মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

অন্ধকারের সিন্ধুতীরে একলাটি ঐ মেয়ে...

‘অন্ধকারের সিন্ধুতীরে একলাটি ঐ মেয়ে/আলোর নৌকা ভাসিয়ে দিল আকাশপানে চেয়ে/মা যে তাহার স্বর্গে গেছে এই কথা সে জানে/ঐ প্রদীপের খেয়া বেয়ে আসবে ঘরের পানে।’

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আকাশ প্রদীপ’ কবিতার ’একলাটি ঐ মেয়ে’ যেন বাংলার মানুষের আশ্রয়স্থল বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে নিমজ্জিত দেশকে অন্ধ গহ্বর থেকে সঠিক পথে ফেরাতে আকাশপানে ‘আলোর নৌকা’ ভাসাতেই ‘শূন্য’ হস্তে ফিরেছিলেন জন্মভূমিতে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা জাতির তমসাচ্ছন্ন সময়ে এসে জাতির পিতার স্বপ্নের সারথি হয়ে আলোর আকাশবীণা ছুঁড়ে দিয়েছেন। বিজয়ের নৌকা ভাসিয়ে বিশ্ববাসীর বুকে বাংলাদেশকে করে তুলেছেন চির জাগরুক। বাংলাদেশ আজ সমৃদ্ধির সোপানে চির উন্নত মম শির হয়ে রয়েছে।

কখনো সরকার প্রধান, কখনো বিরোধীদলীয় নেতা, আবার কোনো সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে জনগণের অধিকারের প্রশ্নে সর্বদা উচ্চকণ্ঠ থেকেছেন। সঙ্কটময় মুহূর্ত ধৈর্য্য আর কঠোর হাতে মোকাবিলা করে নিজেকে গড়েছেন ইষ্পাত কঠিন ও দৃঢ় সাহসিক এক ব্যক্তিত্বে। বর্তমানে বাংলাদেশে একজন শেখ হাসিনার বিকল্প কেবল শেখ হাসিনা-ই। তার রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই-ধৈর্য, লড়াই, সংগ্রাম অতঃপর সাফল্যের নাম শেখ হাসিনা।

১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর দেশে ফিরে দ্বিধা-বিভক্ত আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। জনগণ তাকে পেয়ে দিশা পান। তবে থেমে নেই স্বৈরাচারী সরকারের বাধা-উসকানি!

এমন অনিশ্চিত পরিবেশের মাঝেই জণগনের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশে ফেরে তিনি শুরু করেন আন্দোলন। একইসঙ্গে চলে দলকে সংগঠিত করার কাজ। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া--সব অঞ্চলে ঘুরেছেন। নেতা-কর্মী তো বটেই সাধারণ মানুষও তাকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ও নতুন স্বপ্নের জাল বোনে। এর মাঝে শেখ হাসিনার পথ কণ্টকাকীর্ণ করতে যা যা করার সবই করেছে বিরোধীরা। তবে এসব কিছুই তাকে তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি।

জন্মের পর থেকে মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব-এর সান্নিধ্যে থেকে ইস্পাত-কঠিন মনোবল আর মানবিক গুণ নিয়ে শৈশব থেকেই নিজেকে গড়ে তুলেছেন। তিনি যেমন রাজনীতি সচেতন, তেমনই মানবিক। মুক্তিযুদ্ধের সময় এক অজানা আতঙ্কে কেটেছে তার ও পরিবারের অন্য সদস্যদের। একরকম বন্দিদশায় কেটেছে ৩২ নম্বরের বাড়িতে।

ছোটবোন শেখ রেহানাকে নিয়ে বিদেশে স্বামী বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী এম ওয়াজেদ মিয়ার কর্মস্থলে থাকা অবস্থায় পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট এক নির্মম হত্যাকাণ্ডে মাতা-পিতাসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের হারান। কিন্তু শতকণ্টাকাকীর্ণ পথ মাড়িয়ে সেই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করেন তিনি।

সেই থেকে নিজেকে সমর্পন করেছেন দেশের কল্যাণে, মানুষের তরে। জাতি যখনই কোনো দুর্যোগে পতিত হয়েছে শেখ হাসিনা আশার প্রদীপ নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন। হাল ধরে পৌঁছে দিয়েছেন নিরাপদ কোনো গন্তব্যে! সংগ্রাম এখনো অব্যাহত।

আশির দশকে স্বদেশের মাটিতে পা রাখার পর স্বাধীনতাবিরোধী তথা স্বৈরাচারী সরকারের আচরণ এমন অবস্থায় পৌঁছেছিল যে, বাবা-মায়ের স্নেহে যে বাড়িতে তার সময় কেটেছে, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের সেই বাড়িতেও প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি পিতা-মাতা-ভাই হত্যার বিচারও চাইতে পারেননি তিনি। এমনই স্রোতের বিপরীতে নৌকা বেয়ে সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করেই এগিয়ে চলছেন।

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই, মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার সংগ্রামে বন্ধুর পথ অতিক্রম করতে গিয়ে বারবারই প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। জেলে যেতে হয়। এমনকি নেমে মৃত্যুর ঝুঁকি। তবুও দমে যাননি তিনি।

পিতার অসম্পূর্ণ স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কমপক্ষে ২১ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের হীন অপচেষ্টায় ভীত না হয়ে বরং নতুন শক্তিতে, সাহসে বলিয়ান হয়ে প্রাণের মায়া বিসর্জন করে তিনি কাজ করে চলছেন নির্ভারচিত্তে।

১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয় আওয়ামী লীগ। জাতির পিতার ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে একধাপ এগিয়ে যান তিনি। শুরু হয় দেশ ও জনগণের কল্যাণে এবং উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ। পাঁচ বছর সুষ্ঠুভাবে রাষ্ট্র শাসন করলেও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ২০০১ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে পারেনি।

মানুষের কল্যাণ প্রশ্নে বিরোধী দলের নেতা হিসেবেও তিনি আপোষহীন। মানুষকে সচেতন করে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন-সংগ্রাম করলে তৎকালীন বিএনপি-জামাত সরকার দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর দমন-পীড়ন চালায়। নির্যাতন নেমে আসে দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের।

পত্রিকার খবর অনুযায়ী, গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার ওই সংগ্রামে দলের প্রায় ২০ হাজার নেতা-কর্মীকে হারাতে হয়। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকেও হত্যা করতে ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। দেশজুড়ে চালানো হয় সিরিজ বোমা হামলা। সরকারি মদদে এ ধরনের হামলার ঘটনা বিশ্বইতিহাসে বিরল।

তবে ভাগ্যের জোরে বেঁচে যান বাঙালির একমাত্র আশ্রয়-ভরসাস্থল জননেত্রী শেখ হাসিনা। ওই হামলায় তার শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর আগে চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানের জনসভা ও ঈশ্বরদী স্টেশনে রেলেও তাকে হত্যাচেষ্টায় হামলা-গুলি চালানো হয়।

প্রাণের মায়া ত্যাগ করে শেখ হাসিনা ফের দুঃশাসন ও জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষার আন্দোলন শুরু করেন। বিএনপি-জামাত জোটও ক্ষমতায় টিকে থাকতে দমন-পীড়নের নীতি অব্যাহত রাখে। ছক তৈরি করে নতুন চক্রান্তের। নানা টালবাহানা শেষে এক পর্যায়ে নিজেদের পছন্দের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের (বর্তমানে বিলুপ্ত) হাতে বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতা হস্তান্তর করে।

পাতানো নির্বাচন বুঝতে পেরে রুখে দাঁড়ান শেখ হাসিনা। চারদলীয় জোটের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি সোচ্চার হয়ে ওঠেন। এর মাঝে খালেদা-তারেকচক্র শুরু নির্বাচনী ফাঁদ, নতুন ষড়যন্ত্র। কিন্তু দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতা শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে এই নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান। মানুষ তার ডাকে সাড়া দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়নি।

বিএনপি-জামাত জোটের ষড়যন্ত্রের ফলে দেশে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মাঝে জারি করা হয় জরুরি অবস্থা। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর সমর্থনে ফের তত্ত্বাবধায়ক সরকার (তৎকালীন) গঠন করা হয়। ‘ওয়ান-ইলেভেনের সরকার’ হিসেবে পরিচিত সেনা সমর্থিত সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য হাজির করা হয় ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’র নীলনকশা।

সেই নীলনকশা বাস্তবায়নে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই তৎকালীন সরকার 'কথিত' দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনার প্রায় এক বছর তাকে জেলে থাকতে হয়। নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা সেনাসমর্থিত সরকারের কাছ থেকে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি আদায় করেন। তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে শেখ হাসিনা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেন। শুরু হয় শেখ হাসিনার নতুন সংগ্রাম, দিন বদলের অভিযাত্রা। সঠিক পথে হাঁটতে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বাঙলার স্বাধীনতা এসেছে। আর তারই কন্যার হাত ধরে আসছে একটার পর একটা সাফল্য। শেখ হাসিনা প্রণয়ন করেন ‘ভিশন-২০২১ তথা ডিজিটাল বাংলাদেশে’র রূপরেখা। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এখন বাস্তব। দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার বাংলাদেশ বিশ্ব উন্নয়নের রোল মডেল।

শুধু তাই নয়, তার দূরদর্শী চিন্তা-পরিকল্পনায় এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু টানেল, মাতারবাড়ী প্রকল্প, ঘরে ঘরে বিদ্যৎ পৌঁছে দেয়া, দারিদ্র্যের হার নিচে নামিয়ে আনা, কৃষি বিপ্লব, শিক্ষার হার বাড়ানো, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সমাপ্ত, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করা, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন, গৃহহীনদের ঘর উপহার প্রদানসহ প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন বাস্তব। অথচ এই সেতু বাস্তবায়ন নিয়ে কত বিশেষজ্ঞের কত কথা! কিন্তু দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সিদ্ধান্তে অবিচল ছিলেন শেখ হাসিনা। নিজের অর্থায়নে বাস্তবায়ন হয়েছে পদ্মা সেতুর। চলতি বছরের ২৫ জুন সেতুর উদ্বোধন হয়। এর কারণে পুরো বদলে গেছে দক্ষিণ-পশ্চিমবঙ্গের চিত্র। মানুষের যাত্রা ভোগান্তির সঙ্গে বেঁচে গেছে অনেক কর্মঘণ্টা। প্রসার ঘটছে পর্যটন শিল্পের। লাভ হয়েছে কৃষির। উন্নয়নের ছোঁয়ায় পরিবর্তন হয়েছে মানুষের জীবনমানের।

এসব কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করতে গিয়েও শেখ হাসিনার সরকারকে নানা বাঁধা বিপত্তি ও গুজবের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সবখানে ছড়ানো হয় গুজব। মিথ্যা তথ্য দিয়ে গুজব ছড়িয়ে হত্যাকাণ্ডও ঘটেছে। তবে শক্ত হাতে তিনি এসব হীন অপচেষ্টা মোকাবেলা করেছেন, করে চলেছেন প্রতিনিয়ত।

শেখ হাসিনা সরকারের কল্যাণমুখী পদক্ষেপের ফলে দেশে দারিদ্র্যের হার কমেছে। ২০০৫ সালে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪০ শতাংশ। এখন তা নেমে এসেছে ২০ শতাংশের নিচে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার মাঝেও দেশের আর্থ-সামাজিক খাতে প্রভাব সেভাবে পড়েনি। দেশকে সেক্টরভিত্তিক এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি শেখ হাসিনা পিতা মুজিবের হাতে গড়া দল বাঙালির আবেগের জায়গা আওয়ামী লীগকেও শক্তিশালী ভিত্তির উপরে দাঁড় করিয়েছেন। বর্তমানে দলটি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী।

নিজের যোগ্যতায় দলে সম্মোহনী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন মানবতার নেত্রী মাদার অব হিউম্যানিটি শেখ হাসিনা। দলীয় কাউন্সিলরা তাঁকে ৯ বার সভাপতি নির্বাচিত করেছেন। টানা ৪০ বছর দলের সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন চারবার। এই সময়ে বাংলাদেশ তো বটেই দলে নেতৃত্বের দিক থেকে বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী নেতাদেরও ছাড়িয়ে গেছেন এই নেতা। বিশ্বনেতৃত্বে এক অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন তিনি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘সোনার বাঙলা’ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই সোনার গড়তে লড়াই-সংগ্রাম করে চলেছেন তারই কন্যা। আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে-এরও রূপরেখা (ভিশন ২০৪১) প্রণয়ন করে তিনি তা বাস্তবায়েনে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই একটা কথা বলেন, ‘আগামীতে বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে-আমি সেই পরিকল্পনা করে দিয়ে যাচ্ছি। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।’

পিতা-মাতাহীন দেশে ফিরে শেখ হাসিনা পাশে পেয়েছিলেন এদেশের আপামর জনসাধারণকে। পিতা মুজিব যে জনগণকে প্রাণ উজার করে ভালোবাসতেন সেই জনগণের মাঝে তিনিও খুঁজে পেয়েছেন হারানো মা-বাবার স্নেহ, হারানো ভাইয়ের মমতা।

দেশরত্নের ভাষ্য, ‘এ দেশের মানুষের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে আমি প্রস্তুত।’ আমাদেরও উচিত মানবদরদী, সদা সংগ্রামী বাঙালির পরম আপনজন একজন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা।

লেখক: সাংবাদিক ও জনসংযোগবিদ। ই-মেইল: mahabbuba@gmail.com

 

Header Ad
Header Ad

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

নকশাবহির্ভূত রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সোমবার গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, এতে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কিছু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের অভ্যন্তরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত নকশায় না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ (রেস্টুরেন্ট) পরিচালনা করা হচ্ছে এবং ভবনের ছাদে অবৈধভাবে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালিত হচ্ছে, যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিধিবহির্ভূতভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করায় এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিক উপায়ে করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিএসসিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্পদ ও জানমালের ঝুঁকি এড়াতে নকশাবহির্ভূত সব রেস্তোরাঁ এবং ভবনের ছাদে স্থাপিত রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল ঘোষণা করা হলো। বাতিল করা লাইসেন্স দিয়ে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যেসব রেস্তোরাঁ সঠিক তথ্য না দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে ভবনের অনুমোদন কিন্তু বাতিল করা হয়নি। ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ থাকলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সশরীর উপস্থিত হয়ে আমাদের কাছে তথ্য-উপাত্ত দিলে সেগুলো সচল করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়টি জানায় ডিএসসিসি। ছবি: সংগৃহীত

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি রেস্তোরাঁকে আলাদা করে চিঠি পাঠাব।’

ডিএসসিসির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ডিএসসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম চলছে। ব্যবসাগুলো এক দিনে গড়ে ওঠেনি। রাজউকের পাস করা ভবনের নকশায় রেস্তোরাঁ নেই বললেই চলে। বিগত সরকারের সময় এই জটিলতা নিরসনে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। সেই টাস্কফোর্সের দুটি বৈঠক হয়েছিল। তারপর তো সরকার বদল হয়ে গেল।

ইমরান হাসান বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে এখন যদি ডিএসসিসি অভিযানে নামে, তাহলে নতুন করে হয়রানিতে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতি হলে আমাদের রেস্তোরাঁ বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রেস্তোরাঁর অনুমোদন ও অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি সামনে আসে। ওই ভবনে আটটি রেস্তোরাঁ ছিল, তবে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠার কোনো অনুমোদন ছিল না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চার বছর আগে দেশের রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে মোট হোটেল ও রেস্তোরাঁ ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৪টি, যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। সরকারি সংস্থার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮৫২টি। বাকি সব ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন।

রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চাইলে একজন বিনিয়োগকারীকে সরকারের সাতটি সংস্থার অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয়। রেস্তোরাঁর জন্য প্রথমে নিবন্ধন ও পরে লাইসেন্স নিতে হয় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তথ্য অনুযায়ী, সরকারের সব সংস্থার প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় রেস্তোরাঁ ব্যবসা করছে মাত্র ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১২৮টি রেস্তোরাঁ।

Header Ad
Header Ad

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জনরোষের মুখে পড়েছেন।” পুলিশকে জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো

নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ছবি: সংগৃহীত

বারবার নিলাম ডেকেও এস আলম গ্রুপের বন্ধকী সম্পত্তির কোনো ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছে না দেশের ব্যাংকগুলো। ফলে ঋণ আদায়ে এখন বাধ্য হয়ে অর্থ ঋণ আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে তারা। এতে পুরো প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত ও জটিল হয়ে পড়েছে।

চট্টগ্রামভিত্তিক এই শিল্পগোষ্ঠী ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জনতা ব্যাংক ১০,৭০০ কোটি টাকার বিপরীতে ছয়বার নিলাম ডেকেও কোনো সাড়া পায়নি। একইভাবে ইসলামী ব্যাংকও সাত দফা নিলাম আয়োজন করেও ব্যর্থ হয়েছে, যার মধ্যে আইডিয়াল ফ্লাওয়ার মিলসের ১,১০০ কোটি টাকার ঋণ সংক্রান্ত নিলামও অন্তর্ভুক্ত।

সাম্প্রতিক সময়ে এস আলম গ্রুপের একাধিক স্টিল মিল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জমি নিলামে তোলা হলেও দরপত্র জমা পড়েনি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আইনি প্রক্রিয়া পূরণের জন্যই তারা এসব নিলাম ডাকছেন, যদিও আগ্রহী ক্রেতার দেখা মিলছে না। অনেকেই এই বিষয়টিকে ভয় পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, এস আলম গ্রুপ সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যার বড় একটি অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণ জব্দ করে।

বর্তমানে এস আলম গ্রুপের ওপর কেন্দ্রীয়ভাবে তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে ১৪ সদস্যের বিশেষ লিগ্যাল টিম। একই সঙ্গে তাদের জব্দকৃত শেয়ার বিক্রির জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
নিলামে তুলেও এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো
সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি
স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন প্রধান উপদেষ্টার, মাসিক খরচের বিষয়ে যা জানা গেল!
রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট করুন: জামায়াত আমির
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, সহকারী শিক্ষক ১২তম
এনসিপির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই: উমামা ফাতেমা
আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল: প্রধান উপদেষ্টা
আত্মসমর্পণ করলেন তারেক রহমানের খালাতো ভাই
চার শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ল বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট
রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল: ফখরুল
দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
ভারতের সামরিক আক্রমণ আসন্ন,পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি পাকিস্তানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত মার্ক কার্নি
নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য