বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

চাষবাসের 'চাষা'

চিরাচরিতভাবে ‘চাষা’ শব্দটি আমরা অনেকে কাউকে ভর্ৎসনা বা খাটো দেখানোর অর্থে প্রকাশ্যে বা নিন্দের সূচকে ব্যবহার করে এসেছি। যদি মিথ্যে বলে প্রতীত হয় বা কারো মর্মে আঘাত লাগে তাহলে আমি সবার কাছে ক্ষমা-প্রার্থী।

চাষাও মানুষ সমষ্টির অঙ্গ। যারা নিত্য মাটি উজিয়ে চাষবাস করে। রক্ত ঘামে বেঁচে থাকার ঐতিহ্যগত জীবিকা মনে করে। দু’হাত নিংড়ে অন্ন-যোগানের আপ্রাণ চেষ্টা ধরে। তাদের আমার সশ্রদ্ধ সালাম।

এই শব্দটির আক্ষরিক অর্থ আমরা বুঝিয়ে এসেছি— চাষা মানে গেঁয়ো, গাঁইয়া, দেহাতি, মূর্খ, বোকা অসভ্য, বর্বর, ভাঁড়, ইত্যাদি ইত্যাদি…অর্থাৎ একপ্রকারের অন্তহীন চাষাড়ে গালাগালির জুগুপ্সা, বা তথাগত সংস্কৃতিবান ভাষার ইঙ্গিতে চাষা মানে ‘অমার্জিত ব্যক্তি’। ‘গ্রাম্য মজুর’।

নানা অভিধান ঘেটেঘুঁটে নিংড়ে যতটুকু আমার সীমিত জ্ঞানবুদ্ধির সাথে যুদ্ধ বাধিয়ে বুঝলাম বা উপলব্ধি উদ্ধার করলাম— চাষা শব্দের উৎপত্তি চাষ থেকে যার প্রকৃত অর্থ ‘যে চাষ করে’ বা ‘কৃষক’। তাহলে চাষা শব্দের আভিধানিক অর্থ দাঁড়ালো— কৃষি; কৃষিজীবী উৎপাদন।

চাষা শব্দটির বিবৃতি অনেক কবি সাহিত্যিকের কলমে লক্ষণীয় ভাবে ফুটে উঠেছে। কাজী নজরুলের কবিতায় – ‘সব সাধকের বড় সাধক, আমার দেশের চাষা’।’ চাষী ওরা নয়কো চাষা, নয়কো ছোটলোক’ । অনেকের গানে গল্পে উপন্যাসে তদাদিনসময়ের প্রতিবেদন কীর্তনে স্পষ্টভাবে আধৃত চাষা-কৃষকের অবমাননা, মানসিক, শারীরিক নির্যাতন আবার কৃষি মঙ্গল ও প্রগতির প্রচেষ্টার প্রতিকার বিধান।

কৃষি চাষা-কৃষকদের চিন্তা ভাবনার নান্দনিকতা। যেমন—ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত’। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ‘শীর্ষেন্দু বিন্দু থেকে সিন্ধু’। শরৎ চন্দ্রের ‘পণ্ডিতমশাই’। রবীন্দ্রনাথ ‘দুই বিঘা জমি’তে উপেন চরিত্র চিত্রায়নে মহাজনী শোষনের নিষ্ঠুরতার বর্ণনা পেয়েছি। এছাড়া আরও অনেক বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সমাজ উপচিকীর্ষা ব্যক্তির ‘চাষা’ শব্দ তাদের লেখনীর বয়ানে উল্লেখযোগ্য এজাহার স্মরণীয় মনোভাব।

রবীন্দ্রনাথ জমিদার বংশের সন্তান হয়েও তার চেতনার গভীর গহীনে সাহিত্যের লালন পালনে বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন ‘কৃষিই বাংলার কৃষ্টি। রবীন্দ্রনাথ বিশ্বব্যাপী সাহিত্যিক হওয়া সত্ত্বেও তিনি ছিলেন বিজ্ঞানের বরপুত্র। কৃষিতে নতুন প্রযুক্তির উৎসাহী। উৎকৃষ্ট কৃষির আধুনিকায়ন মানে বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদ। শক্তি ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণ। আধুনিক প্রযুক্তির নির্বাচন এবং শস্য উৎপাদনে প্রযুক্তির ব্যবহারে উদ্যমী। চাষার চাষবাস বিজ্ঞানের তালিমের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আগ্রহ। বলেছেন সামান্য লাঙ্গলের ফলার সাথে মাটির সংযোগ যথেষ্ট ভূমিকর্ষণ নয়।
রবীন্দ্রনাথ নিরক্ষর চাষাদের জন্য কৃষি ব্যাংক পরিষেবা স্থাপন করেন। সর্বোপরি নিজের নোবেল পুরস্কারের অর্থের অধিকাংশ ভাগ মূলধন হিসাবে প্রদানও করেন।

রবীন্দ্রনাথ এমন কি চাষ বাসের ভবিষ্যৎ উন্নতির দূরদৃষ্টি নিয়ে স্বেচ্ছায় তার পুত্র রথীন্দ্রনাথকে পাঠিয়েছিলেন আমেরিকায় ইলিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ কৃষি শিক্ষার জন্য। রবীন্দ্রনাথ নিজে কৃষি বিজ্ঞানে জ্ঞানার্জন না করেও একজন পরিপক্ক কৃষিবিদের দৃষ্টান্ত।

‘চাষা’ শব্দের সর্বপ্রথম ব্যবহার কবে বা কোথা থেকে আবির্ভাব আর কীভাবে জনসমাজের ঘরে বাইরে ছোঁয়াচে রোগের মতো ছড়িয়ে পড়লো সে তথ্য আমার জানা নেই বা জানারও প্রয়োজনবোধ আছে বলে আমি অন্তত মনে করছি না।

ভাষাবিদ বিশারদগণ ভালোভাবে বিশদ ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ করতে পারবেন। আমি নিশ্চিত ‘চাষা’ শব্দটি সমগ্র চাষা-কৃষক বর্গসমুদয়কে নিম্নতর দর্শানোর জন্য ব্যবহার বা প্রয়োগ করা হতো বলে আমার নিজস্ব ধারণা।
দেশ যখন ব্রিটিশ শাসনের অধিকারে তখন বেশ কিছু জমিদার বা ধনী সম্প্রদায় নিজেদের অস্তিত্ব ঠাটবাট রক্ষা বা মজবুত রাখার জন্য গোরা সাহেবদের খোশামোদে তটস্থ থাকত। নিজেদের ব্যক্তিগত সুবিধার স্বার্থে খেয়াল খুশী মতো চাষা-কৃষক-মজুরদের নির্যাতন করত যাতে নিজেদের ক্ষমতা অক্ষুণ্ন থাকে।

উঁচু জাতের মানুষ খেটে খাওয়া চাষা কৃষকদের নিম্নজাত বলে প্রকাশ্যে বলতে লজ্জাবোধও করত না। কথায় কথায় পান থেকে চুন খসলে ‘চাষা’ বলে নিত্য তিরস্কার বা দূরে সরিয়ে রাখার প্রবণতা এবং তাদের সমান্য মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার প্রবঞ্চনা কৌশলে চালিয়ে যেতে দ্বিধাবোধও করত না। যার বহু জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত ইতিহাসের পাতায় বন্দী।

অসংখ্য মানুষ যারা নির্ভয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে নিজেদের ঘর-সংসার উপেক্ষা করে প্রাণ বলিদান দিয়ে আমাদের জন্মভূমি মাতৃভূমি দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খলা থেকে মুক্ত করে গেছেন যাদের তখন আমরা বিপ্লবী বা স্বদেশী বলতাম। তাদের মৃত্যূ-ফাঁসি, যন্ত্রণা কষ্ট নিষ্ঠার সৌজন্যের অবদানে স্বাধীনতা ফিরে পেলাম। তাই আমরা স্বাধীন হওয়ার সুযোগ সুবিধে কুড়িয়ে আধুনিক মস্তিষ্ক সম্পন্ন মানুষ হলাম। তবু সেই চাষা শব্দটির ব্যবহার, সম্বোধন রীতিনীতির আচারে বিচারে বর্তমান দিনেও বিদ্যমান যার উদ্দেশ্য অম্লান ও দ্রুত চলমান।

যাতে ‘চাষা’ শব্দের উত্তরসূরি মর্যাদা ক্ষুণ্ন না হয় বলে আমাদের কিছু স্বজাতির অলীক সভ্যতার জিভের ডগায় রয়ে গেছে ও যতদিন মানুষ অর্থগুণে গুণবান পরিচিতি প্রতিপত্তির আখ্যার লেবেল সেঁটে জীবিত থাকবে ততদিন চাষা শব্দের ব্যবহারে অনর্থ ঘটবেই।

বেদ বাক্যের মতো সত্য যে চাষার দৌলতে আমরা আজ দৌলতমন্দ। চাষার শ্রমের পুণ্যিতে সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা মাটি আবাদ হরিৎ কোজাগরী কমলা।
আজও চাষা-কৃষক নিজেদের ব্যক্তিগত প্রয়োজন, মর্যাদা প্রতিষ্ঠার স্বার্থ নির্বিশেষে নিঃশব্দে জলাঞ্জলি দিয়ে স্বছন্দে আঙুল খুলে আনন্দের ঘোরে লাঙ্গল তুলে বাঁজা মাটি খুঁড়ে বুঝিয়ে দিয়ে আসছে…

চাষার চাষবাস দেশের জীবিকা। মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাস। স্বাস্থ্য নিরাময় করার আশ্বাস। কৃষি দেশের সম্পদ।

চাষা-কৃষকদের সবল স্বাবলম্বী না করতে পারলে কোনো দেশ সমৃদ্ধশীল, উন্নতিশীল হতে পারে না— এ কথা অবশ্যই আমাদের স্বীকার করতে হবে। আমাদের মানুষের জন্মগত বা শিক্ষাগত পেশা যাই হোক তবু স্বভাবগত কৃষি উৎপাদন ভাবনা নেশার প্রবৃত্তি রক্ত-মাংস-মজ্জায় বহন করতে হবে ও তার প্রতিপালনে সোচ্চার হতে হবে।

চাষা-কৃষকদের ভূমির অধিকার, খাজনা মওকুফের অধিকার, সময়মত স্বল্পসুদে ঋণ প্রাপ্তির ব্যবস্থা, সমবায় কৃষি বিজ্ঞানের প্রশিক্ষণ, কৃষিপণ্য উৎপাদিত জিনিষের ন্যায্যমূল্য আদান প্রদানের অধিকার। কৃষির সার্বিক উন্নয়ন চেয়ে কৃষির পূর্ণব্যাদিত বৃহত্তর প্রবর্তন আমাদের সত্ত্বর প্রয়োজন।

বর্তমান কৃষি শিক্ষা সংস্থার সমস্ত কৃষি-শিক্ষানিবিশদের প্রত্যন্ত গ্রামে গঞ্জে গিয়ে কৃষকের চাষবাসে হাতে হাত মিলিয়ে একসাথে কাজ করার জন্য উৎসাহ দিয়ে সরাসরি আবশ্যিক করার প্রয়োজন যা অদূর ভবিষ্যতে সমস্ত মানুষের মনে-প্রাণে কৃষি বিবেক জাগিয়ে তুলবে।

অন্যান্য শিল্প-পরিকল্পনার সংকল্পের পাশাপাশি এক উন্নত মানের কৃষিসাধন দেশ গড়ে তোলার জন্য বেশি করে প্রাধান্য স্থাপন করে আরও তৎপর হতে হবে তাহলে আর অন্ন-রসদের জন্য পরের মুখ চেয়ে থাকতে হবে না।

চাষার চাষবাস দেশের শ্বাস-প্রশ্বাস পরিশীলিত উচ্ছ্বাস উপেক্ষা বা অস্বীকার করলে বলতে হবে আমাদের মানুষ জন্ম এক নিছক পরিহাস।

আরএ/

Header Ad
Header Ad

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল নেমেছে। আজ বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে, সন্ধ্যা ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জড়ো হয়। তারা স্লোগান দিতে দিতে জাদুঘরের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভাঙচুর শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ জাদুঘরের বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত করে।

নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার ঘোষণার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল ভাষণের বিরোধিতা করে এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

বিক্ষোভের আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'লং মার্চ টু ধানমন্ডি-৩২' নামে একটি কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়, যেখানে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়। তবে, বুলডোজার ছাড়াই তারা নিজ হাতে ভাঙচুর চালায়।

এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও বিক্ষোভকারীদের থামাতে ব্যর্থ হয়। বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে পরিচিত, যেখানে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হওয়ার আগে বসবাস করতেন।

Header Ad
Header Ad

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কী করলাম বা করলাম না- ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটি দিয়ে আমাদের বিচার করবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও বলেন, "এটি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। আমি জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের দুই চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই দুটি প্রতিবেদন দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আপনি দরিদ্র, মধ্যবিত্ত বা ধনী যেই হোন না কেন, এই সংস্কারের প্রভাব থেকে কেউই বাদ যাবেন না।"

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নাগরিকরা তাদের প্রকৃত অধিকার ফিরে পাবেন। আমরা যেন সত্যিকারের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা পাই, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।"

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, "যাতে সবাই মনে করতে পারে, এখানে প্রকৃত সত্য বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। আমাদের তো পণ্ডিত হতে হবে না এটি বোঝার জন্য, কারণ প্রতিদিনই আমরা নানা অবিচারের শিকার হই।"

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "সংস্কার কমিশনের কাজ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্বের দরবারে এটি তুলে ধরতে হলে এর ইংরেজি অনুবাদ করা প্রয়োজন।"

কমিশনের সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সংমিশ্রণে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দলিল হয়ে থাকবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা কী করলাম বা করলাম না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সেই কাজের জন্যই বিচার করবে। তারা প্রশ্ন করতে পারে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, তাহলে বাস্তবায়ন করেননি কেন? কারণ, সবকিছু তো বইয়ের পাতায় লেখা আছে। এই কাজ জাতির জন্য এক মূল্যবান স্মারক হয়ে থাকবে।"

Header Ad
Header Ad

হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান

সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে দেশের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিএনপি নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষকে গুম ও খুন করে স্বৈরাচার ভারতে পালিয়ে গেছে। যে কোন মূল্যে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের বিচার করতে হবে। এই প্রশ্ন গণতান্ত্রিক সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে 'আমরা বিএনপি পরিবারের উদ্যোগে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় জুলাই আগস্ট বিপ্লবে নিহত ৪৫ শহীদ পরিবারকে আর্থিক অনুদান এবং ‌র‌্যাবের গুলিতে নিহত যুবদল নেতা মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে ঘর উপহার উপলক্ষ্যে সোনাগাজী সরকারি ছাবের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের কথা বলে যে সময়ক্ষেপণ করছে এবং সংস্কার কাজ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করছে, তা কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি-না সে ব্যাপরে সবাই সজাগ থাকতে হবে।

এ সময় তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার বিগত ১৭ বছর মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল । সে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে লড়াই করে বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ, বিগত ১৭ বছরের লড়াই এবং ২৪এর জুলাই আগস্টের বিপ্লবের চেতনায় আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানে সবাইকে সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। এখন দেশে যে সংস্কারের আলোচনা চলছে সেই সংস্কার প্রস্তাব বিগত আড়াই বছর পূ্র্বে আমরাই দিয়েছিলাম। স্বৈরাচার আমাদের সংস্কার প্রস্তাব আমলে নেয়নি। আর সেই বিশ্বাস থেকেই আমরা জাতির সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছি। কারণ বিএনপি দেশ ও জনগণ নিয়ে ভাবে। দেশের কল্যাণে কাজ করতে চায়।

দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে এবং শহীদদের স্বপ্নের দেশ বিনির্মাণ হবে।

বিএনপি দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে প্রস্তুত উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সব সময়ই দেশ ও জনগণের কল্যাণ নিয়ে ভাবে। এর বড় কারণ হলো- দেশের জনগণ বিএনপির উপর আস্থা রাখতে চায়। কীভাবে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে আসবে নেতাকর্মীদের সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

আমরা বিএনপি পরিবার কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও ফেনী পৌর বিএনপি'র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া ও আমরা বিএনপি পরিবার কেন্দ্রীয় কমটির সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুনের যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভেকেট রুহুল কবির রেজভী, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক,জয়নাল আবেদীন ভিপি জয়নাল, যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ হারুন, সহ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, নির্বাহী কমিটির সদস্য বেলাল আহমেদ, অ্যাডভোকেট শাহানা আক্তার শানু, আবদুল লতিফ জনি, জালাল আহমদ মজুমদার, মামুনুর রশিদ মামুন, মশিউর রহমান বিপ্লব, ফেনী জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান, জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার, যুগ্ম আহবায়ক গাজী হাবিব উল্লাহ মানিক, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জামাল উদ্দিন সেন্টু, সদস্য সচিব সৈয়দ আলম ভূঞা, শহীদ ছাত্রদল নেতা কাওছার উদ্দিনের পিতা ফিরোজ আলম, শহীদ মেহাম্মদ মাসুদের কন্যা মুনতাহা বিনতে মাসুদ ও শহীদ জাফর আহমদের কন্যা জাহানারা বেগম প্রমুখ।

এসময় ২০১৬ সালের ২৫ জুন র‌্যাবের গুলিতে নিহত মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে ঘর এবং ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে নিহত ৪৫ শহীদ পরিবারসহ আহতদের প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাঝে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা
আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা
হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান
মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা
খুব দ্রুতই জবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে: ছাত্রদল সভাপতি
বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ
চুয়াডাঙ্গায় সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার
আজ বন্ধুর সাথে গোসল করার দিন
২ আলাদা বিভাগসহ দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস
হাসিনার লাইভ প্রচারের আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ উধাও
হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা
বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর
গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবজিবাহী পিকআপ খাদে, চালকসহ নিহত ৩
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনগনের মতামত চাইলো হাসনাত  
এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব  
পটুয়াখালীতে বাংলাভিশনের সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম