হজের প্যাকেজ ঘোষণা, খরচ বাড়ল ১ লাখ টাকা
এ বছর হজের দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালের তুলনায় প্যাকেজপ্রতি খরচ বেড়েছে প্রায় এক লাখ টাকা।
বুধবার (১১ মে) ধর্ম মন্ত্রণালয় এ প্যাকেজ ঘোষণা করে। সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান
প্যাকেজ-১ এ খরচ পড়বে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা এবং প্যাকেজ-২ এ ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা। বাংলাদেশ থেকে যেতে পারবেন ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার দুটি প্যাকেজেই খরচ বেড়েছে প্রায় এক লাখ টাকা করে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ যাত্রীদের জন্য প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়।
সরকার ঘোষিত হজ প্যাকেজে এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিনটির বদলে দুটি প্যাকেজি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজের কথা জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।
ফরিদুল হক খান জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এ যারা যাবেন তাদের খরচ পড়বে সর্বমোট ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা এবং প্যাকেজ-২ এ ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬৩০ টাকা।
২০২০ সনের তুলনায় এবার প্যাকেজ-১ এ খরচ বেড়েছে এক লাখ দুই হাজার ৩৪০ টাকা। সৌদি রিয়ালের বিনিময় মূল্য বিবেচনায় নিয়ে এবারের প্যাকজ ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২০ সালে সৌদি রিয়ালের বিনিময় মূল্য ছিল ২৩ টাকা। আজ হয়েছে ২৪ টাকা ৩০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সৌদিআরব অংশে সকল খাতের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট, সার্ভিস চার্জ ও কর। মোয়াচ্ছা খরচ বেড়ে দ্বিগুণ হওয়া, বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় প্যাকেজ মূল্য বেড়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এবারের হজে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন সহ মোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ পবিত্র হজ পালনে যেতে পারবেন।
হজে যাওয়ার খরচ বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জানান, হজযাত্রীর বিমান ভাড়া, সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া, সার্ভিস চাজ, মুয়াল্লিম ফি, জমজমের পানি, খাবার খরচ এবং অন্যান্য ফি হিসাব করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি এবং বেসরকারি ব্যবস্থপনায় একটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।
ফরিদুল হক খান জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এর আওতায় যারা যাবেন তারা মসজিদুল হারাম চত্বরের সীমানা থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার মিটারের মধ্যে এবং প্যাকেজ-২ এর আওতায় যারা যাবেন তারা সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ মিটারের মধ্যে অবস্থান করবেন।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ যাত্রীদের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩০ টাকার প্যাকেজ। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ এজেন্সিগুলো সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১ ও ২ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ২০২০ সনে যেসকল নিবন্ধিত হজ যাত্রী প্যাকেজ স্থানানন্তরের মাধ্যমে ২০২২ সনে নিবন্ধন চূড়ান্ত করবেন না অথবা হজে যেতে পারবেন না, তাদের হজ নিবন্ধন বাতিল হবে এবং তারা তাদের অর্থ ফেরত পাবেন।
একইভাবে বেসরকারি বব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এজন্সির সঙ্গে হজযাত্রীদের চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সনে নিবন্ধনের অর্থ সমন্বয় করে ২০২২ সনের প্যাকেজ অবশিষ্ট অর্থ নিবন্ধনকারী সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জমা দেবেন। হজ যাত্রীর কাছ থেকে প্যাকেজের ঘোষিত অর্থ পাওয়ার পরই সংশ্লিষ্ট এজেন্সি পিলগ্রিম আইডি (পিআইডি) প্রদান করবে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এ বছর রুট অভ মক্কা ইনিশিয়েটিভ এর আওতায় ঢাকার শতভাগ হজযাত্রীর সৌদি আরবের প্রি-এরাইভাল ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৌদি সরকারের বিধিনিষেধের মুখে গত দুই বছর বাংলাদেশি হজযাত্রীরা হজ পালনে যেতে পারেননি।
সবশেষ ২০১৯ সনে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন হজযাত্রীরা। তখন হজ প্যাকেজ-১ এ ৪ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ এবং প্যাকেজ-২ এ ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়েছিল।
এনএইচবি/এমএমএ/