‘সংলাপের সিদ্ধান্ত নিলে ভেবে দেখবে বিরোধী দলগুলো’
সরকার ও শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে ১৪ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছে। বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি শেষে নতুন করে আবারও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আগামী ২৫ জানুয়ারি ঢাকাসহ সারাদেশে জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য শেষে এ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো ভোট হবে না, নির্বাচন হবে না। এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। ১৪ বছর ধরে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে আছে। কিন্তু ভোটের মুখোমুখি হওয়ার সাহস নেই। আমরা লক্ষ্য করছি তাদের মঞ্চ ভেঙে পড়ছে; অতিদ্রুত তাদের ক্ষমতার মসনদও ভেঙে পড়বে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে সাকি বলেন, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বলছেন অতি বাম অতি ডান এক হয়েছে সরকার হঠাতে; আমাদের কথা হচ্ছে ভোট চুরি করে প্রধানমন্ত্রী আপনি তো বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে এক কাতারে দাঁড় করিয়েছেন। তাই দেশের ১৮ কোটি মানুষ এই সরকারের পতন ঘটাতে এক কাতারে সমবেত হয়েছে। আমরা অবিলম্বে রাজপথেই যুগপৎভাবে ন্যূনতম এক দাবিতে আন্দোলন তৈরি করে এই সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধ্য করব।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকারের দাম যত কমছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য তত বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এই সরকার বিদায় নেবে কিন্তু তাদের ঋণের বোঝা জনগণের গলায় চাপিয়ে দেবে। তাই আমাদের এই সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যেবদ্ধ গণআন্দোলনের জোয়ার তৈরি করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এই সরকারের ভুল নীতি, আত্মঘাতী ও গণবিরোধী সিদ্ধান্তের কারণে পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ছে দাবি করে সাইফুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি বিদায় নেওয়ার আগে মেগা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। প্রধানমন্ত্রী আপনি বলেছেন যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদের তালিকা দেন, ব্যবস্থা নেবেন; কথা হচ্ছে আপনি কি চোখে দেখেন না? আপনার বিভিন্ন সংস্থার লোকজন কি চোখে দেখেন না?
সরকারকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা কর্মসূচির দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়ে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করতে চাচ্ছে। ক্ষমতা হারানোর আতঙ্কে ভীত হয়ে প্রতিদিন উসকানি দিচ্ছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, হামলা মামলা গ্রেপ্তার করে দমন করার পায়তারা করছে। দেশের বিরাজমান সংকট উত্তরণে সরকার কীভাবে পদত্যাগ করবে সিদ্ধান্ত নেন। সংলাপের সিদ্ধান্ত নিলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ভেবে দেখবে; কিন্তু ২০১৮ সালের মতো লোক দেখানো সংলাপে যাবে না কেউ।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, বাংলাদেশকে ভারতের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমরা ভারতের তাবেদারী মানব না। ক্ষমতা থেকে সরানোর শক্তি নাই বলে প্রধানমন্ত্রী আপনি অতি আস্ফালন করবেন না। জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না। নিরাপদে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন, অন্যথায় পূর্বে যাদের হয়েছে সেই করুণ পরিণতি আপনারও হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্যে দেন- গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হোসেন রুবেল, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, নাগরিক ঐক্যের স্থায়ী কমিটির সদস্য মোমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কাওসার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সহসভাপতি কে এম জাভেদ প্রমুখ। গণঅধিকার পরিষদের কাউকে বিক্ষোভ সমাবেশে দেখা যায়নি।
এসএন