূর্য পুরোপুরি উদিত হওয়ার প্রায় আধ ঘন্টা পর থেকে দুপুরের আগ পর্যন্ত ঈদুল ফিতর-এর সালাত আদায় করা যায়। বিভিন্ন হাদীসের আলোকে আমরা বুঝতে পারি যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সূর্য উদিত হওয়ার ঘন্টা দেড়েকের মধ্যে ঈদুল ফিতর এবং ঘন্টা খানেকের মধ্যে ঈদুল আযহার সালাত আদায় করতেন। সালাতুল ঈদ আদায়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নাত ছিল ঈদের মাঠে পোঁছে প্রথমে ঈদের সালাত আদায় করা। এরপর তিনি সমবেত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে খুতবা বা বক্তৃতা প্রদান করতেন। মহিলা মুসল্লিগণ যেহেতু মাঠের শেষ প্রান্তে বসতেন এজন্য সাধারণ খুতবার পর তিনি মহিলা মুসল্লিদের কাছে যেয়ে পৃথকভাবে তাদের কিছু নসীহত করতেন। এরপর তিনি ঈদের মাঠ ত্যাগ করতেন।

সামাজিক ও অর্থনৈতিক সেতুবন্ধন রচনায় ঈদুল ফিতর

মানুষের মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সেতুবন্ধন রচনায় ঈদুল ফিতর গুরুত্বপূর্ণ। এটি মানুষকে দাঁড় করিয়ে দেয় কল্যাণমূলক অর্থনৈতিক পরিবেশের দোরগোড়ায়। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বর্ণিত এক হাদিসে রাসূল (সাঃ) সাদকাতুল ফিতরকে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। ঈদুল ফিতরকে পুরস্কার প্রদানের দিনও বলা হয়। এ পুরস্কার তাঁরাই পেতে পারে, যাঁরা এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে রিপুকে দমন করতে পেরেছেন। আর যারা অসৎ চিন্তা, অসৎ কার্যাবলি থেকে বিরত থাকতে পারেনি, রমজানের পবিত্রতাকে কুলষিত করেছে, তাদের জন্য ঈদুল ফিতর কোনো সুসংবাদ নয়। প্রকৃত অর্থে- ঈদুল ফিতরের আনন্দ তার জন্য, যে তাওবা ও ইস্তেগফারের মাধ্যমে পাপ- পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত থাকতে পেরেছে। এ জন্য বলা হয়, ঈদুল ফিতর হলো, সিয়াম সাধনায় সাফল্যের প্রতীক।

মুসলমানের আনন্দ উৎসব ঈদুল ফিতর
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ মহান বিত্তবানদের সে রকম নির্দেশনাই দিয়েছেন- “যতক্ষণ না তোমরা দরিদ্রদের চোখের পানি মুছে দেবে, যতক্ষণ না তোমরা তাদের ভালো পোশাকে আবৃত করবে এবং তাদের জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ঈদ পালন করবে না।” প্রত্যেকজন রোযাদারের জন্য ইসলাম দুটি আনন্দের দিনে ঘোষণা দিয়েছে। তার মাঝে একটি হলো পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন আর অন্যটি হলো পরকালে যেদিন রোযাদারের সাথে আল্লাহ মহান দেখা করবেন।

ঈদুল ফিতরের দিনে পালনীয় ১৩টি কাজ সুন্নাত। (১) শরীয়তের সীমার মধ্যে থেকে যথাসাধ্য সুসজ্জিত হওয়া এবং আনন্দ প্রকাশ করা। (২) গোসল করা। (৩) মেছওয়াক করা। (৪) যথা-সম্ভব উত্তম ইসলামী লেবাছ পরিধান করা। (৫) খোশবু লাগান। (৬) প্রত্যূষ বিছানা হতে গাত্রোত্থান করা। (৭) ফজরের নামাজের পরেই শিগগিরই ঈদগাহে যাওয়া। (৮) ঈদগাহে যাবার পূর্বে খুরমা অথবা কোন মিষ্টদ্রব্য ভক্ষণ করা। (৯) ঈদগাহে যাবার পূর্বে ছদকায়ে ফিতের আদায় করা। (১০) ঈদের নামাজ মসজিদে না পড়ে ঈদগাহে পড়া। (১১) এক রাস্তায় ঈদগাহে যাওয়া এবং অন্য রাস্তায় বাড়ি ফিরে আসা। (১২) ঈদগাহে পদব্রজে গমন করা। (১৩) ঈদগাহে যাওয়ার সময় নি¤œলিখিত তকবীর বলতে বলতে যাওয়াঃÑ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লালাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ্ অর্থ: আল্লাহ সর্বশেষ্ট, আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নাই; আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ; আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ এবং আল্লাহরই জন্য যাবতীয় প্রশংসা।

ঈদের দিনে করণীয়
ঈদের দিন ভোর বেলা ফজর নামাজ জামাতে আদায় করার মাধ্যমে দিনটি শুরু করা উচিত। গোসল করার মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন ও সুগন্ধি ব্যবহার করা। ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য যাওয়া। পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নাত। তাকবির বলা। ঈদে শুভেচ্ছা বিনিময় করা। ঈদ উপলক্ষে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানানো শরিয়ত অনুমোদিত একটি বিষয়। ঈদের সালাতের আগে খাবার গ্রহণ করা। ইদুল ফিতরের দিনে ঈদের সালাত আদায়ের আগে খাবার গ্রহণ করা এবং ঈদুল আযহার দিন ঈদের সালাতের আগে কিছু না খেয়ে সালাত আদায়ের পর কুরবানির গোশত খাওয়া সুন্নাত। ঈদের সালাত আদায় ও খুতবা শ্রবণ করা। আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ খবর নেওয়া। ফিতরাহ আদায় করা।

ঈদের দিনে বর্জনীয়
ঈদের দিন রোযা রাখা হারাম। হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা) বলেন, রাসুল (সা) দুদিন রোযা রাখতে নিষেধ করেছেন। সে দুদিন হলো- রোযা শেষে (এক মাস রোযার পর) ঈদুল ফিতরের দিন এবং ঈদুল আযহার দিন। (বুখারি : ২/৭০২) ঈদের জামাতের আগে নেই কোনো নফল নামাজ। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) হযরত বেলার (রা)-কে সঙ্গে নিয়ে ঈদুল ফিতরের দিন বের হয়ে দুই রাকাত সালাত আদায় করেন। তিনি এর আগে ও পরে কোনো নামাজ আদায় করেননি। (বুখারি : ১/৩৩৫) আমাদের সমাজের ঈদ উদযাপনকে যদি রাসূলুল্লাহ (সা) ও সাহাবায়ে কেরাম (রা)- এর ঈদ উদযাপনের সঙ্গে মিলাই, তাহলে অবশ্যই বলতে হবে, এই ঈদ ইসলামের ঈদ নয়; বরং আমরা বিজাতীয় সংস্কৃতির আদলে ঈদ উদযাপন করছি। ঈদগাহে নামাজে অংশগ্রহণ পর্যন্ত আমাদের ইসলামী ঈদ সীমাবদ্ধ। ঈদ উদযাপনের ক্ষেত্রে বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুসরণ থেকে বিরত থাকা জরুরি। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সঙ্গে সাদৃশ্য রাখবে, সে তাদের দলভুক্ত (জাহান্নামি) হবে। ’ (আবু দাউদ : ৪/৭৮) তাই ঈদে সব বিজাতীয় সংস্কৃতি বর্জন করতে হবে।

বিভিন্ন হাদীসে ঈদের দিনে শরীরচর্চা ও বিনোদনের জন্য খেলাধুনা ও আনন্দে উৎসাহ দিয়েছেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)। বর্র্তমানে শরীরচর্চামূলক খেলাধুলার স্থান দখল করছে অলস বিনোদন। সবচেয়ে ভয়ঙ্গকর বিসয় হলো, ঈদের দিনে এবং অন্যান্য সময়ে বিনোদনের নামে, খেলাধুলার নামে বেহায়াপনা, বেল্লেলপনা ও অশ্লীলতা সমাজকে গ্রাস করছে। ঈদ উপলক্ষ্যে বেড়ানোর নামে আমাদের মেয়েরা অর্ধ উলঙ্গ হয়ে দেহ, পোশাক ও অলঙ্গার প্রদর্শন করে বেড়ায়। মেয়েদের জন্য বাইরে বোরোতে পুরো দেহ আবৃত করা আল্লাহ কুরআনে ফরয করেছেন। একজন মহিলার জন্য মাথা, চুল, কান, ঘাঢ়, গলা, বা দেহের কোনো অংশ অনাবৃত করে বাইরে যাওয়ার অর্থ প্রতি মহুর্তে ব্যভিচারের মত একটি কঠিন কবীরা গোনাহ লিপ্ত হওয়া। এরূপ মহিলাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে অভিশাপ দেওয়া হয় বলে হাদীসে বলা হয়েছে। ঈদের দিনে যারা এভাবে বের হয় তাদের অনেকেই রামাদানে কষ্ট করে রোযা রেখেছে। এদের অধিকাংশের পিতামাতা রোযাদার মুসলমান। কিভাবে তারা এরূপ ভয়ঙ্কর পাপে লিপ্ত হন তা আমরা বুঝতে পারি না। আমরা যদি সত্যিই আল্লাহকে ভয় করি এবং আল্লাহর গযব থেকে বাঁচতে চাই তাহলে আমাদের সন্তানদেরকে এরূপ পাপ থেকে বাঁচাতে হবে।

জুমুআতুল বিদার মাধ্যমে আমরা রামাদানকে বিদায় জানাতে চলেছি। কিন্তু কিভাবে? বিশ্বাসঘাতকতার সাথে না বিশ্বস্ততার সাথে। রামাদান এসেছিল কুরআন, সিয়াম, কিয়াম ও তাকওয়া উপহার নিয়ে। আমরা কি রামাদানের সাথে এগুলিকেও বিদায় করে দেব? তাহলে রামাদানের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হলো। রামাদানের হাদিয়া ভালবেসে গ্রহন করুন। কুরআন ছাড়বেন না। কত কষ্ট করে সারা মাস তারাবীহে কুরআন শুনলেন। যদি বুঝতে পারতেন তাহলে এ শোনার আনন্দ, তৃপ্তি ও সাওয়াব আরো অনেক বেশি হতো। কুরআনের নূরে হৃদয় আলোকিত হতো। আসুন সকলেই নিয়্যাত করি, আগামি রামাদানের আগে একবার অন্তত পূর্ণ কুরআন অর্থ সহ পাঠ করব। যেন আগামী রামাদানে তারাবীহের সময় কুরআন শোনার অন্তত কিছু বুঝতে পারি।

ড. মাহবুবা রহমান: সাবেক বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ, ঢাকা।

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সক্রিয় সদস্যসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এদের মধ্যে বাকি ৫ জন চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ১টি অটো চার্জার ভ্যান এবং ১৯টি অটো চার্জার ভ্যানের ব্যাটারিসহ ১৫০ কেজি খুচরা যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) নওগাঁ এবং রাজশাহীর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁ জেলা পুলিশ কর্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ফারজানা হোসেন এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন, জেলার পোরশা উপজেলার সোভাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে আব্দুল জব্বার (৪০) চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার পাথরপূজার গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে নুরুজ্জামান (৪০) এবং নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ধবলডাঙ্গা গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে মোহাম্মদ সেলিম (৩০)।

গ্রেপ্তারকৃত চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সদস্যরা হলেন, জেলার মান্দা উপজেলার উত্তর কাঞ্চন গ্রামের আলম খানের ছেলে শহিদ খান (৩৪) একই গ্রামের পরেশ আলী মৃধার ছেলে কাওছার আলী মৃধা (২৪), উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের তমিজউদদীন মোল্লার ছেলে আব্দুল মতিন মোল্লা (৫০), কামারকুড়ি গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে জিয়াউর রহমান (৪২) এবং শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত সোলায়মান মন্ডলের ছেলে আজিজুল মন্ডল(৬৪)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন বলেন, বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত অনুমানিক ৮ টার দিকে সাপাহার থানার নোচনাহার বাজার থেকে সাদিকুল ইসলাম (৩২) নামে এক অটো চার্জার ভ্যান চালক তার নিজের অটো চার্জার ভ্যান চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে সাপাহার থানাধীন ইলিমপুর মোড় হইতে হরিপুর বাজারগামী রোডে ইলিমপুর ব্রীজের নিকট পৌছাতেই রাস্তার পাশে ওৎপেতে থাকা ০৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার অটো চার্জার ভ্যান থামিয়ে তাকে ভ্যান থেকে টেনে নামায় এবং তার গলার চাকু ধরে হত্যার ভয় দেখিয়ে পাশের আম বাগানে নিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট করে।

পরবর্তীতে তারা সাদিকুলের অটো চার্জার ভ্যানটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। অপর আরো একটি ঘটনায় একই ডাকাত দল গত শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩ টার দিকে পোরশা থানার সরাইগাছি - আড্ডা আঞ্চলিক মহাসড়কের মশিদপুর এলাকায় এক অটো চার্জার ভ্যান চালককে আটক করে। তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে হত্যার ভয় দেখিয়ে তার অটো চার্জার ভ্যান ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, এই দুই ঘটনায় পোরশা এবং সাপাহার থানায় আলাদা দুইটি মমলা হয়। মামলার পর থেকেই পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবির) একটি বিশেষ টিম অভিযান অব্যাহত রাখে। গতকাল (২৭ এপ্রিল) নওগাঁ এবং রাজশাহী জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৩ জন ডাকাত এবং চোরাই ভ্যানের মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত এমন ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ফারজানা হোসেন আরও বলেন, গ্রেফাতারকৃত ডাকাতদের মধ্যে মোহাম্মদ সেলিম (৩০) বহুল আলোচিত সাপাহার উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ হিল কাফি হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামী। সেলিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৮টি চুরি এবং ডাকাতির মামলা রয়েছে। এছাড়াও ডাকাত আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০ টি এবং ডাকাত নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪ টি চুরি এবং ডাকাতির মামলা রয়েছে। আসামীদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) সুমন রঞ্জন সরকার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি ডিবি) আব্দুল মান্নানসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল

বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা পরেশ রাওয়াল সম্প্রতি এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করেছেন। ‘ঘাতক’ ছবির শুটিং চলাকালে হাঁটুর মারাত্মক আঘাতের পর দ্রুত সেরে ওঠার জন্য তিনি নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলে জানিয়েছেন।

রাকেশ পান্ডের সঙ্গে একটি দৃশ্যের শুটিং চলাকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আঘাতের পর পরিচালক তিন্নু আনন্দ ও অভিনেতা ড্যানি দেনজোংপা তাকে দ্রুত মুম্বাইয়ের নানাবতী হাসপাতালে নিয়ে যান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে গভীর উদ্বেগে ছিলেন পরেশ রাওয়াল। তখনই প্রয়াত অ্যাকশন ডিরেক্টর বীরু দেবগণ তাকে পরামর্শ দেন প্রতিদিন সকালে নিজের মূত্র পান করার জন্য। বীরু দেবগণের যুক্তি ছিল, বহু যোদ্ধা শরীরের দ্রুত আরোগ্যের জন্য এমন পদ্ধতি অনুসরণ করতেন। পরেশ রাওয়াল সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি তখন এমন এক মানসিক অবস্থায় ছিলেন যে সুস্থতার জন্য যেকোনো কিছু করতে রাজি ছিলেন।

 

বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে টানা ৩০ দিন নিজের মূত্র পান করেন পরেশ। পরে চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে চমকপ্রদ ফলাফল পান। চিকিৎসকদের মতে, তার চোট সারাতে যেখানে আড়াই মাস সময় লাগার কথা ছিল, সেখানে তিনি মাত্র দেড় মাসেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

বর্তমানে পেশাগত জীবনেও ব্যস্ত সময় পার করছেন পরেশ রাওয়াল। শিগগিরই তিনি প্রিয়দর্শনের পরিচালনায় নির্মিত হরর-কমেডি 'ভূত বাংলা' ছবিতে অক্ষয়কুমার ও টাবুর সঙ্গে অভিনয় করবেন। পাশাপাশি ‘হেরা ফেরি ৩’-তেও পুরনো সহ-অভিনেতা অক্ষয়কুমার ও সুনীল শেঠির সঙ্গে আবার পর্দা ভাগ করবেন।

 

Header Ad
Header Ad

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছেন এনসিপির মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে নাহিদ ইসলামের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, "শুভ জন্মদিন। বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী নাহিদ ইসলাম।" তার এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ
পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৭টি অস্ত্রবাহী বিমান পাঠালো তুরস্ক
বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ