‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগানে বঙ্গভবনে প্রবেশ করতে পারলেন না মাহী বি চৌধুরী
বিকল্পধারা বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি. চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান যোগ দিতে বঙ্গবভনে প্রবেশ করতে পারেনি বিকল্পধারা বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি. চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাত পৌনে ৯টার দিকে বঙ্গবভনের প্রধান ফটকে মাহি বি. চৌধুরীর গাড়ি দেখেই ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগানে তিরস্কার করতে থাকেন উৎসুক জনতা। এর আগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) গাড়ি দেখেও একই স্লোগান দেয় সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, এদিন বিকেল থেকে অন্তবর্তী সরকারের শপথ নিতে বঙ্গভবনে প্রবেশ করতে থাকেন উপদেষ্টারা। শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন আমন্ত্রিত অতিথিরাও। সর্বশেষ রাত ৮টা ২৮ মিনিটে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গাড়ি বহর বঙ্গভবনে প্রবেশ করে।
পরে তার গাড়ি বহর প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই বঙ্গভবনে প্রবেশের রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এর প্রায় পাঁচ মিনিট পরে ব্যক্তিগত গাড়িতে বঙ্গভবনের সামনে আসেন বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী। কিন্তু প্রবেশের রাস্তা বন্ধ থাকায় তিনি প্রবেশ করতে পারেননি। বরং গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। এ সময় সাধারণ মানুষ তার গাড়ি ঘিরে গাড়িতে থাপ্পর দিতে থাকে এবং ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকে। জনতার রোষের মুখে তিনি সামনে ও পেছনে যেতে পারছিলেন না। পরে সেনাবাহিনী তার গাড়ি আবার ভেতরে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু জনতার ভিড়ে তা সম্ভব হয়নি। পরে তিনি গাড়ি ঘুরিয়ে গুলিস্তানের দিকে চলে যান।
মাহী বি চৌধুরী সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির সাবেক নেতা বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে। একসময় মাহী বিএনপির এমপি ছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে এমপি হয়েছিলেন তিনি। এরপর দ্বাদশ নির্বাচনেও প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু মনোনয়ন বাতিল হয়।
এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রাত ৯টা ১৪ মিনিটে বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। এ সময় তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়াও শপথ বাক্য পাঠ করার সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাকি ১৬ সদস্যের মধ্যে ১৩ জন উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই একসঙ্গে শপথ বাক্য পাঠ করেন। এ অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে রাজনীতিক, শিক্ষাবিদ, কূটনীতিকসহ সরকারি ও সামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বঙ্গভবনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১৭ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা প্রবেশ করেন। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ দলের সহযোগী অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাকর্মী এবং পুলিশের হামলা ও গুলিতে শহিদ হওয়া শিক্ষার্থীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন সবাই।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টাগণ হচ্ছেন ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদিপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুকী আযম।
এর আগে এদিন দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের বিমান ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষণিক নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।