আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সভা
জাতীয় নির্বাচন ও কাউন্সিলের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলকে চাঙ্গা করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলের নেতাকর্মীদের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাস দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে আবারও ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে।
পাশাপাশি আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল যথা সময়ে যেন হয় সেই নির্দেশনাও দিয়েছেন সভাপতি। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় কাউন্সিল করে দলকে চাঙ্গা করার নির্দেশ দিয়েছেন। এজন্য মার্চ থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভাপতিমণ্ডলীর এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী এই সভায় বেশ কিছু নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
সভাপতিমণ্ডলীর এই সভায় মার্চ থেকে পুরোদমে সারাদেশে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনগুলোতে যারা দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যারা বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তারা যেন আগামীতে দলের কোনো পদে আসতে না পারেন সে বিষয়ে সকল নেতাদের সতর্ক করেছেন।
এ ছাড়া আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ইশতেহার প্রণয়নের কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। সেখানে কোন কোন বিষয় গুরুত্ব পাবে তা ঠিক করে খসড়া ইশতেহার তৈরি করতে বলা হয়েছে।
বিগত সংসদ নির্বাচনের তুলনায় আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে পারে সেজন্য এখন থেকেই মাঠ গোছাতে বলা হয়েছে।
পরে নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে যে নাম চেয়েছে তারই আলোকে সভাপতিমণ্ডলীর সভায় তাৎক্ষনিকভাবে খামে ভরে যে যার নাম সভানেত্রীর কাছে জমা দিয়েছেন। সভানেত্রী সেখান থেকে চূড়ান্ত করবেন এবং পরে সার্চ কমিটির নিকট নাম পাঠাবেন।
সভাপতিমন্ডলীর সভায় উপস্থিত একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়। তবে তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
সভাপতিমন্ডলীর সভায় উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমন্ডলীর মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, লে. কর্ণেল (অব.) ফারুক খান, ড. আব্দুর রাজ্জাক, কাজী জাফর উল্লাহ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন প্রমুখ।
বৈঠক সূত্রে আরও জানা যায় তৃণমূলের সম্মেলনগুলোতে নেতা নির্বাচন করার ক্ষেত্রে দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যদের মূল্যায়ন করতে বলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
পাশাপাশি দলের মধ্যে যেন ‘আগাছা-পরগাছা’ ভর না করে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, যেসব ‘আগাছা-পরগাছা’ দলে ঢুকে গেছে, ঢুকে আছে, এগুলো উপড়ে ফেলতে হবে।
বৈঠকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে আওয়ামী লীগের জন্য ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে অভিহিত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেছেন, একটি অবাধ-সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি কেউ কোনো টুঁ শব্দ করতে পারেনি। এটিই আমাদের জন্য টার্নিং পয়েন্ট। এই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিজয়ে কাজ করা দলের সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদও জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ হারাতে পারবে না। এক্ষেত্রে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দলের প্রার্থী কারা হতে পারে তার একটি ধারণাও দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, শুধু দলের কাছে জনপ্রিয়তাই নয়, জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় নেতারাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
র্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেছেন, এটা ষড়যন্ত্রের অংশ। এসব নিয়ে চিন্তা না করে মানুষের জন্য কাজ করার নির্দেশনা দেন আওয়ামী সভাপতি।
এসএ/এমএমএ/