মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

রোজাদারের বর্জনীয় ও করণীয়

হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি যে, রমজান মাসে যারা সিয়াম পালন করেন তাদের দুটি শ্রেণি রয়েছে। এক শ্রেণির পূর্ববর্তী সকল গোনাহ ক্ষমা করা হবে। অন্য শ্রেণি ক্ষুধা-পিপাসায় কষ্ট করা ছাড়া কিছুই লাভ হবে না। প্রথম শ্রেণির রোজাদারদের বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন: “যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে এবং আল্লাহর নিকট সাওয়াব অর্জনের খাঁটি নিয়তে রমজানের সিয়াম পালন করবে তার পূর্ববর্তী সকল গোনাহ ক্ষমা করা হবে।” (বুখারি, আস-সহিহ ১/২২, ৬/৬৭২; মুসলিম, আস-সহিহ ১/৫২৩)

দ্বিতীয় শ্রেণির রোজাদারদের বিষয়ে তিনি বলেন: “অনেক সিয়াম পালনকারী আছে যার সিয়াম থেকে শুধু ক্ষুধা ও পিপাসা ছাড়া আর কোন লাভ হয় না। এবং অনেক কিয়ামকারী বা তারাবিহ-তাহাজ্জুদ পালনকারী আছে যাদের কিয়াম-তারাবিহ থেকে শুধু রাত্রি জাগরণ ছাড়া আর কোনোই লাভ হয় না।” (ইবনু মাজাহ, আস-সুনান ১/৫৩৯; আলবানী, সহীহুত তারগীব ১/২৬২)
এরূপ রোজাদারদের প্রতি বদদোয়া করে তাদের দুর্ভাগ্যের কথা জানিয়ে রাসূলুল্লাহ বলেন, “যে ব্যক্তি রমজান মাস পেল, কিন্তু এই মাসে তাকে ক্ষমা করা হলো না সেই ব্যক্তি আল্লাহর রহমত থেকে চির বিতাড়িত।” (২. হাকিম, আল-মুসতাদরাক ৪/১৭০; ইবনু হিব্বান, আস-সহীহ ২/১৪০-১৪১; আলবানী সহীহুত তারগীর ১/২৬২।)

আমরা যারা রমজানের সিয়াম পালন করতে যাচ্ছি তাদের একটু ভাবতে হবে, আমার কোন দলে পড়ব। আর তা জানতে হলে রোজা বা সিয়ামের অর্থ বুঝতে হবে। রাসূলুল্লাহ বলেন:
“পানাহার বর্জনের নাম সিয়াম নয়। সিয়াম হলো অনর্থক ও অশ্লীল কথা-কাজ বর্জন করা।” (৩. ইবনু হিব্বান, আস-সাহীহ ৮/২৫৫: হাকিম, আল-মুসতাদরাক ১/৫৯৫; আলবানী, সহীহহুত তারগীব ১/২৬১)।

বর্জনীয়:
তাহলে চিন্তাহীন, অনুধাবনহীন, সৎকর্মহীন পানাহর বর্জন “উপবাস” বলে গণ্য হতে পারে তবে ইসলামি “সিয়াম” বলে গণ্য হবে না। হারাম বা মাকরূহ কাজেকর্মে রত থেকে হালাল খাদ্য ও পানীয় থেকে নিজের বিরত রাখার নাম সিয়াম নয়। সিয়াম অর্থ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সকল হারাম, মাকরূহ ও পাপ বর্জন করার সঙ্গে সঙ্গে হালাল খাদ্য, পানীয় ও সম্ভোগ থেকে নিজেকে বিরত রাখা। এভাবে হৃদয়ে সার্বক্ষণিক আল্লাহ সচেতনতা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির দিকে লক্ষ্য রেখে শত প্রলোভন ও আবেগ দমন করে সততা ও নিষ্ঠার পথে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত রাখার জন্য সিয়াম। যদি আপনি কঠিন ক্ষুধা বা পিপাসায় কাতর হয়েও আল্লাহর ভয়ে ও তার সন্তুষ্টির আশায় নিজেকে খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত রাখেন, অথচ সামান্য রাগের জন্য গালি, ঝগড়া ইত্যাদি হারাম কাজে লিপ্ত হন, মিথ্যা অহংবোধকে সমুন্নত করতে পরনিন্দা, গিবত, চোগলখুরী ইত্যাদির ভয়ংকর হারামে লিপ্ত হন, সামান্য লোভের জন্য মিথ্যা, ফাঁকি, ঘুষ ও অন্যান্য যাবতীয় হারাম নির্বিচারে ভক্ষণ করেন, তাহলে আপনি নিশ্চিত জানুন যে, আপনি সিয়ামের নামে আত্মপ্রবঞ্চনার মধ্যে লিপ্ত আছেন। ধার্মিকতা ও ধর্ম পালনের মিথ্যা অনুভূতি ছাড়া আপনার কিছুই লাভ হচ্ছে না।

রাসলুল্লাহ বলেছেন, “যে ব্যক্তি পাপ, মিথ্যা বা অন্যায় কথা, অন্যায় কর্ম, ক্রোধ, মূর্খতাসুলভ ও অজ্ঞতামূলক কর্ম ত্যাগ করতে না পারবে, তার পানাহার ত্যাগ করাতে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।” (৪. বুখারি, আস-সহীহ ২/৬৭৩, ৫/২২৫১)।

আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, তোমরা রোজার সময় দিবসে পানাহার কর না। এরপরের আয়াতেই আল্লাহ বললেই, তোমরা অপরের সম্পদ অবৈধভাবে আহার কর না। এখন আপনি প্রথম আয়াতটি মেনে দিবসে আপনার ঘরের খাবার আহার করলেন না, কিন্তু পরের আয়াতটি মানলেন না, সুদ, জুলুম, চাঁদাবাজি, যৌতুক, গিবত, মিথ্যা মামলা, জবর-দখল, সরকারি সম্পত্তি অবৈধ দখল ইত্যাদি নিষিদ্ধ পদ্ধতিতে অন্যের সম্পদ আহার করলেন, তাহলে আপনি কেমন রোজাদার?

ইফতারের সময় ভাজা-পোড়া জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। সবরত ও ঠান্ডা তরকারি দিয়ে ভাত খাওয়াই উত্তম। পরিমিত আহার করতে হবে। অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করলে রোজার মর্ম উপলদ্ধি করা যাবে না। রোজা রেখে ক্ষুধার্ত ব্যক্তির কষ্ট অনুভব করা যাবে না।

করনীয়:
সিয়াম শুধু বর্জনের নাম নয়। সকল হারাম ও মাকরূহ বর্জনের সঙ্গে সঙ্গে সকল ফরজ-ওয়াজিব ও যথাসম্ভব বেশি নফল মুস্তাহাব কর্র্ম করাই সিয়াম। বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায় যে, রমজান মাসে নফল-ফরজ সকল ইবাদতের সাওয়াব বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। এজন্য সকল প্রকার ইবাদতের বেশি বেশি আদায় করা দরকার। সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, রমজান মাসে উমরা আদায় করা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সঙ্গে হজ করার সমতুল্য। যদি কেউ রোজা অবস্থায় দরিদ্রকে খাবার দেয়, অসুস্থ মানুষকে দেখতে যায় এবং জানাজায় শরিক হয় তবে সে ব্যক্তিকে আল্লাহ জান্নাত দান করবেন। এ ছাড়া হাদিসে রমজানে বেশি বেশি তাসবিহ, তাহলিল, দুআ ও ইসতিগফারের উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যে, রোজা অবস্থার দুআ ও ইফতারের সময়ের দুআ আল্লাহ কবুল করেন।

বিশেষভাবে দু প্রকারের ইবাদত রমজানে বেশি করে পালন করতে হাদিসে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, দান। সাদকা বা দান আল্লাহ তাআলার প্রিয়তম ইবাদত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যে, সাদকার কারণে মুমিন অগণিত সওয়াব লাভ ছাড়াও অতিরিক্ত দুটি পুরস্কার লাভ করেন: প্রথমত দানের কারণে গোনাহ ক্ষমা করা হয় এবং দ্বিতীয়ত দানের কারণে আল্লাহর বালা-মুসিবত দূর হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যে, দুজন মানুষের মধ্যে বিবাদ মিটিয়ে দেওয়া, ন্যায় কর্মে নির্দেশ দেওয়া, অন্যায় থেকে নিষেধ করা, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক দ্রব্য বা বস্তু সরিয়ে দেওয়া, বিপদগ্রস্তকে সাহায্য করা বা যে কোনোভাবে মানুষের উপকার করাই আল্লাহর নিকট সাদকা হিসাবে গণ্য। রাসূলুল্লাহ (সা.) সর্বদা বেশি বেশি দান করতে ভালোবাসতেন। আর রমজান মাসে তার দান হতো সীমাহীন। কোনো বাঞ্ছাকারীকে বা প্রার্থীকে তিনি বিমুখ করতেন না।

রমজান এলেই দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায়। বাংলাদেশ মুসলমানদের দেশ। এদেশের অধিকাংশ ব্যবসায়ী মুসলমান। অধিকাংশ ব্যবসায়ী রোজা রাখেন ও দান করেন। কিন্তু আমাদের দান হালাল উপার্জন থেকে হচ্ছে কিনা তা দেখতে হবে। গুদামজাত করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করা বা স্বাভাবিকের বাইরে অতিরিক্ত দাম গ্রহণের মাধ্যমে ক্রেতাদের জুলুম করা নিষিদ্ধ। হারাম বা নিষিদ্ধভাবে লক্ষ টাকা আয় করে থেকে হাজার টাকা ব্যয় করার চেয়ে হালাল পদ্ধতিতে হাজার টাকা আয় করে তা থেকে দু-এক টাকা ব্যয় করা অনেক বেশি সাওয়াব ও বরকতের কাজ। এ ছাড়া অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে। আমরা জানি, মানুষের কল্যাণে ও সহমর্মিতায় যা কিছু করা হোক সবই দান। যদি কোনো সৎ ব্যবসায়ী যদি রমজানে ক্রেতা সাধারণের সুবিধার্থে তার প্রতিটি পণ্যে এক টাকা কম রাখেন বা নায্যমূল্যে তা বিক্রয় করেন তাও আল্লাহর নিকট অত্যন্ত বড় সাদকা হিসেবে গণ্য হবে।

রমজানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো কুরআন তিলওয়াত। বিগত খুতবায় আমরা এ বিষয়ে কিছু আলোচনা করেছি। রমজানে দুভাবে কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে: প্রথমত কুরআন কারীম দেখে দেখে দিবসে ও রাতে তিলাওয়াত করতে হবে। সম্ভব হলে অর্থসহ অন্তত একখতম কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে। যারা তিলাওয়াত করতে পারেন না তারা আল্লাহর ওয়াস্তে রমজানে তিলাওয়াত শিখতে শুরু করুন। অবসর সময়ে তিলাওয়াতের বা অর্থসহ তিলাওয়াতের ক্যাসেট শুনুন। কুরআন তিলাওয়াতে যেমন সাওয়াব, তা শ্রবণেও তেমনি সওয়াব।

কুরআনের দ্বিতীয় ইবাদত হলো কিয়ামুল্লাইল। সালাতুল ইশার পর থেকে সুবহে সাদেক পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যেকোনো সময়ে নফল সালাত আদায় করাকে কিয়ামুল্লাইল, সালাতুল্লাইাল বা রাতের সালাত বলা হয়। তাহাজ্জুদও কিয়ামুল্লাইল। একটু ঘুমিয়ে উঠে কিয়ামুল্লাহইল আদায় করলে তাকে তাহাজ্জুদ বলা হয়। সারা বৎসরই কিয়ামুল্লাইল করা দরকার।

রমজানের কিয়ামের বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি খাঁটি ঈমান ও ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সাওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজানে কিয়ামুল্লাইল আদায় করবে তার পূর্ববর্তী সকল গোনাহ ক্ষমা করা হবে।” (বুখারি, আস-সহীহ ১/২২, ২/৭০৭; মুসলিম, আস-সহীহ ১/৫২৩)

রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজান ও গাইর রমজান সর্বদা প্রতি রাতে মধ্য রাত থেকে শেষ রাত পর্যন্ত ৪/৫ ঘণ্টা ধরে কিয়ামুল্লাইল আদায় করতেন। উমার (রা)- এর সময়ে দ্বিতীয় প্রজন্মের মুসলমানদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এরা কুরআনের হাফিজ না হওয়াতে হাফিযদের পেছনে কিয়াম করতে চেষ্টা করতেন। এজন্য মসজিদে নববীতে সালাতুল ইশার পর ছোট ছোট জামাত শুরু হতো। এ দেখে উমার (রা) উবাহ ইবনু কাব (রা) কে বলেন, মানুষেরা দিবসে রোজা রাখে, কিন্তু তারা কুরআনের হাফেজ না হওয়াতে রাতের কিয়াম ভালোভাবে আদায় করতে পারে না। এজন্য আপনি তাদের নিয়ে সালাতুল ইশার পরে জামাতে কিয়াম বা তারাবিহ আদায় করেন। এ ছাড়া তিনি সুলাইমান ইবনু আবী হাসমাকে নির্দেশ দেন মহিলাদের নিয়ে পৃথক তারাবিহের জামাত করতে। উসমান (রা) ও আলী (রা) এর সময়েও এভাবে জামাতে তারাবিহ আদায় করা হতো এবং মহিলাদের জন্য পৃথক তারাবিহের জামাত কায়েম করা হতো। (বাইহাকী, আস-সুনানুল কুবরা, ২/৪৯৩)

উমরা (রা) সময়ে ৮ ও ২০ রাকাত তারাবিহ পড়া হতো বলে সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায় যে, সাহাবি-তাবিয়িদের সময়ে ইশার পর থেকে মধ্য রাত বা শেষ রাত পর্যন্ত তারাবিহের জামাত চলত এবং তারা প্রত্যেক রাকাতে ১/২ পারা কুরআন পাঠ করতেন। এ থেকে বুঝা যায় যে, প্রথম দিকে ৮ রাকাত তারাবিহ আদায় করা হতো। প্রত্যেক রাকাতে তারা ১/২ পারা কুরআন পাঠ করতেন এবং ইশার পর থেকে শেষ রাত পর্যন্ত প্রায় ৫/৬ ঘণ্টা তারা এভাবে সালাত আদায় করতেন। প্রতি রাকাতে আধা ঘণ্টা বা তার বেশি দাঁড়াতে কষ্ট বেশি। এজন্য পরে তারা এরূপ ৫/৬ ঘণ্টা ধরে ২০ রাকাত পাঠ করতেন। রাকআতের সংখ্যা বাড়াতে দাঁড়ানো কষ্ট কিছুটা কম হতো।

সাহাবি-তাবিয়িরা প্রতি তিন দিন বা দশ দিনে তারাবিহের জামাতে কুরআন খতম করেতন। আর আমরা পুরো রমজানে এক খতম করতেও কষ্ট পাই। তারা ৫/৬ ঘণ্টা ধরে তারাবিহ পড়তেন। আমরা একঘণ্টাও দাঁড়াতে চাই না। হাফেজ সাহেব একটু সহিহ তারতিলের সঙ্গে পড়লে আমরা রাগ করি। কুরআনের সঙ্গে এর চেয়ে বেশি বেয়াদবি আর কী হতে পারে। কুরআন শ্রবণের আগ্রহ নিয়ে ইমামের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত তারাবিহ আদায় করুন। ইমামের সঙ্গে সঙ্গেই নিয়ত করুন এবং পুরো কুরআন মহব্বতের সঙ্গে শুনুন। সময় তো চলেই যাবে। হয়ত এভাবে কুরআন শোনার সময় আর পাব না। আল্লাহ আমাদের সিয়াম ও কিয়াম কবুল করুন। আমীন।

পিতা-মাতার দ্বায়িত্ব:
পিতা-মাতার দায়িত্ব হলো, সাত বছর থেকে ছেলেমেয়েদের নামাজ, রোজা,তারাবিহ ইত্যাদিতে অভ্যস্থ করা। তাদের বয়স দশ বৎসর হলে এ বিষয়ে কঠোরতা অবলম্বন করা ফরজ। নিজের নামাজ-রোজা যেমন ফরজ, ছেলেমেয়েদের নামাজ-রোজা আদায় করানোও তেমনি ফরয। ছেলেমেয়েরো নামাজ পড়লে, রোজা রাখলে, তারাবিহতে শরিক হলে তারা যেমন সাওয়াব বরকত লাভ করবে, তেমনি তাদের পিতামাতাও সাওয়াব ও বরকত লাভ করবেন। এছাড়া ছেলেমেয়েরা আজীবন যত নামাজ, রোজা, তারাবিহ, কুরআন, যিক্র, দান ও অন্যান্য ইবাদত করবে সকল ইবাদতের সমপরিমাণ সাওয়াব পিতামাতা লাভ করবেন। পক্ষান্তরে পিতামাতার অবহেলার কারণে যদি ছেলেমেয়েরা বেনামাজি বা বে-রোজাদার হয় তবে তাদের গোনাহের সমপরিমাণ গোনাহ তারা লাভ করবেন। ছেলেমেয়েরা আমাদের হৃদায়ের শান্তি। আসুন রমজানের বরকতে তাদের শরিক করি। তাদের রোজা রাখতে উৎসাহিত করি। ৭ বৎসর বা তার বেশি বয়সের ছেলেদেরকে তারাবিহের জামাতে সঙ্গে করে নিয়ে যাই। তাদের নেককার রূপে গড়ে তুলি। তাহলে তারা দুনিয়াতে যেমন আমাদের হৃদয়ের শান্তি হবে, জান্নাতেও তেমনি আমাদের হৃদয়ের শান্তি হবে, জান্নাতেও তেমনি আমাদের হৃদয়ের শান্তি হবে। আল্লাহ কবুল করুন। আমীন।

ড. মাহবুবা রহমান: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ, ঢাকা।

এসএন

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সক্রিয় সদস্যসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এদের মধ্যে বাকি ৫ জন চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ১টি অটো চার্জার ভ্যান এবং ১৯টি অটো চার্জার ভ্যানের ব্যাটারিসহ ১৫০ কেজি খুচরা যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) নওগাঁ এবং রাজশাহীর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁ জেলা পুলিশ কর্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ফারজানা হোসেন এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন, জেলার পোরশা উপজেলার সোভাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে আব্দুল জব্বার (৪০) চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার পাথরপূজার গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে নুরুজ্জামান (৪০) এবং নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ধবলডাঙ্গা গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে মোহাম্মদ সেলিম (৩০)।

গ্রেপ্তারকৃত চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সদস্যরা হলেন, জেলার মান্দা উপজেলার উত্তর কাঞ্চন গ্রামের আলম খানের ছেলে শহিদ খান (৩৪) একই গ্রামের পরেশ আলী মৃধার ছেলে কাওছার আলী মৃধা (২৪), উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের তমিজউদদীন মোল্লার ছেলে আব্দুল মতিন মোল্লা (৫০), কামারকুড়ি গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে জিয়াউর রহমান (৪২) এবং শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত সোলায়মান মন্ডলের ছেলে আজিজুল মন্ডল(৬৪)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন বলেন, বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত অনুমানিক ৮ টার দিকে সাপাহার থানার নোচনাহার বাজার থেকে সাদিকুল ইসলাম (৩২) নামে এক অটো চার্জার ভ্যান চালক তার নিজের অটো চার্জার ভ্যান চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে সাপাহার থানাধীন ইলিমপুর মোড় হইতে হরিপুর বাজারগামী রোডে ইলিমপুর ব্রীজের নিকট পৌছাতেই রাস্তার পাশে ওৎপেতে থাকা ০৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার অটো চার্জার ভ্যান থামিয়ে তাকে ভ্যান থেকে টেনে নামায় এবং তার গলার চাকু ধরে হত্যার ভয় দেখিয়ে পাশের আম বাগানে নিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট করে।

পরবর্তীতে তারা সাদিকুলের অটো চার্জার ভ্যানটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। অপর আরো একটি ঘটনায় একই ডাকাত দল গত শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩ টার দিকে পোরশা থানার সরাইগাছি - আড্ডা আঞ্চলিক মহাসড়কের মশিদপুর এলাকায় এক অটো চার্জার ভ্যান চালককে আটক করে। তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে হত্যার ভয় দেখিয়ে তার অটো চার্জার ভ্যান ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, এই দুই ঘটনায় পোরশা এবং সাপাহার থানায় আলাদা দুইটি মমলা হয়। মামলার পর থেকেই পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবির) একটি বিশেষ টিম অভিযান অব্যাহত রাখে। গতকাল (২৭ এপ্রিল) নওগাঁ এবং রাজশাহী জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৩ জন ডাকাত এবং চোরাই ভ্যানের মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত এমন ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ফারজানা হোসেন আরও বলেন, গ্রেফাতারকৃত ডাকাতদের মধ্যে মোহাম্মদ সেলিম (৩০) বহুল আলোচিত সাপাহার উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ হিল কাফি হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামী। সেলিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৮টি চুরি এবং ডাকাতির মামলা রয়েছে। এছাড়াও ডাকাত আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০ টি এবং ডাকাত নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪ টি চুরি এবং ডাকাতির মামলা রয়েছে। আসামীদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) সুমন রঞ্জন সরকার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি ডিবি) আব্দুল মান্নানসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল

বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা পরেশ রাওয়াল সম্প্রতি এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করেছেন। ‘ঘাতক’ ছবির শুটিং চলাকালে হাঁটুর মারাত্মক আঘাতের পর দ্রুত সেরে ওঠার জন্য তিনি নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলে জানিয়েছেন।

রাকেশ পান্ডের সঙ্গে একটি দৃশ্যের শুটিং চলাকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আঘাতের পর পরিচালক তিন্নু আনন্দ ও অভিনেতা ড্যানি দেনজোংপা তাকে দ্রুত মুম্বাইয়ের নানাবতী হাসপাতালে নিয়ে যান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে গভীর উদ্বেগে ছিলেন পরেশ রাওয়াল। তখনই প্রয়াত অ্যাকশন ডিরেক্টর বীরু দেবগণ তাকে পরামর্শ দেন প্রতিদিন সকালে নিজের মূত্র পান করার জন্য। বীরু দেবগণের যুক্তি ছিল, বহু যোদ্ধা শরীরের দ্রুত আরোগ্যের জন্য এমন পদ্ধতি অনুসরণ করতেন। পরেশ রাওয়াল সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি তখন এমন এক মানসিক অবস্থায় ছিলেন যে সুস্থতার জন্য যেকোনো কিছু করতে রাজি ছিলেন।

 

বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে টানা ৩০ দিন নিজের মূত্র পান করেন পরেশ। পরে চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে চমকপ্রদ ফলাফল পান। চিকিৎসকদের মতে, তার চোট সারাতে যেখানে আড়াই মাস সময় লাগার কথা ছিল, সেখানে তিনি মাত্র দেড় মাসেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

বর্তমানে পেশাগত জীবনেও ব্যস্ত সময় পার করছেন পরেশ রাওয়াল। শিগগিরই তিনি প্রিয়দর্শনের পরিচালনায় নির্মিত হরর-কমেডি 'ভূত বাংলা' ছবিতে অক্ষয়কুমার ও টাবুর সঙ্গে অভিনয় করবেন। পাশাপাশি ‘হেরা ফেরি ৩’-তেও পুরনো সহ-অভিনেতা অক্ষয়কুমার ও সুনীল শেঠির সঙ্গে আবার পর্দা ভাগ করবেন।

 

Header Ad
Header Ad

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছেন এনসিপির মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে নাহিদ ইসলামের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, "শুভ জন্মদিন। বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী নাহিদ ইসলাম।" তার এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ
পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৭টি অস্ত্রবাহী বিমান পাঠালো তুরস্ক
বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ