শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৮ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় ইসলাম

একটি দেশ বা সমাজে বহু জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও ভাষাভাষী মানুষের বসবাস। বসবাসরত এসব সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যকার ঐক্য, সংহতি ও সহযোগিতার মনোভাবই হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ সঙ্ঘাতের সূত্রপাত ঘটায়, এমনকি গৃহযুদ্ধেও রূপ নেয়। ইসলাম নিছক কোনো ধর্ম নয়; জীবন বিধান। ইসলাম এমন জীবনব্যবস্থা, যার বিশ্ব সমাজ গড়ে তোলার ঔদার্য আছে।

দেশ, জাতি ও ভৌগোলিক সীমারেখার ঊর্ধ্বে ইসলামের পরিধি। সব মানুষই এক আল্লাহর সৃষ্টি। তাই সৃষ্টিগতভাবে সমগ্র মানবগোষ্ঠী বিশ্বভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ। এ ভ্রাতৃত্ব বিশ্বমানবতার মৌলিক ভ্রাতৃত্ব। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সব মানুষ ছিল একই জাতিভুক্ত। অতঃপর আল্লাহ তাআলা পয়গম্বর পাঠালেন সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে’। (সুরা বাকারা: ২১৩)

ইসলাম শুধু অমুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতাই দেয়নি, তাদের সঙ্গে সামাজিক অংশীদারিত্ব, সৌজন্যবোধ, মেলামেশা ও লেনদেনের সুযোগ দিয়েছে। এতেও শেষ নয়, প্রয়োজনে তাদের দাফন বা সত্কারে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। কেননা তারা শ্রেষ্ঠ মাখলুক তথা মানবজাতির অন্তর্ভুক্ত।

আবদুর রহমান ইবনে আবি লায়লা থেকে বর্ণিত, সাহল ইবনে হুনাইফ ও কায়েস ইবনে সাদ কাদেসিয়াতে বসা ছিলেন। তখন তাঁদের পাশ দিয়ে একটি লাশ নিয়ে কিছু লোক অতিক্রম করল। তখন তাঁরা দুজন দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন তাঁদের বলা হলো, ইনি তো কাফির। তখন তাঁরা বলেন, মহানবী (সা.)-এর পাশ দিয়ে একসময় এক জানাজা নেওয়া হয়েছিল। তখন তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। তাঁকে বলা হলো, এটা তো এক ইহুদির জানাজা। তখন তিনি বলেন, এটা কি প্রাণী নয় (মানব নয়)?’ (সহিহ বুখারি)

মানবকুলের পিতা হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে হযরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত যত নবী-রাসূল কালিমার দাওয়াত দিয়েছেন, তাদের কেউ কখনোই কারও উপর দীনের বোঝা চাপিয়ে দেননি। ইসলামের ইতিহাসেও এমন কোনো নজির দৃষ্টিগোছর হয়নি। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘দীনের মধ্যে কোনো জবরদস্তি নেই।’ (সুরা বাকারা: ২৫৬)

ইসলাম সব ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। ধর্ম পালনে কেউ বাধাগ্রস্ত হবে না। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের দীন তোমাদের জন্য, আমার দীন আমার জন্য।’ (সুরা কাফিরুন: ০৬) তাই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মগ্রন্থ, উপাসনালয় ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিয়ে কোনোরূপ ব্যঙ্গ-বিদ্রপ গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহকে ছেড়ে যাদের তারা (মূর্তিপূজক) ডাকে, তাদের তোমরা গালি দিও না। তাহলে তারা সীমালঙ্ঘন করে অজ্ঞানতাবশত আল্লাহকেও গালি দেবে।’ (সুরা আনয়াম: ১০৮)

অমুসলিমদের জান-মাল-ইজ্জত সংরক্ষণের ব্যাপারে রাসুল (সা.) কঠোর সতর্কবাণী দিয়ে বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো চুক্তিবদ্ধ অমুসলিমকে হত্যা করল, সে জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ চল্লিশ বছরের দূরত্বে থেকেও জান্নাতের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়।’ (বুখারি)

অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘সাবধান! যে ব্যক্তি চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম নাগরিকের উপর অত্যাচার করে, অথবা তার অধিকার থেকে কম দেয় কিংবা ক্ষমতাবহির্ভূতভাবে কোনো কিছু চাপিয়ে দেয় বা জোর করে তার কোনো সম্পদ নিয়ে যায় তবে কিয়ামতের দিন আমি সে ব্যক্তির প্রতিবাদকারী হবো।’ (আবু দাউদ)

পৃথিবীর ইতিহাসে নজীরবিহীন দৃষ্টান্ত হলো রাসুল (সা.) কর্তৃক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে পূর্ণ মদিনা রাষ্ট্র। যেখানে ইহুদি, খ্রিস্টান, পৌত্তলিক ও মুসলমানদের সমন্বয় ছিল। সেখানে সবার নাগরিক অধিকার ছিল সমান। মদিনার সংবিধানে উল্লেখ ছিল, প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে, কেউ কারও ধর্মে হস্তক্ষেপ করবে না। কোনো সম্প্রদায় বাইরের শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে সবাই সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করবে। এভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মুসলিম-অমুসলিমদের সমন্বয়ে মদিনায় একটি স্থিতিশীল ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিপূর্ণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। একবার একজন সাহাবী রাসুলে কারীম (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন ‘আসাবিয়্যাত’ (সাম্প্রদায়িকতা) কী? জবাবে রাসূল (সা.) ইরশাদ করলেন, ‘অন্যায় কাজে স্বগোত্র-স্বজাতির পক্ষে দাঁড়ানো।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস: ৫০৭৮)

সুনানে আবু দাউদের অন্য বর্ণনায় আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষকে আসাবিয়্যাতের (সাম্প্রদায়িকতা) দিকে আহবান করবে, অর্থাৎ অন্যায় কাজে নিজ দল, গোত্র, জাতিকে সাহায্য করতে বলবে, সে আমাদের (মুসলমানদের) দলভুক্ত নয়। যে এমন সাম্প্রদায়িকতার কারণে মৃত্যুবরণ করবে সেও আমাদের দলভুক্ত নয়।’ একদিন মুহাম্মাদ (সা.) এর উপস্থিতিতে এক মসজিদের দরজায় এক অমুসলিম জনৈক ব্যক্তি প্রস্রাব করতে উদ্যত হলে সাহাবিরা যখন এর সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, দয়ার নবী (সা.) তখন সাহাবিদের থামিয়ে দিলেন। লোকটি কাজ সেরে চলে যাওয়ার সময় প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.) তাকে বুঝিয়ে বললেন- এটি আমাদের উপাসনার জায়গা, যা আমাদের কাছে খুবই পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র । এখানে ময়লা হলে আমাদের কষ্ট লাগে। একজন অমুসলিম ব্যক্তির এরুপ অন্যায় কাজেও ওই ব্যক্তির সঙ্গে নবীজী (সা.) সুন্দর-সুশীল ব্যবহার ইসলামের অসাম্প্রদায়িকতার মূর্ত প্রতীক। মহান প্রভু এই বিশ্ব ভূখণ্ডে ইসলামী সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার তাওফিক দিন। আমিন।

লেখক: মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত ত্বোহা, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট

এসএ/

Header Ad
Header Ad

বাড়তে পারে ৬৫ পণ্যের দাম, ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ৬৫টি পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করছে। এর ফলে বাজেটের আগেই এসব পণ্যের মূল্য বাড়তে পারে।

এ তালিকায় রয়েছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, জুস, ফলমূল, সাবান, সিগারেট, টিস্যু পেপার, মিষ্টি, এলপি গ্যাস, বিমান টিকিট এবং হোটেল-রেস্তোরাঁর খাবারের খরচসহ আরও অনেক পণ্য। বিশ্লেষকরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এ উদ্যোগ সাধারণ জনগণের ওপর আর্থিক চাপ বাড়াবে এবং মূল্যস্ফীতির বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক কর্মকর্তা জানান, বাজেটের সময় ভ্যাট পরিবর্তন করা হয়, তবে এবারের পরিস্থিতি আলাদা। অর্থ মন্ত্রণালয় আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পেতে কর-জিডিপি অনুপাত ০.২ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে অতিরিক্ত অর্থ সংগ্রহ করতে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে এ পদক্ষেপ মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। চলমান পরিস্থিতিতে চাল, চিনি, ভোজ্য তেলসহ সাতটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে শুল্কছাড় দিলেও মাঝপথে ভ্যাট বৃদ্ধির এই উদ্যোগ সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়কে আরও কঠিন করে তুলতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা সাধারণ মানুষের জন্য আর্থিক দুশ্চিন্তা বাড়াবে এবং জীবনযাত্রার মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

Header Ad
Header Ad

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তথ্য সংরক্ষণের আহ্বান

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত স্থিরচিত্র, ভিডিও ফুটেজ, ডকুমেন্টারি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষণে একটি বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল। এসব তথ্য আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংরক্ষণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) তথ্য অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনসাধারণের কাছে থাকা এসব তথ্য গুগল ড্রাইভে (muspecialcell36@gmail.com) আপলোড করার অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়া, একই সময়ের মধ্যে এসব তথ্য পেনড্রাইভে ধারণ করে সরাসরি গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের কার্যালয়ে (২য় তলা, ভবন নং-২, বিএসএল অফিস কমপ্লেক্স, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ১ মিন্টু রোড, ঢাকা-১০০০) হস্তান্তর করারও সুযোগ রয়েছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত এই উদ্যোগের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র সংরক্ষণ করা হবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ঐতিহাসিকভাবে মূল্যবান হবে।

Header Ad
Header Ad

স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান

স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার বাসভবনে গিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত ৮টা ৩০ মিনিটে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসভবনে প্রবেশ করেন তিনি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন সেই দোয়া করেছেন সেনাপ্রধান। এ সময় সেনাপ্রধানের সাথে ছিলেন তার স্ত্রী। খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান ও তার স্ত্রী প্রায় ৪০ মিনিটের মতো ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাড়তে পারে ৬৫ পণ্যের দাম, ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তথ্য সংরক্ষণের আহ্বান
স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান
রংপুরের টানা তৃতীয় জয়, বরিশালের বিপক্ষে সহজ জয়
ভারতে সিগারেট খাওয়া নিষিদ্ধ চান বলিউড কিং
ইসরায়েলি হামলায় গাজার পুলিশ প্রধানসহ নিহত ১১
নওগাঁয় একবছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬৫
অবশেষে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
বাংলাদেশ আমাদের হারানো ভাই: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৪৩তম বিসিএস: বাদ পড়া ২২৭ প্রার্থীদের পুনর্বিবেচনার সুযোগ
জানুয়ারিতে বোতলজাত এলপিজি’র দাম অপরিবর্তিত, অটো গ্যাসের দাম সামান্য কম
বছরের শুরুতেই বিয়ে করলেন গায়ক আরমান মালিক
টানা দুই ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ পেল ঢাকা, রাজশাহীর প্রথম জয়
গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশে ৪৩তম বিসিএসে ২২৭ জন বাদ
ভারতে তুলনামূলক হারে কমেছে বাংলাদেশী পর্যটক
ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যে প্রভাব পড়বে না: অর্থ উপদেষ্টা
কেন খাবেন সারা রাত ভেজানো কিশমিশ-পানি
বছরের শুরুতেই উত্তাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারীসহ আহত ১৫!
বিপিএলে এক ম্যাচেই ৭ উইকেট নিয়ে তাসকিনের রেকর্ড
সাংবাদিক মুন্নী সাহা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করবে দুদক