ঈদের আমেজে রোজা যেন ব্যাহত না হয়
বিদায় নিতে চলেছে পবিত্র মাহে রমজান। পাপ মোচনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্তগুলো হারিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। অনেকেই ঈদকে সামনে রেখে বাড়তি ছুটি নিয়েছেন। উৎসবের আনন্দটা ভাগাভাগি করতে অনেকে ছুটবেন প্রিয়জনের কাছে। অনেকে তো রমজান আসার আগেই ঈদের প্রস্তুতি শুরু করে দেন। ঈদের কেনাকাটা ও প্রস্তুতি চলছে। ঈদের এ আমেজে রোজার গুরুত্ব যেন না কমে যায়, তা খেয়াল রাখাটা খুবই জরুরি।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে রমজান পেল, অথচ গুনাহ মাফ করিয়ে নিতে পারল না, সে চরম হতভাগা।’ (আবু ইয়ালা, ফিকহুস সুন্নাহ)
ঈদের দিন সকালে আল্লাহ তায়ালা রোজাদারের ক্ষমা ঘোষণা করেন। হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত- রাসুল (সা.) বলেন, ‘শবে কদরে জিবরাঈল (আ.) ফেরেশতাদের একটি জামাতসহ অবতরণ করেন। যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে, বসে আল্লাহর জিকির করতে থাকে বা ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকে তার জন্য রহমতের দোয়া করেন। অতঃপর যখন ঈদুল ফিতরের দিন আসে তখন আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদের সামনে বান্দাদের ইবাদত-বন্দেগি নিয়ে গর্ব করেন। কারণ ফেরেশতারা মানুষকে দোষারোপ করেছিল (অর্থাৎ পৃথিবীতে মানুষ প্রেরণকালে আপত্তি জানিয়েছিল)। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা জিজ্ঞাসা করেন, হে ফেরেশতারা! যে মজদুর নিজ দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করে তার বদলা কী হতে পারে? ফেরেশতারা আরজ করেন, হে আমাদের রব! তার বদলা এই যে, তার পারিশ্রমিক তাকে পরিপূর্ণ দিয়ে দেওয়া হোক। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, হে ফেরেশতারা! আমার বান্দা-বান্দিরা আমার ফরজ হুকুম (রমজান মাসের রোজা) পালন করেছে। এরপর তারা ঈদগাহের দিকে যাচ্ছে। আমার ইজ্জতের কসম, আমার প্রতাপের কসম, আমার দানশীলতার কসম, আমার বড়ত্বের কসম, আমার সুউচ্চ মর্যাদার কসম! আমি তাদের দোয়া অবশ্যই কবুল করব। তারপর আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের প্রতি লক্ষ করে বলেন, যাও! আমি তোমাদের গুনাহগুলো মাফ করে দিলাম এবং তোমাদের গুনাহগুলোকে নেকি দ্বারা পরিবর্তন করে দিলাম। অতঃপর তারা ঈদগাহ হতে নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসে।’ (বায়হাকি)
ঈদের প্রস্তুতি নিতে হবে, তবে খেয়াল রাখতে হবে, রমজানের উদ্দেশ্য যেন ব্যাহত না হয়। সেহরি, রোজা, ইফতার, জামাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, তারাবি, কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া ও অন্যান্য ইবাদতের ওপর ঈদের প্রস্তুতি যেন কোনোভাবেই বিরূপ প্রভাব না ফেলে। ঈদের প্রকৃত আনন্দ তারাই উপভোগ করবেন, যারা পুরো রমজান মাস ইবাদতে কাটিয়ে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়েছেন।
এসএ/