যখন মিথ্যা বলা জায়েজ
মিথ্যা অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ। ইসলামে মিথ্যাকে হারাম ও কবিরা গুনাহ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা মিথ্যাচার বর্জন করো। কেননা মিথ্যা পাপাচারের দিকে ধাবিত করে এবং পাপাচার জাহান্নামে নিয়ে যায়। কোনো ব্যক্তি সর্বদা মিথ্যা বলতে থাকলে এবং মিথ্যাচারকে স্বভাবে পরিণত করলে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে তার নাম মিথ্যুক হিসেবেই লেখা হয়।’ (আবু দাউদ: ৪৯৮৯)
তবে শর্তসাপেক্ষে তিন ক্ষেত্রে সত্যের বিপরীত বা মিথ্যা বলাও জায়েজ। হজরত আসমা বিনতে ইয়াজিদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন ক্ষেত্র ছাড়া মিথ্যা বলা বৈধ নয়- ১. মানুষের মধ্যে আপস-মীমাংসার জন্য মিথ্যা বলা। ২. যুদ্ধক্ষেত্রে মিথ্যা বলা এবং ৩. স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করার জন্য মিথ্যা বলা।’ (আবু দাউদ: ৪৯২১)
হাদিসের ব্যাখ্যায় ইসলামী বিশ্লেষকরা বলেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় ও ক্ষতি থেকে বাঁচতে মানুষ কখনো কখনো বাড়িয়ে বলতে এবং সত্য অতিক্রম করতে বাধ্য হয়। তাই যেখানে মীমাংসার সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে কখনো অসত্য বলার অবকাশ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, দুই ব্যক্তির মধ্যে মীমাংসার জন্য একপক্ষের ভালো দিকগুলো অন্যপক্ষের কাছে বাড়িয়ে বলা এবং তার সুন্দর দিকগুলো তুলে ধরা। যদিও সে বিবদমান পক্ষ থেকে কথাগুলো শোনেনি। আবার যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে প্রচার করা, এমন কথা বলা যাতে সঙ্গীরা সাহস পায় এবং শত্রুরা ধোঁকায় পড়ে যায়।
অনুরূপভাবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মিথ্যা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ভালোবাসা ও আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশে মিথ্যা বা বাড়িয়ে বলা। যাতে পারস্পরিক ভালোবাসা স্থায়ী হয় এবং পারিবার দীর্ঘস্থায়ী হয়। যেমন–এমন কথা বলা যে, ‘তুমি অমূল্য’, ‘তুমিই আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়’, ‘আমার চোখে তুমিই সবচেয়ে সুন্দরী’ ইত্যাদি। অধিকার হরণ বা দায়িত্ব থেকে পলায়নের জন্য মিথ্যা বলা বৈধ নয়। (শরহুস সুন্নাহ: ১৩/১১৯; তুহফাতুল আহওয়াজি: ৬/৬৯)
এসএ/