দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে ঢাকাপ্রকাশ
আয় চলে আয়রে ধূমকেতু,
আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু, দুর্দিনের এই দুর্গশিরে
উড়িয়ে দে তোর বিজয়-কেতন।
অলক্ষণের তিলক-রেখা, রাতের ভালে হোক-না লেখা।
জাগিয়ে দে রে চমক মেরে, আছে যারা অর্ধচেতন।
এমনি বজ্র পংক্তিতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ধূমকেতু’র বিদ্রোহী সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলামকে জানিয়েছিলেন পথচলার সংগ্রামী শুভেচ্ছা, যা পত্রিকার প্রথম পাতার শীর্ষে উৎকীর্ণ থাকত। এক্ষেত্রে একজন লেখক হিসেবে নয়, একনিষ্ঠ পাঠক হয়ে ‘ঢাকাপ্রকাশ’কে আগামীর নির্ভীক পথচলার প্রশ্নে বলব— মিথ্যার বেড়াজাল ভেঙে সত্যের সন্ধিতে এগিয়ে চলো বহুদূর।
জাতীয় সত্তা মহান বিজয় দিবসের লাল-সবুজের মহোৎসবের মহিমান্বিত লগ্নে ‘ঢাকাপ্রকাশ’এর প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে স্বাগত এবং ২য় বর্ষে পদার্পণের আনন্দক্ষণে পত্রিকাটির প্রকাশক, সম্পাদক, সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ও গণতন্ত্রের জয়যাত্রায় অবদান রেখে পথচলা এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে জনসচেতন তৈরিতে ‘ঢাকাপ্রকাশ’ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলার জন্য খুবই প্রশংসনীয়।
ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট, সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মধ্য দিয়ে পাঠকের হৃদয়ে ঠাঁই করতে সক্ষম হয়েছে ঢাকাপ্রকাশ। সৃজনশীল, আধুনিক ও উদার গণতান্ত্রিক মতপ্রকাশের চর্চাকে গুরুত্ব দেওয়ায় এক বছরের চারা গাছটি শেকড় মেলে আজ পোক্ত বটবৃক্ষ ‘ঢাকাপ্রকাশ’।
নতুন প্রত্যয়ে সংবাদ যেন বস্তুনিষ্ঠ থাকে
জনসাধরণের মধ্যে সুন্দরভাবে সংবাদ প্রচার করার লক্ষ্যে পথাচলা ‘ঢাকাপ্রকাশ' এর হাত ধরে দেশ, সমাজের উন্নতি হোক এটাই প্রত্যাশা। সংবাদ যেন সংবাদ থাকে। অতিরঞ্জিত যেন না হয়ে ওঠে। সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে জায়গা হোক জনসাধারণের কাছে, দীর্ঘ বছর বেঁচে থাকুক পাঠকের হৃদয়ে, পথচলা হোক সুদৃঢ়।
সত্যের জন্য লড়াই
তারুণ্যে ভরপুর ‘ঢাকাপ্রকাশ’ তারুণ্যের জন্য প্রত্যাশা, সত্যের জন্য লড়াই, নীতির জন্য লড়াই করে নিজের অবস্থানকে দৃঢ় করবেন বলে আশা করি। অন্যায় এবং অবিচারের বিরুদ্ধে সুতীক্ষ্ণ চিন্তা ও লেখনী হোক 'ঢাকাপ্রকাশ' এর। সেই সংবাদ প্রকাশ আমরা দেখতে চাই। আজকের এই ডিজিটাল বাংলাদেশে নারী-পুরুষের সমতা ও শিক্ষার যে অগ্রগতি পৃথিবীর অনেক দেশের কাছে ঈর্ষণীয়। তা ছাড়া, নারীর অগ্রযাত্রা ও সমাধিকারের লড়াইয়ে ‘ঢাকাপ্রকাশ’ থাকুক অটুট।
জনমুখী করার নতুন সদিচ্ছা
গণ মানুষের কথা, তাদের সুখ-দুঃখ ভালোবাসার সাথী হিসেবে ‘ঢাকাপ্রকাশ’ জনসাধারণের হোক। গ্রামের দারিদ্র ও বিচ্ছিন্ন মানুষের চাহিদা, প্রেক্ষাপট ও করণীয়; শহরের বঞ্চিত মানুষের প্রয়োজন, অবহেলিত মানুষের দুঃখ-দুর্দশা, লোকালয় ও লোকচক্ষুর বাইরের সবটুকু যানবান্ধব, উন্নয়নমুখী ও অবশ্য করণীয়তা তুলে এনে পথাচলা হোক। যার মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ তথা প্রতিবন্ধী মানুষ, আদিবাসী, তৃতীয় লিঙ্গ, হাওর ও চরের মানুষ, নারী, শিশু, কৃষক, দিনমজুরের উন্নয়নের তথ্য আরও বেশি করে প্রকাশিত হোক এই কামনা।
অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হোক পথাচলা
ইতিহাসের পাতায় সংবাদপত্র সময়ের সাক্ষী। দেশ-বিদেশের নানা প্রান্তে ঘটে যাওয়া ঘটনার খবর প্রতিদিনই আমরা সংবাদপত্রের পাতায় দেখতে পাই। এ ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বিশ্লেষণধর্মী লেখাও সংবাদপত্রে ছাপা হয় যা মানুষকে আলোকিত করে পথ চলতে সাহায্য করে। এই ডিজিটাল যুগে এখন ইন্টারনেটের কল্যাণে আজ হাতের মুঠোয় সারাবিশ্ব। ফলে মানুষে মানুষে যোগাযোগ যেমন বেড়েছে, পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে নানা সংকট আর বেড়েছে নানা অপরাধ । এ সংকট উত্তরণে সংবাদপত্রের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ‘ঢাকাপ্রকাশ’ এর আগামী পথ চলাতে সামনের দিনগুলোতেও এসব ক্ষেত্রে অধিক দায়িত্বশীলতা নিয়ে কাজ করবে বলে আশা করছি। সময়োপযোগী, পরিবর্তন ও সত্যের প্রতি অনুগত থেকে স্বদেশের মঙ্গল কামনায় মানুষকে জেগে ওঠার প্রেরণা দিতে প্রতিদিনই প্রকাশিত হোক ‘ঢাকাপ্রকাশ’।
ঢাকাপ্রকাশ দেশের কথা বলুক, জনতার কথা বলুক, মানুষ ও দেশের পক্ষে নির্দ্বিধায় দাঁড়াক এবং সময়ের সঙ্গে, সময়কে ধারণ করে সত্য আর সততা নিয়ে এগিয়ে যাক—এই আশাবাদটি জেগে থাকুক আগামী পথচলার উৎসব-আয়োজন ছাপিয়ে।
লেখক: শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা মিডিয়া এবং গণযোগাযোগ বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
আরএ/