বিদেশে লবিস্ট নিয়োগের প্রমাণ চায় বিএনপি
বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে বিএনপি অর্থ ব্যয় করছেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া অভিযোগের সুস্পষ্ট তদন্ত প্রমাণ ও ব্যাখা দাবি করেছে দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, 'বিএনপি লবিস্ট নিয়োগের সিদ্ধান্ত কখনও নেয়নি। লবিস্ট নিয়োগ করার প্রয়োজনও বোধ করেনি। লবিস্টগণ যেসব কথা বলবেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ তা নিজেরাই বলে থাকেন এবং তাও গোপনে না, প্রকাশ্যে। তাই বিএনপি যদি লবিস্ট নিয়োগ করে থাকে তাহলে সরকারকে প্রমাণ দিতে হবে নতুবা তথ্য গোপন করার অভিযোগে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।'
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) বিকালে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, 'হাজার হাজার গায়েবী মামলা দায়েরর মতো একই সরকারের দুই মন্ত্রী গায়েবী তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাতে গিয়ে কল্পিত লবিস্ট ফার্মের সংখ্যা এবং ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়ে ফেসে গেছেন এবং জনগণের করুনার পাত্র হয়েছেন।'
খন্দকার মোশাররফ বলেন, 'পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন-একটি জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানকে কিছু দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু তথ্য-প্রমাণ বলে সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন-বিএনপি ৮টি লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছে এবং একটি ফার্মকেই দিয়েছে ১০ লাখ অর্থাৎ ১ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে তথ্যমন্ত্রী বলেছেন-বিএনপি ১২টির বেশি লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।'
'যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের পক্ষে সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম লবিস্ট অ্যালক্যাডে এন্ড ফো কে নিয়োগ দেন ২০০৪ সালের ২৯ নভেম্বর, যা কার্যকর হয় ১ জানুয়ারি ২০০৫ থেকে। ২০০৫, ২০০৬ এবং ২০০৭ সালে এই লবিস্ট ফার্মকে চুক্তি স্বাক্ষরকারী হিসেবে মাসে ৩০ হাজার ডলার হিসাবে সাড়ে ১২ লাখ ডলার অর্থাৎ ১০ কোটি টাকার বেশি দিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ'-বলেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি আরো বলেন, নির্মম অত্যাচার, নির্যাতন, গুম, খুন, মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে এই জুলুমবাজ অবৈধ সরকার যে অপরাধ করেছে তা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য লবিস্ট নিয়োগের জন্য সেই নিপীড়িত দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকা ব্যয় করছে। অন্যদিকে যেসব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরকার ভয়ের সংস্কৃতি অনুশীলন করছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিএনপিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। দেশবাসী সঙ্গতভাবেই প্রশ্ন করতে পারেন যে বিদেশে প্রথম লবিস্ট নিয়োগকারী সজীব ওয়াজেদের, আওয়ামী লীগ ও সরকারের গোপন স্বাক্ষরিত লবিস্ট নিয়োগ সম্পর্কিত বিষয়গুলোর তদন্তও এসব সংস্থা করবে কি না?
খন্দকার মোশাররফ বলেন, 'জনগণের অর্থ ব্যয় করে সরকার ও সরকারি দল লবিস্ট নিয়োগের নামে কি পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে এবং তার উৎস কি এর স্বচ্ছ তদন্ত করে রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছি।'
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান প্রমুখ।
এমএইচ/এসআইএইচ