শাকিল ইসলাম এর কবিতা 'সাহরির আহ্বান'
মধ্য রাতে সাহরির সময় এলাকাভেদে,
মাইকে বারংবার হাঁক-ডাক সশব্দে।
গজল ক্বেরাতের মধুর সূরে মাসজিদে,
প্রশান্তবদন জেগে ওঠে বসে নিঃশব্দে।
সুপ্রাচীণ কালে মানুষের যা প্রয়োজনে,
ডাকাডাকির প্রথা চালু সময়ের কারণে।
আধুনিক জীবনধারায় প্রতিটা বাড়িতে,
ঘুম ভাঙে মুঠোফোনে যান্ত্রিক সংকেতে।
মাইকে মাত্রারিক্ত ডাক অপ্রয়োজনে?
বিরক্তিকর কর্ম সাধনে নিষ্প্রয়োজনে।
দু-চারটা সংকেতে ঘড়ির মুঠোফোনে,
রোজাদারদের ঘুম ভাঙে ঐ কলতানে।
সাহরির ওই সময়টা মুমিন তাহাজ্জুদে,
দোয়া কবুলের সময় মা জায়নামাজে।
ইবাদতে ব্যাঘাত মাইকের আওয়াজে,
স্রষ্টার আরাধনায় ব্যাঘাত কর নামাজে।
বাদ দাও ওসব, রাখো তোমার প্রার্থনা,
কেমনে বুঝবে ঋতুবতী নারীর যন্ত্রণা।
মাতৃক্রোড়ে অসুস্থ শিশু নির্ঘুম যাতনা,
অমুসলিমদের ঘুমে ব্যাঘাত করিও না।
পিতার শিয়রে বিনিদ্র রজনী কাটিয়ে,
শয্যাশায়ী শরিরটা যন্ত্রণায় ছটফটিয়ে।
বাবা আজ না জেগে চিরতরে ঘুমিয়ে,
কাঁদতে কাঁদতে উৎসে নিঃশ্বাস লুটিয়ে।
হাদিসে রাহমাতুল্লিল আলামিনের তরে,
যেখানে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটিয়ে উচ্চস্বরে।
কোরআনের তেলাওয়াত নিষেধ করে,
সেখানে মাইক বাজাও তুমি সমস্বরে।
অকপট যুক্তিসঙ্গত নাকি ইসলাম-সঙ্গত
দু-এক বার ডাক দিয়া সাহরি করতঃ।
বারবার ডাকাডাকি, গজল, হামদ-নাত,
প্রকৃত মুমিন মুসলমানগণ কুপোকাত।
উচ্চস্বরে গান গাওয়া মোটেও কাম্য নয়,
এহেন কর্মকাণ্ডে সহমর্মিতা ম্লান হয়।
জেনে রেখ তোমার সনে বিধর্মীরাও রয়
সুমহান ইসলামের প্রতি বিতৃষ্ণ না হয়।
অনেকে হয়তো বলবে আজানের কথা,
ফজরের আজানে আছে সময়ের প্রথা।
ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে কি শুনলে আজান?
আজান-সাহরি ডাক দুটো ভিন্ন নিশান।
মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে ফজরের আজান,
ইসলামের সুমহান চির শ্বাশত আহ্বান।
আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম,
আজানে গভীর নিদ্রা ভাঙে মুসলিম।
ইসলাম পরিমিতিবোধের শান্তির ধর্ম,
সকল স্তরে প্রয়োগেই জীবনের কর্ম।
সমাজের পরিমিতিবোধ ইসলামের মর্ম,
সহজ, সরল, সাবলীল রক্ষাকবচ বর্ম।
ডিএসএস/