সপ্তম ধাপের ইউপি ভোটে নৌকার ভরাডুবি
শেষ হলো সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। বরাবরের মতো এই ধাপেও প্রতীক নৌকাকে চ্যালেঞ্জ করে বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। সপ্তম ধাপের ইউপি ভোটে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দেশের ১৩৪ ইউনিয়নে ভোট হয়। সেই ভোটে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী চেয়ারম্যান হয়েছেন মাত্র ৪০ জন। আর নৌকাকে চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী চেয়ারম্যান দ্বিগুণেরও বেশি। এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে বিজয়ী চেয়ারম্যান ৮৬ জন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির ৩ জন, জাতীয় পার্টি (জেপি) ১ জন। আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হয়েছেন ১১ জন। অন্যদিকে ৪ টি ইউপির ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশন থেকে দল অনুযায়ী বিজয়ী প্রার্থীদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেই তালিকা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা যায়।
দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ফলে মর্যাদার লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনগুলো। তবে সেই মর্যাদার লড়াইয়ে নিজের সঙ্গে নিজে লড়াই করছে স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় প্রতিটি ভোটের তফসিল ঘোষনা হওয়ার পর আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে। সেই বোর্ডের প্রধান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এবারও ৭ম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যাদের নৌকা প্রতীক বরাদ্দ করেছিল আওয়ামী লীগ সেই নৌকার প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিল অনেক ইউনিয়নে। সাধারণত নৌকা না পেয়ে আওয়ামী লীগের নেতারাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে থাকেন। তবে অন্য দলের প্রার্থীরাও ছিলেন। আওয়ামী লীগ থেকে বিদ্রোহী দমনে বার বার চাপ প্রয়োগ করা হলেও দমাতে পারছে না বিদ্রোহীদের। এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়জয়কার আওয়ামী লীগের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এর আগের ৬ষ্ঠ ধাপের নির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়জয়কার ছিল। প্রথম ধাপে আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী ছিল ১৪৮ জন আর স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী ৪৯ জন। দ্বিতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন ৪৮৬ জন আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে বিজয়ী ছিলেন ৩৩০ জন। তৃতীয় ধাপে নৌকার বিজয়ী ৫২৫ জন তার বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে বিজয়ী ছিলেন ৪৪৬ জন। চতুর্থ ধাপে নৌকাকে চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়ের পাল্লা প্রায় সমান সমান। সেই ধাপে নৌকার বিজয়ী প্রার্থী ছিল ৩৯৬ জন আর স্বতন্ত্র বিজয়ী প্রার্থী ছিল ৩৯০ জন। পঞ্চম ধাপে নৌকার চাইতে স্বতন্ত্ররা এগিয়ে ছিলেন। সেখানে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন ৩৪১ জন বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয় ৩৪৬ জন। ৬ষ্ঠ ধাপে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে বিজয়ী চেয়ারম্যান ছিল ৯৫ জন।
এবারের ইউনিয়ন পরিষদে দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ইউনিয়নে প্রার্থী ছিল না। তবে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে অনেক ইউনিয়নে বিএনপির নেতারা প্রার্থী হয়েছিলেন।
এসএম/এমএমএ/