মেজর রফিকের সমালোচনায় কর্নেল অলি
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, সম্প্রতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
তিনি বলেন, ‘জানি না কি কারণে পরিণত বয়সে এসে মেজর রফিক এই ধরনের বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। ১৯৮০ সালের পূর্বে তিনি মুক্তিযুদ্ধের উপর একটি বই লিখেছেন সেই বইতে এসব তথ্য নেই কেন? জাতি জানতে চায় কি কারণে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দ্বারা চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন? চাকরিচ্যুত হওয়ার পর ১৯৭৭/৭৮ সালে মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম প্রায় অসহায় জীবনযাপন করছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় আসার মতো টাকা তার কাছে ছিল না। ঐ সময় আমি তাকে চট্টগ্রামের কমিশনার জনাব আউয়ালের মাধ্যমে বিমানের টিকিট কেটে ঢাকায় আনি। এরপর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে অনুরোধ করে তাকে ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান বানাই। মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম ওই ধরনের ব্যক্তি যে স্বার্থের জন্য যেই প্লেটে খায় সেই প্লেটই ছিদ্র করে।’
বুধবাবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর পূর্বপান্থপথে এফডিসি সংলগ্ন এলডিপির কার্যালয়ের সামনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) কর্তৃক আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্নেল অলি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে আমরা তৎকালিন মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করি। এই রফিকুল ইসলামকে তখন চট্টগ্রামে পাওয়া যায়নি। পরে জেনেছি তিনি চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে সীমান্তবর্তী খাগড়াছড়ির রামগড় পোস্ট অফিসের দুই তলায় অবস্থান নেন। আমরা যুদ্ধ করেছি চট্টগ্রাম শহরে অথচ তিনি রামগড়ে পালিয়ে গেলেন কেন?
তিনি বলেন, পাঠ্যপুস্তক নিয়ে একটা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে যে ধরনের খেলা চলছে তা কখনোই কাম্য নয়। নতুন প্রজন্মকে ধ্বংসের জন্য যারা খেলায় মেতেছে জাতি তাদের ক্ষমা করবে না। শুধু তদন্ত করে লাভ নেই। এই সমস্ত পাপিদের ফাঁসি দেওয়া উচিত।
কর্নেল অলি বলেন, সরকারের স্বেচ্ছ্বাচারিতার কারণে দেশের অর্থনীতিতে ধস নেমেছে। যার অন্যতম কারণ দেশ থেকে প্রায় ৭ লাখ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতারা দেশ থেকে টাকা নিয়ে পালাচ্ছে। ঋণখোলাপির লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান ভ্যাট পরিশোধ করছে না। এই অবস্থা থেকে দেশকে বাঁচাতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন, নিপীড়ন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে ও বিরোধী দলের গ্রেপ্তারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোসহ ১০ দফা দাবিতে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার দেশব্যাপী বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় এলডিপি।
সভায় বক্তব্য দেন এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. নেয়ামূল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, এড. এসএম মোরশেদ, উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, উপাধ্যক্ষ মোছা. কারিমা খাতুন, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. আবুল হাসেম, প্রচার সম্পাদক অ্যাড. নিলু, ঢাকা মহানগর পশ্চিম এলডিপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাদাত হোসেন মানিক, উত্তর এলডিপির সাধারণ সম্পাদক অবাক হোসেন রনি, ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি মো. সোলায়মান, গণতান্ত্রিক যুবদলের সভাপতি আমান সোবহান, গণতান্ত্রিক শ্রমিক দলের সভাপতি মামুন, গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি খালিদ বিন জসিম, গণতান্ত্রিক আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাড. নূরে আলম, গণতান্ত্রিক ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদী হাসান মাহবুব, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচ/এমএমএ/