বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শন ও আজকের বাস্তবতা

অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় সাম্প্রতিক সময়ে দেশ ভরে গেছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকে। টানা তৃতীয় মেয়াদে দেশ শাসন করছে আওয়ামী লীগ। সব ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রদর্শন, চিন্তা, স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। তবে হচ্ছে কতটুকু সেটা বিচার্য বটে। সে বিচার সময় করবে। তবে ক্ষমতাসীন দল দীর্ঘদিন ধরে সে চেষ্টা যে প্রাণপণ করে আসছেন— তা কারও অজানা নয়।

রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, বাস্তবায়নের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রদর্শন-চিন্তা-চেতনার বাস্তবায়ন কতটা করতে পেরেছে সরকারে থাকা তার প্রিয় রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ? এর আগে আমরা জানব সমগ্র রাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে বঙ্গবন্ধু কি ভেবেছিলেন। আমরা কি ভাবছি, তিনি কি করার চেষ্টা করেছিলেন, আর আমরা কি করছি?

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শনের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল একমুখী, সার্বজনীন ও অবৈতনিক। ১৯৭১-১৯৭৫ সালে শিক্ষা নিয়ে এই স্বপ্নের কথা তিনি বহুবার বলেছেন। বাস্তবায়নও শুরু করেছিলেন কিন্তু ১৫ আগস্টের পর সেই প্রক্রিয়া মাঝপথে থমকে যায়। আপাত দৃষ্টিতে বলা যায় খুব সরল এই নীতি। একমুখী, সার্বজনীন, ও অবৈতনিক ধারার কিছুটা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া একসময় চলমান থাকলেও এখন একদমই নেই। গত ৩ নভেম্বর ইউনিসেফের এক বাৎসরিক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে— দেশে সব ধরনের শিক্ষায় শতকরা ৭১ ভাগ ব্যয় বহন করছে শিক্ষার্থীর পরিবার। ইউনিসেফ আরও বলছে বিশ্বশিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বহুমাত্রিক বৈষম্য রয়েছে বাংলাদেশে। বলা হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এই বৈষম্য আকাশচুম্বী। এমপিও ক্ষেত্রে অসম বণ্টন, অব্যবস্থাপনা মিলিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলায় এগিয়ে বাংলাদেশ। শিক্ষা এদেশে একমুখীর বদলে বহুমুখী। নেই সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। সবার জন্য শিক্ষার প্রশ্নটা এখন বিতর্কিত। সবাই সমতাভিত্তিক সুযোগ পায় না। সুযোগের অসম বণ্টন ব্যবস্থা বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার অন্যতম মৌলিক বৈশিষ্ট্য। ইউনির্ভাসিটি গ্রান্ড কমিশনের বরাত দিয়ে প্রথম আলো দেশে শিক্ষার্থীপ্রতি খরচের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে সেখানে দেখানো হয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জনপ্রতি খরচের সর্বশেষ তথ্য।

দেখানো হয় জনপ্রতি সবচেয়ে বেশি অর্থব্যয় করে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনির্ভাসিটি’— যেখানে ছাত্রপ্রতি ব্যয় ৭,৫২,৬৯৭ টাকা, দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সেখানে ছাত্রপ্রতি ব্যয় ৩,৯৪,৬৬৩ টাকা, তৃতীয় অবস্থানে আছে এককালের প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্বদ্যালয় যেখানে ছাত্রপ্রতি ব্যয় ২,১২,০০০ টাকা, ৪র্থ অবস্থানে আছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সেখানে তাদের ব্যয় ১,৯২,৭৫৪ টাকা, পঞ্চম স্থানে থাকা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ব্যয় করে ৩৫,৩,৯৪ টাকা। এই পরিসংখ্যান পড়ে আপনি অবাক না হলেও এর পরের তথ্যে আপনি অবাক না হয়ে পারবেন না আর সেই অবাক করা তথ্যটি হলো— উচ্চ শিক্ষায় অবদান রাখে এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শিক্ষার্থী তুলনায় দেশের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মাথাপিছু খরচ হলো এক হাজার একশো একান্ন টাকা, যা কিনা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১৭৮৬ টাকা থেকেও কম। এই যে জনগণের টাকা রাষ্ট্রযন্ত্র ইচ্ছামাফিক খরচ করে শিক্ষাক্ষেত্রে পাহাড়সম বৈষম্য তৈরি করে এর কি আদৌ কোনো উদ্দেশ্য আছে নাকি পরিকল্পনাহীন স্বেচ্ছাচারিতার দৃষ্টান্ন। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশে প্রণীত সব শিক্ষানীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল বৈষম্যহীন সর্বজনীন কিন্তু হয়েছে উল্টো। রমরমা বাণিজ্যের উর্বর বেসাতি চলে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

আপনি দেখাবেন মাছ, খাওয়াবেন ডাল, এমন প্রবণতা পরিকল্পনায় যতদিন থাকবে ততদিন এই বৈষম্য টিকে থাকবে বাংলাদেশে। সামগ্রিকভাবে শিক্ষাব্যবস্থাপনার নামে নতুন প্রকল্প অনুমোদন, লুটপাট, আর বায়তুলমাল তসরুফের মহোৎসব চলে। অবৈতনিক প্রশ্নে রয়েছে নানা মত। নারী শিক্ষা প্রসারে এই তত্ত্ব নারীদের জন্য অনুকূল থাকলেও পুরুষ শিক্ষার্থীর জন্য হলো শাপেবর। সংক্ষেপে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বয়স ৫০ পেরিয়ে গেলেও সেই স্বপ্ন থেকে ক্ষমতাসীনরা আছে কয়েক আলোকবর্ষ দূরে।

বঙ্গবন্ধু শিক্ষাকে সবসময় রাজনীতিমুক্ত করার কথা ভাবতেন। ১৯৭২ সালের ২৫ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু বলেন, দেশে যাতে অশিক্ষা দূর হয় সাধারণ মানুষ যাতে শিক্ষা পেতে পারে এবং সাধারণ মানুষের জন্য শিক্ষায় সুযোগ-সুবিধা হয় সেদিকে নজর দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। শিক্ষা গণমুখী হওয়া প্রয়োজন। সেটাই আমি বিশ্বাস করি। গণমুখী শিক্ষা করতে গেলে প্লান প্রোগ্রাম অনুযায়ী হওয়া প্রয়োজন। এজন্যই কমিশন করা হয়েছে। আপনারা কমিশনের মধ্যে দেখতে পাইতেছেন যে এখানে কোনো দলমত নেই। যারা উপযুক্ত তাদের আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর নিযুক্ত করিতেছি। কে আমার বন্ধু, কে আমার ভাই, যার সম্পর্কে কোনো কোয়েশ্চন নাই তাদেরকে আমরা যোগ্যস্থানে বসাবার চেষ্টা করিতেছি, যাতে তারা পরিবর্তন আনতে পারেন। সব জায়গাতেই রাজনীতি আছে, অন্তত শিক্ষার মধ্যে আমি রাজনীতি আনতে চাই না। এই সেক্টরে রাজনীতি না হওয়া বাঞ্ছনীয়’।

কুদরত এ খোদা শিক্ষা কমিশনেও এ কথা ছিল। তিনি শিক্ষাঙ্গনকে রাজনীতি মুক্ত করার পক্ষপাতি ছিলেন। আমরা আছি যুক্ত রাখার পক্ষে। প্রায় ২০০০ বছর আগে গ্রীক দার্শনিকরা রাজনীতি ধর্ম ও শিক্ষাকে আলাদা করার জোর দাবি করেছিলেন এজন্য যে এই তিনটি বিষয় একসঙ্গে থাকলে কোনোটাই ভালো না থাকার সম্ভাবনা থেকে যায়। এই তিনটি স্বতন্ত্র বিষয়কে আলাদা রাখাটার চেষ্টাই করেছিলেন বঙ্গবন্ধু, যেখানে তার রাজনৈতিক দূরদর্শীতার পরিচয় পাওয়া যায়। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক বিবেচনায় যেভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অদক্ষ, অযোগ্য, ভূইফোঁড় আর জাল শিক্ষকদের তুলে এনে জাতিকে টেনে তোলার স্বপ্ন দেখেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকেরা, তাতে জাতির মেরুদণ্ড অনেকটাই ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এটা ভাবার বিষয় যে এমনটা চলতে থাকলে এ জাতির গন্তব্য আগামীতে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।

স্থানীয় রাজনীতিতে যে যেখানে সঠিক মাত্রায় প্রয়োজন অনুপাতে তৈল মর্দন করতে পেরেছেন তিনি সেখানেই টিকে গেছেন মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে। যাদের নিজেদের গড়ে তোলার দায়িত্বটা প্রশ্নবিদ্ধ তারা কীভাবে জাতিকে গড়ে তুলবেন সেটা ভাবার অবকাশ রাখে বৈকি। দেশ, জাতি গড়ার অযোগ্য কারিগরদের দিয়ে এই প্রবণতার কারণে দেশের সেটাই হয়েছে— ছাগল দিয়ে হালচাষ করলে গৃহস্থোর যেটা হয়। এ প্রসঙ্গে হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর একটা কথা বেশ প্রণিধানযোগ্য। বড় আক্ষেপের সুরে তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি সময়মত তৈল মর্দন করতে জানলে আপনার যোগ্যতা না থাকলেও আপনি প্রফেসর হইতে পারবেন’। বিগত ২ দশকে শিক্ষাকে রাজনীতিকরণ করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক বিরাট অংশে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকরা এমন প্রফেসর বানাইছেন হাজারে হাজার। বঙ্গবন্ধু যা নিজে চাননি তার অনুসারীরা সেটা কীভাবে চায় সেটা বোধগম্য নয়। কীভাবে তারা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনকে খাটো করার ধৃষ্টতা দেখায়। রাজনৈতিক বিবেচনায় এমন শিক্ষকদের নিয়োগের ফলে শিক্ষাখাতে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। সীমাহীন রাজনীতিকরণ ও দলীয়করণের প্রভাবের দরুণ মেধাবীরা আগ্রহ হারিয়েছে এই পেশার প্রতি। ক্রমান্বয়ে সেটা দখল করেছে একশ্রেণির চাটুকর, পদলেহী, ভূইফোঁড় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা।

শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেতা-কর্মীদের নিয়োগ দিয়েই সরকার বসে থাকেনি, পরিচালনা পরিষদেও রেখেছেন অপেক্ষাকৃত অশিক্ষিত দলীয় অনুগতদের। ফলে স্থানীয় শিক্ষা প্রশাসনে শিক্ষায় পরিবর্তনের বদলে তারা নিজেরাই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। পরিচালনা পরিষদের সভাপতির যোগ্যতা নিয়ে সরকার সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ করে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। উল্টো আগের সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছে। সব মিলিয়ে স্থানীয় চেয়াম্যান, মেম্বার, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা ঢুকে গেছে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। সভাপতির যোগ্যতা শিথিল করার প্রত্যক্ষ মানে হলো স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতাসীনদের রাজনীতি ও মাতবরীকে প্রতিষ্ঠা করা।

শিক্ষাব্যবস্থার কোথাও বঙ্গবন্ধু রাজনীতি চাননি। আজ বঙ্গবন্ধুর শিক্ষানীতির মূল বক্তব্যের কোনোটাই বাস্তবায়িত হয়নি, উল্টো সকলক্ষেত্রে উপেক্ষা করা হয়েছে। এটা আওয়ামী লীগের আদর্শের রাজনীতির স্ববিরোধীতা নাকি চরম রাজনৈতিক মূর্খতার বহিঃপ্রকাশ সে বিচার সময়ই করবে।

২০২৩ সালের নতুন কারিকুলামের শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাবেও নেই এর ছিটেফোঁটা। সেটা কি আদৌ হবে, নাকি জাতির পিতার অকাল প্রয়াণের সঙ্গে সঙ্গে আমরাও সরে আসব তার আদর্শ থেকে। লেখক পাঠক হিসেবে আমাদের বাড়বে শুধু অপেক্ষা।

লেখক: গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও শিক্ষা গবেষক, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার—সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বাংলামোটর, ঢাকা।

আরএ/

Header Ad
Header Ad

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল নেমেছে। আজ বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে, সন্ধ্যা ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জড়ো হয়। তারা স্লোগান দিতে দিতে জাদুঘরের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভাঙচুর শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ জাদুঘরের বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত করে।

নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার ঘোষণার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল ভাষণের বিরোধিতা করে এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

বিক্ষোভের আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'লং মার্চ টু ধানমন্ডি-৩২' নামে একটি কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়, যেখানে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়। তবে, বুলডোজার ছাড়াই তারা নিজ হাতে ভাঙচুর চালায়।

এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও বিক্ষোভকারীদের থামাতে ব্যর্থ হয়। বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে পরিচিত, যেখানে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হওয়ার আগে বসবাস করতেন।

Header Ad
Header Ad

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কী করলাম বা করলাম না- ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটি দিয়ে আমাদের বিচার করবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও বলেন, "এটি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। আমি জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের দুই চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই দুটি প্রতিবেদন দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আপনি দরিদ্র, মধ্যবিত্ত বা ধনী যেই হোন না কেন, এই সংস্কারের প্রভাব থেকে কেউই বাদ যাবেন না।"

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নাগরিকরা তাদের প্রকৃত অধিকার ফিরে পাবেন। আমরা যেন সত্যিকারের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা পাই, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।"

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, "যাতে সবাই মনে করতে পারে, এখানে প্রকৃত সত্য বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। আমাদের তো পণ্ডিত হতে হবে না এটি বোঝার জন্য, কারণ প্রতিদিনই আমরা নানা অবিচারের শিকার হই।"

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "সংস্কার কমিশনের কাজ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্বের দরবারে এটি তুলে ধরতে হলে এর ইংরেজি অনুবাদ করা প্রয়োজন।"

কমিশনের সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সংমিশ্রণে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দলিল হয়ে থাকবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা কী করলাম বা করলাম না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সেই কাজের জন্যই বিচার করবে। তারা প্রশ্ন করতে পারে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, তাহলে বাস্তবায়ন করেননি কেন? কারণ, সবকিছু তো বইয়ের পাতায় লেখা আছে। এই কাজ জাতির জন্য এক মূল্যবান স্মারক হয়ে থাকবে।"

Header Ad
Header Ad

হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান

সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে দেশের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিএনপি নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষকে গুম ও খুন করে স্বৈরাচার ভারতে পালিয়ে গেছে। যে কোন মূল্যে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের বিচার করতে হবে। এই প্রশ্ন গণতান্ত্রিক সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে 'আমরা বিএনপি পরিবারের উদ্যোগে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় জুলাই আগস্ট বিপ্লবে নিহত ৪৫ শহীদ পরিবারকে আর্থিক অনুদান এবং ‌র‌্যাবের গুলিতে নিহত যুবদল নেতা মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে ঘর উপহার উপলক্ষ্যে সোনাগাজী সরকারি ছাবের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের কথা বলে যে সময়ক্ষেপণ করছে এবং সংস্কার কাজ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করছে, তা কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি-না সে ব্যাপরে সবাই সজাগ থাকতে হবে।

এ সময় তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার বিগত ১৭ বছর মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল । সে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে লড়াই করে বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ, বিগত ১৭ বছরের লড়াই এবং ২৪এর জুলাই আগস্টের বিপ্লবের চেতনায় আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানে সবাইকে সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। এখন দেশে যে সংস্কারের আলোচনা চলছে সেই সংস্কার প্রস্তাব বিগত আড়াই বছর পূ্র্বে আমরাই দিয়েছিলাম। স্বৈরাচার আমাদের সংস্কার প্রস্তাব আমলে নেয়নি। আর সেই বিশ্বাস থেকেই আমরা জাতির সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছি। কারণ বিএনপি দেশ ও জনগণ নিয়ে ভাবে। দেশের কল্যাণে কাজ করতে চায়।

দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে এবং শহীদদের স্বপ্নের দেশ বিনির্মাণ হবে।

বিএনপি দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে প্রস্তুত উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সব সময়ই দেশ ও জনগণের কল্যাণ নিয়ে ভাবে। এর বড় কারণ হলো- দেশের জনগণ বিএনপির উপর আস্থা রাখতে চায়। কীভাবে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে আসবে নেতাকর্মীদের সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

আমরা বিএনপি পরিবার কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও ফেনী পৌর বিএনপি'র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া ও আমরা বিএনপি পরিবার কেন্দ্রীয় কমটির সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুনের যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভেকেট রুহুল কবির রেজভী, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক,জয়নাল আবেদীন ভিপি জয়নাল, যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ হারুন, সহ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, নির্বাহী কমিটির সদস্য বেলাল আহমেদ, অ্যাডভোকেট শাহানা আক্তার শানু, আবদুল লতিফ জনি, জালাল আহমদ মজুমদার, মামুনুর রশিদ মামুন, মশিউর রহমান বিপ্লব, ফেনী জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান, জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার, যুগ্ম আহবায়ক গাজী হাবিব উল্লাহ মানিক, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জামাল উদ্দিন সেন্টু, সদস্য সচিব সৈয়দ আলম ভূঞা, শহীদ ছাত্রদল নেতা কাওছার উদ্দিনের পিতা ফিরোজ আলম, শহীদ মেহাম্মদ মাসুদের কন্যা মুনতাহা বিনতে মাসুদ ও শহীদ জাফর আহমদের কন্যা জাহানারা বেগম প্রমুখ।

এসময় ২০১৬ সালের ২৫ জুন র‌্যাবের গুলিতে নিহত মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে ঘর এবং ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে নিহত ৪৫ শহীদ পরিবারসহ আহতদের প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাঝে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা
আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা
হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান
মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা
খুব দ্রুতই জবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে: ছাত্রদল সভাপতি
বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ
চুয়াডাঙ্গায় সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার
আজ বন্ধুর সাথে গোসল করার দিন
২ আলাদা বিভাগসহ দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস
হাসিনার লাইভ প্রচারের আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ উধাও
হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা
বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর
গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবজিবাহী পিকআপ খাদে, চালকসহ নিহত ৩
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনগনের মতামত চাইলো হাসনাত  
এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব  
পটুয়াখালীতে বাংলাভিশনের সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম