এই গণ-দুশমন সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না: গণফোরাম
'মহা দুর্নীতিবাজ বর্তমান অবৈধ সরকারের কর্ণকুহরে জনগণের আহাজারি পৌঁছায় না, কারণ তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। এই গণ-দুশমন সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না'। এমনই মন্তব্য করেছেন গণফোরামের একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা মোহসীন মন্টু।
শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে আরামবাগে গণফোরাম চত্বরের সামনে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিদ্যুৎ, গ্যাস, চাল, ডাল, তেল, আটা, লবন ও চিনিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকারের মতো বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন আমলে এতো লুটপাট কখনো হয়নি। সমগ্র জাতি এই সরকারকে নিয়ে এক মহাসংকটে আছে। সরকার অনির্বাচিত-অবৈধ এই সরকারের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগের কোন নৈতিক এখতিয়ার নেই তার পরও সে লুটপাট করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করছে। এমন কোন ব্যাংক নেই যেখানে ঋণখেলাপি নেই। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুটপাট করেছে, সাধারণ মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে ভয় পায়। সমস্ত রিজার্ভ লুটপাট করে ধ্বংস করে ফেলেছে।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের লুটপাট উদাহরণ স্বরূপ বিশ্ব কুখ্যাত লুটেরা আদানির সঙ্গে বিদ্যুতের নামে অসম চুক্তির মাধ্যমে জনগণের টাকা তছরুপ করছে। অবিলম্বে আদানির সঙ্গে সকল চুক্তি বাতিল করতে হবে। দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে,। এলিফ্যান্ট রোড, নিউ মার্কেট সহ সারাদেশের ব্যবসায়ীরা বলছে কোন ব্যবসা নেই, সারাদিন বসে থেকে যে বিদ্যুৎ খরচ হয় তার পয়সাই ইনকাম করা যায় না। তবুও এই মহা দুর্নীতিবাজ বর্তমান অবৈধ সরকারের কর্ণকুহরে জনগণের আহাজারি পৌঁছায়না, কারণ তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয় তাই এই গণ-দুশমন সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না।
গণফোরাম সভাপতি বলেন, আজকে দেশবাসীর কাছে আমাদের আহ্বান ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে কোন নিপীড়নের মধ্যে না রাখতে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক দেশ গড়তে সকল গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল সাথে নিয়ে গণবিরোধী স্বৈরাচার হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে আমরা বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশকে সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিকাশিত করতে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে এই আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলছে চলবে।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সর্দার চাখারী বলেন- এদেশের মানুষ দলীয় সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন চায় না। জনগণ আজ রাস্তায় নেমে এসেছে, কারণ দ্রব্যমূল্যের এতো ঊর্ধ্বগতি ঘরে বসে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। আপনাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন নইলে জনগণ দুর্নীতিবাজ সরকারের পতন ঘটাতে বাধ্য হবে।
গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, জনগণের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে যায় তখন জনগণ বাধ্য হয়ে রাজপথকেই বেছে নেয়। আমাদের ইতিহাস বলে জনগণ যখন রাজপথ বেছে নেয় তখন কোন কর্তৃত্বাবাদী সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে না। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘন্টা বেজে গেছে। জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে এই দুর্নীতিবাজ সরকারকে পদত্যাগ করতেই হবে।
এসময় বক্তব্য রাখেন গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম. জগলুল হায়দার আফ্রিক, সভাপতি পরিষদ সদস্য আবদুল হাসিব চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা খান সিদ্দিকুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান ফারুক, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী, তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধু, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক তাজুল ইসলাম, মহিলা সম্পাদক নিলুফার আহমেদ শাপলা, ছাত্র সম্পাদক মোঃ সানজিদ রহমান শুভ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিবুর রহমান বুলু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এম.এ কাদের মার্শাল, সাধারণ সম্পাদক এরশাদ জাহান সুমনসহ কেন্দ্রীয় ও মাহনগরের নেতৃবৃন্দ।
এমএইচ/এএস