যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণায় ১২ দলীয় জোটের আত্মপ্রকাশ
সরকারবিরোধী সমমনা ১২টি দলের সমন্বয়ে নতুন জোট আত্মপ্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জোট এ আত্মপ্রকাশ করে। ১২ দলীয় নতুন জোটের নাম ঘোষণা দেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা।
১২ দলীয় জোটের পক্ষে ৭ দফার ভিত্তিতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেছেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।
ইরান বলেছেন, ২০২৪ সালে অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন করার জন্য বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশে বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। একই সঙ্গে ১৯ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ২৭ দফা সংস্কার প্রস্তাব ও উন্নয়ন কর্মসূচিকে জাতীয় মুক্তির সনদ বিবেচনা করে একাত্মতা ঘোষণা করছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতন্ত্র, ভোটাধিকার এবং সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে বিএনপির সব আহ্বান এবং আন্দোলনে যুগপৎ অংশগ্রহণ করার অঙ্গীকার ঘোষণা করছি।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার বলেন, রাজনৈতিক ইতিহাসে জোটবদ্ধ আন্দোলনে গণতান্ত্রিক দল সময়ে সময়ে ঐক্যবদ্ধ হয়। পরবর্তীতে প্রয়োজন শেষে সেই জোট থাকে না। কিন্তু প্রতিটি রাজনৈতিক আন্দোলনে জোট অবিচ্ছেদ অংশ।
তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে আমাদের যে ঐক্য সমঝোতা তা অটুট থাকবে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যুগোপৎভাবে অংশ নিতে একটু ভিন্ন কৌশলে নতুন জোট গঠন করা হয়েছে। ২০ দলীয় জোট নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কিছু নেই আমরা যুগপৎ আন্দোলনে অগ্রসর হব।
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ২০ দলীয় জোট আনুষ্ঠানিকভাবে জোটভুক্ত হয়ে ছিলাম তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়নি। গত ৯ ডিসেম্বর বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে ওনারা আমাদের বলেছেন এখন থেকে ২০ দলীয় জোট ব্যবহার করবেন না। তবে আপনারা যৌথভাবে চলতে পারেন।
তিনি বলেন, এখন থেকে আমরা ২০ দলীয় জোট না, ১২ দলীয় জোট। তবে যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে আমরা থাকব। বিএনপির পূর্ব ঘোষিত ৩০ ডিসেম্বরের কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ১২ দলীয় জোট বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে গণমিছিল করবে। এ ছাড়া জানুয়ারি থেকে দেশের সব বিভাগের সফর শুরু করবে।
সংবাদ সম্মেলনে ১২ দলীয় জোটের দলগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি তাসমিয়া প্রধান, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি চেয়ারম্যান কারি মোহাম্মদ আবু তাহের, বাংলাদেশ এলডিপি পার্টির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, মুসলিম লীগের মহাসচিব শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব আব্দুল করিম, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড সৈয়দ নুরুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত ১২ দলীয় জোটের অধিকাংশই বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরীক রাজনৈতিক দল।
এসএন