মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

৩১ বছরে কেউ কথা রাখেনি

কেউ কথা রাখেনি। সরকার অন্ধ ও বধিরদের। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কেউ কথা রাখেনি কবিতার লাইনই আজ লেখার মূল শিরোনাম। রাষ্ট্রে বহুমাত্রিক সংকট বর্তমান, কিন্তু একটি মৌলিক সংকটকে উপেক্ষা করে সরকার আরও অসংখ্য সংকট তৈরি করছে। এটা কীভাবে সবার নজর এড়িয়ে গেল সেটাই আজ বিস্ময়কর ও আশ্চর্যজনক বটে। চরম সত্যের খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আজ সুনীলের বিখ্যাত সেই কবিতার লাইন।

রাষ্ট্র জন্মের বিগত ৫২ বছরে যে হারে কথা না রাখার সংস্কৃতি চালু হয়েছে সেটা ভাববার বিষয়। এই সময়ে রাষ্ট্রের শাসনে যে দলই ক্ষমতায় এসেছেন তারাই জিইয়ে রেখেছেন এই কথা না রাখার সংস্কৃতি। বলছি কবিতায় কথা না রাখার ৩৩ বছর আর বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্যের ৩১ বছর। এই বাস্তবতা আজ চরম সত্য। প্রতিষ্ঠার ৩১ বছরেরও অধিককাল উচ্চশিক্ষায় নিযুক্ত শিক্ষক শ্রেণি বেতনবঞ্চিত। এই তথ্য জানে না মন্ত্রী, সচিব থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট অনেকেই। এই গুরুত্ব উপলদ্ধি করতে না পারাটাও চরম চিন্তার দারিদ্র্য বলেই মনে হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর জল গড়িয়েছে বহুদূর। কিন্তু কথা রাখেনি কেউ! ভাবখানা এমন কথা দেওয়া হয়েছে কথা না রাখার জন্য।

সরকারের ভাষ্যমতে, গলগ্রহ আর করুণা প্রত্যাশী এসব শিক্ষক, কিন্তু বিষয়টি অধিকারের, আইনের শাসন ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার। বাস্তবতা হলো এটা শিক্ষকদের অধিকার এটা রক্ষা করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব, সাংবিধানিক অধিকার। স্পষ্টত সংবিধানে এই শিক্ষাব্যবস্থা অবৈতনিক, একমুখী ও সার্বজনীন ঘোষণার পরেও কীভাবে চলে এমন অন্যায় সেটাই আজ প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। অথচ গত ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এসব নৈরাজ্য আর অবিচার চললেও অবসান হয়নি। ক্রমান্বয়ে ঘনীভূত হয়েছে ক্ষেত্র বিশেষে। আর এই নীরব ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে মানবেতর দিনযাপন করছেন বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কলেজের বৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া প্রায় ৫ হাজার ৫০০ জন শিক্ষক।

সুদীর্ঘ এই সময়ে দেশের গণমানুষের প্রধান দুটি দল ক্ষমতায় টিকে ছিল। ছিল আধ ডজন শিক্ষামন্ত্রী। সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোল সামনে রেখে সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক বহুক্ষেত্রে ঘটেছে সুদূর প্রসারী পরিবর্তন। অথচ গুণগত পরিবর্তন হয়নি এইসব ভাগ্যবিড়ম্বিত শিক্ষকদের। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষায় মেগা প্রজেক্টের কথা বলে দিয়েছেন সান্ত্বনা, শিক্ষামন্ত্রীর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, সচিবদের সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করাসহ সরকারের সব মুখপাত্রই দীর্ঘদিনের জমে থাকা এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও কথা রাখেনি কেউ। এমন টালবাহানার মধ্যেই কেটে গেছে ৩১ বছর। আর এই শোষণ এখন অন্যায়, অবিচার আর বঞ্চনার ২৪ বছর বারবার সামনে এনে দাঁড় করাচ্ছে পাকিস্তানের লুটপাট আর শোষণ। অধিভুক্ত কলেজের কলেজ প্রশাসন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আর সরকারের অদূরদর্শী শিক্ষাচিন্তার ফলেই টিকে আছে এই শোষণ।

সরকারের বিতর্কিত শিক্ষানীতি, খামখেয়ালিপনা, সিদ্ধান্তহীনতা আর অদক্ষ পরিচালনার কারণেই উচ্চশিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত আজ ধ্বংসের কিনারায়। কথা না রাখার সংস্কৃতির কারণে একদিকে যেমন সরকার মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় পিছিয়ে গেছে অন্যদিকে বিঘ্নিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গতি পেয়েছে সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা। সর্বাত্মকবাদী, ফ্যাসিবাদী সরকারে শিক্ষা ও সংস্কৃতির সংকোচন নীতির মতো চলেছে বিগত দিনগুলো।

১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৩ সাল থেকে স্থানীয় পর্যায়ের বেসরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজগুলো নিয়োগ দেওয়া শিক্ষকদের তাদের নিজস্ব আয় থেকে বেতন দেবে এই শর্তে অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসে কলেজগুলো। এই বিষয়ে শিক্ষক নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরণাপন্ন হলে তারাও এ বিষয়ে কোনো সমাধান দিতে পারেনি। অভিভাবক প্রতিষ্ঠানের এমন নিরবতা আর অধিভুক্ত কলেজগুলোকে শিক্ষা ব্যবসার সুযোগ দানের ভেতর দিয়েই শুরু কথা না রাখার সংস্কৃতির। কারণ হিসেবে কলেজ দেখিয়েছিল কলেজে পর্যাপ্ত আয় না থাকা কিন্তু বাস্তবতা ছিল উল্টো। এসব শিক্ষকদের শ্রমকে পুঁজি করে কলেজগুলো ব্যবসার জাল পেতে বসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যক্ষ মদদে। শিক্ষক ও ছাত্রদের এভাবে ধোঁকা দিয়েই চলছে পাঠদান কার্যক্রম মূল কুশীলবের ভূমিকায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের শোষণ করে শিক্ষকদের ফাইফরমাস খাটিয়ে দিনের পর দিন অধিভুক্ত কলেজগুলো চালিয়ে যাচ্ছে এমন অন্যায় আর অবিচার।

শিক্ষকদের বেতন দেয় না প্রতিষ্ঠানগুলো অপরপক্ষে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হয় উচ্চ হারে বেতন। কলেজভেদে এই বেতনের পরিমাণ ৫০০-১৫০০ ছাড়িয়েছে কোথাও কোথাও। এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকদের দাবি এমপিও নতুবা বেসরকারি অর্থের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শিক্ষকদের বৈষম্য হ্রাস। এমন বৈষম্য বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কোনো লাভ হয়নি উল্টো নবায়নের নামে কামিয়েছে কাড়ি কাড়ি টাকা। ইউজিসির টাকায় অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চললেও ছাত্র অনুপাতে বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়। সাম্প্রতিক সময়ে কলেজগুলোর টাকায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় একটি লাভজনক খাতে পরিণত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের প্রধান উৎস এখন এসব কলেজগুলো। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর যোগসাজসে বেশ সম্প্রসারণশীল এই বাজার বেশ রমরমা। এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে রাজপথে দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করে আসছেন শোষিত-বঞ্চিত শিক্ষকসমাজ। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির দল ক্ষমতায় থাকাকালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের এমন দৈন্যতা নিশ্চিতভাবেই স্ববিরোধী। বঞ্চনার এই দীর্ঘসময়ে গত একযুগে দেশের প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, সচিব, সাংসদ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ডিসি, ভিসিসহ মিটিং মিছিল লবিং স্মারকলিপি দেন দরবার করেও কোনো লাভ হয়নি। সবাই আশা দিয়েছেন, কিন্তু কথা রাখেননি কেউ। এই অন্ধ, মূক ও বধির সরকার শোনেনি শিক্ষকদের চিৎকার। শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেনি সরকার।

শিক্ষকদের ভাষ্যমতে, একই নিয়মে নিয়োগ নিয়ে সদ্য জাতীয়করণ করা কলেজগুলোর শিক্ষকরা যদি সরকারি বেতনের অংশ পেতে পারে, ডিগ্রির তৃতীয় শিক্ষকরা যদি এমপিও পেতে পারে তাহলে তাদের সমস্যা কোথায়। আদতে কোনো সমাধান নেই খোদ সরকারেই হাতেই। নিপীড়িত এসব শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার বিষয়ে সবোর্চ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। কেন অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হবে না এই মর্মে সংসদে বিভিন্ন সময়ে বিক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে। সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষমেষ তারাও কথা রাখেনি। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি বারবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব সমস্যার সমাধানকল্পে কাজ শুরু হয়েছে বললেও এখন পর্যন্ত তার আন্তরিকতার দৃশ্যমান কোনো প্রতিফলন চোখে পড়ছে না।

জাতীয় স্বার্থে রাষ্ট্রের একটা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর উচ্চশিক্ষার মতো জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারের এমন নীরব ভূমিকা খোদ শিক্ষকদেরই ভাবিয়ে তুলেছে। শিক্ষাকে অবহেলা করে অতীতে পিছিয়ে গেছে এমন দেশের নজির বিরল নয়। এতে রাষ্ট্রেরই ভীত দুর্বল হয়ে ওঠে। শিক্ষায় বৈষম্য আর অবিচারের ফলে তারা তাদের অনিবার্য পতন রোধ করতে পারেনি। বাংলাদেশের শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের চিন্তা এর বাইরে নয়। সবশেষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয় আন্দোলনরত শিক্ষকদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও সেটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।

রাষ্ট্রে সমস্যা ছিল, আছে, থাকবে সমাধানও আছে কিন্তু একটা সমস্যা কীভাবে দীর্ঘ ৩১ বছর টিকে থাকে কল্যাণকর সরকারের তকমার মধ্যে। এভাবে টিকে থাকা সমস্যা সরকারের অদূরদর্শী, ভঙ্গুর, আর ব্যর্থ রাষ্ট্রের লক্ষণ ছাড়া আর কিছুই নয়। শিক্ষা নিয়ে সরকারের কোনো কার্যকর গুণগত পরিবর্তনমুখি টেকসই পরিকল্পনা আছে কি না সেটা সুশীল সমাজের বোধগম্য নয়। মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন ও বিশ্ব প্রতিযোগিতার বাজারে নিজের নিরাপত্তা কতটুকু নিশ্চিত করতে পারবে সেটা সময়ই বলবে। এভাবে কথা না রাখার সংস্কৃতি জাতি হিসেবে আমাদের কোথায় দাঁড় করাবে সেটা বিবেচ্য বটে। ফলে সুনীলের সেকথাই আজ চরম সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবেই দিন কেটে যায়। নিখিলেশরা কখনো এসে দেখে না, তাদের ভাগ্য বিধাতাও চোখ মেলে তাকাই না।

হাসিবুল হাসান: অ্যাসিসন্ট্যান্ট ম্যানেজার,
সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, বাংলামোটর, ঢাকা।

এসএন

 

 

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ছবি: সংগৃহীত

বারবার নিলাম ডেকেও এস আলম গ্রুপের বন্ধকী সম্পত্তির কোনো ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছে না দেশের ব্যাংকগুলো। ফলে ঋণ আদায়ে এখন বাধ্য হয়ে অর্থ ঋণ আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে তারা। এতে পুরো প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত ও জটিল হয়ে পড়েছে।

চট্টগ্রামভিত্তিক এই শিল্পগোষ্ঠী ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জনতা ব্যাংক ১০,৭০০ কোটি টাকার বিপরীতে ছয়বার নিলাম ডেকেও কোনো সাড়া পায়নি। একইভাবে ইসলামী ব্যাংকও সাত দফা নিলাম আয়োজন করেও ব্যর্থ হয়েছে, যার মধ্যে আইডিয়াল ফ্লাওয়ার মিলসের ১,১০০ কোটি টাকার ঋণ সংক্রান্ত নিলামও অন্তর্ভুক্ত।

সাম্প্রতিক সময়ে এস আলম গ্রুপের একাধিক স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জমি নিলামে তোলা হলেও দরপত্র জমা পড়েনি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আইনি প্রক্রিয়া পূরণের জন্যই তারা এসব নিলাম ডাকছেন, যদিও আগ্রহী ক্রেতার দেখা মিলছে না। অনেকেই এই বিষয়টিকে ভয় পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, এস আলম গ্রুপ সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যার বড় একটি অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণ জব্দ করে।

বর্তমানে এস আলম গ্রুপের ওপর কেন্দ্রীয়ভাবে তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে ১৪ সদস্যের বিশেষ লিগ্যাল টিম। একই সঙ্গে তাদের জব্দকৃত শেয়ার বিক্রির জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য