সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫ | ১৮ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দাম্ভিকতার বহিঃপ্রকাশ: মির্জা ফখরুল

নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশ্নে ‘বিএনপি কোনো ছাড় দেবে না’ বলে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘আমরা আর ছাড় দেব না, এদেশের মানুষের এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমার কথা বলছি না। চলেন না বের হই এক সঙ্গে। দ্যাট গো-আউট। টক টু দ্য পিপলস, ফারমার্স, রিকশাপুলার্স। নিরপেক্ষভাবে চলেন, আপনি ইনভেস্টিগেশন করেন-দেখেন মানুষ কী বলে।’

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে দাম্ভিকতার বহিঃপ্রকাশ

মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল আমাদের অনির্বাচিত স্বঘোষিত, প্রবল প্রতাপশালী, অহংকারী, দাম্ভিক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘নো প্রেসার উইল ওয়ার্ক অন মি। তার ওপর কোনো চাপই কাজ করবে না। এখানেই বোঝা যায় তার (প্রধানমন্ত্রীর উক্তিতে) এদেশের প্রতি, এই মানুষের প্রতি তার যে কোনো দায়িত্ব নেই, তার যে সন্মান নেই, তার যে কোনোরকমে জনগণের ভবিষ্যত নিয়ে এই রাষ্ট্রকে একটা সত্যিকার অর্থে কার্যকর রাষ্ট্র করার চিন্তা তার নেই।’

চাপ কেনো পড়ছে ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘এর কারণ হচ্ছে গত দুইটা নির্বাচন তারা করেছেন সম্পূর্ণভাবে একতরফাভাবে তাদেরকে ক্ষমতায় বসানো জন্য যত রকমের ভোট জালিয়াতি,যত রকমের কারচুপি, যত রকমের সন্ত্রাস, সেই সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে ভোটারদেরকে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া বাধা দিয়ে ভোট কেন্দ্রে শূন্য করে তারা ফলাফল ঘোষণা করে বেআইনভাবে ক্ষমতায় গেছেন।’

যখন আবার নির্বাচন আসছে তখন তারা দেখছেন যে, জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। সত্যিকার অর্থে যদি সুষ্ঠু ভোট হয় তাহলে তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এই কারণে তারা যেটা করছেন আগে থেকেই একটা অবস্থা তৈরি করছেন সেই অবস্থাটা হচ্ছে যে, আমাদের দেশের নির্বাচনের ব্যাপারে কেউ বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ করবে না, কেউ কথা বলবে না এবং নির্বাচনটা আমাদের মতোই করছি এবং বিদেশীরা যারাই যাচ্ছে তারাই বলছে যে, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই।

সরকার বলছে যে, না সব ঠিক আছে তো। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করবে, তারা ফ্রি যা-খুশি তাই করতে পারবে। এই যে গতকালও একজন বৃটিশ মন্ত্রী দেখা করতে গেলেন, এর আগেও একজন গেলেন তাদের উনি (প্রধানমন্ত্রী) একই কথা বলছেন।

সংলাপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সত্যের অপলাপ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে সংলাপের ফল কী? আমাদেরও প্রশ্ন ‘হোয়াট ওয়াজ দ্য রেজাল্ট’।

প্রধানমন্ত্রী সকলের সামনে মিটিংয়ে অঙ্গীকার করেছিলেন যে, নির্বাচনে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। পুলিশ আর গ্রেপ্তার করবে না, পুলিশ কোনো মামলা দেবে না, কাউকে গ্রেফতার করা হবে নির্বাচন পর্যন্ত।

তার বক্তব্যের তিনদিন পর থেকে সারাদেশে পুলিশি নির্যাতনে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের তারা সব পালিয়ে গেছে। ঘরে থাকতে পারেনি, রাস্তায়ও থাকতে পারেনি। আমি বিএনপির মহাসচিব আমি আমার এলাকায় প্রথম গিয়ে ঢুকেছি। আমি যে এলাকায় গেছি সেখানে আমার গাড়ির উপরে আক্রমণ হয়েছে, আমার কনভয়ের উপরে আক্রমণ হয়েছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে। নির্বাচনের ৭/৮ দিন আগ থেকে সেখানে নতুন নতুন প্লট তৈরি করা হয়েছে। তারা (ক্ষমতাসীনরা) যে নির্বাচনী অফিস তৈরি করেছিল সেগুলো তারা নিজেরাই আগুন লাগিয়ে দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। এটা শুধু আমার এলাকায় নয়, সারা দেশে সব জায়গায় করা হয়েছে। এসবের পরও আজকে যদি শেখ হাসিনা বলেন যে, হোয়াট ওয়াজ দ্য রেজাল্ট। রেজাল্ট তো ইউ নো হোয়াট হ্যাভ ইউ ডান।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারপরে কী করে উনি (প্রধানমন্ত্রী) আশা করেন, তিনি সরকারে থাকবেন আর দেশের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন করবে। একা বিএনপি তো নয়, আজকে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো কেন বলছে যে, এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। এমনকি সিপিবি পর্যন্ত বলেছে যে, নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। এই বিষয়গুলো ‍যখন তিনি বলেন, তথন তিনি চূড়ান্তভাবে সত্যের অপলাপ করেন। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেন, জনগনকে বিভ্রান্ত করেন এবং তিনি একটা প্রচণ্ড রকম দাম্ভিকতায় ভুগছেন যে, তিনি গণতন্ত্রের যে ব্যাসিক কথা সেই ব্যাসিক কথাগুলো থেকে উনি বাইরে চলে যাচ্ছেন। আমরা তো আগে বলেছি যে, তার সাথে সংলাপ করব। তিনি তো কথাই রাখেন না। আমরা ডায়ালগের কথা সেজন্য বলি নাই।

তিনি বলেন, যারা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে মধ্যে পুরিয়ে আটকিয়ে রাখে তাদের সঙ্গে আমরা কি সংলাপ করব।ওই মামলায় প্রত্যেককে ৭ দিনের মধ্যে জামিন দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়াকে এখন পর্যন্ত জামিন দেওয়া হয়নি।

সরকারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আমার কথা খুব পরিস্কার। এত যদি সাহস থাকে আপনাদের, এতই যদি উন্নয়ন করে থাকেন, এতই যদি জনগণের ভালোবাসা থাকে আপনি পদত্যাগ করেন এবং একটা কেয়ারটেকার গভমেন্টকে দায়িত্ব দেন-নির্বাচন হোক। যে আসবে আমরা মাথা পেতে নেব। এসব কথা (গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য) গুলো মানুষ এখন খায় না। নতুন কথা বলতে বলেন। যদি গণতন্ত্র দিতে চান সত্যিকার অর্থে, যদি সিনসিয়ার হন প্রথমে পদত্যাগ করেন, একটা কেয়ারটেকার গভমেন্ট দেন, তারপরে কেয়ারটেকার গভমেন্ট সব্ দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মতামতের ভিত্তিতে একটা নির্বাচন কমিশন করবে, সে নির্বাচন করবে।

কেয়ারটেকার গভমেন্ট কীভাবে করবে তার পথ বাতিয়ে দেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘কেয়ারটেকার গভমেন্ট কীভাবে করবে? আলোচনা করেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। তাহলেই হয়ে যাবে। ওবায়দুল কাদের সাহেব কাল বলেছেন যে, কেয়ারটেকার গভমেন্ট চিন্তাও করবেন না। এটা এখন চলবে না। তা ২০০৬ সালে কেয়ারটেকার গভমেন্টের সংস্কার প্রস্তাব আপনারাই পার্লামেন্টে দিয়েছিলেন। আমাদের কাছে কফি আছে তো। সেইমথিং এখন আমরা যেটা বলছি, ওরা একই কথা বলেছে তো।

২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনে সময়ে বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে বলে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রতিবাদ জানান বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘এটা মিথ্যাচার। আমি নাম বলব না, এটা সৌজন্যমূলক নয়। কত নাম কত টাকা দিয়ে কে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পায়, কত টাকা দিয়ে কে মন্ত্রীত্ব পায় এগুলো আমরাও জানি। বাংলাদেশে এতটুকু দেশ। আমরা স্থায়ী কমিটি ৭/৮ দিন ধরে বৈঠক করে মনোনয়ন দিয়েছি। সেখানে এতটুকু কোনো রকমের সমস্যা ছিল না। প্রশ্ন আসে আমরা তিন জন করে দিয়েছি কেন? আমরা তিন জন করে দিয়েছে আওয়ামী লীগের জন্য। আমরা জানি যে, আওয়ামী লীগ শয়তানি করতেই থাকবে। প্রার্থীকে বেআইনি ঘোষণা করবে, উপযুক্ত নয় ঘোষণা করবে, ট্রাইব্যুনাল থেকে আউট করে দেবে সেজন্য আমাদেরকে বিকল্প প্রার্থী রাখতে হয়েছে।ওদের কি? আমরা তিন রাখি, ১০ জন রাখে তোমাদের কী?

নির্বাচন কমিশন সংলাপে ডাকলে আপনারা যাবেন কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই নির্বাচন কমিশন কোন নির্বাচন কমিশন? যে নির্বাচন কমিশন কালকে (সোমবার) বলেছে যে, আমর কোনো দায় নেই যে, অন্যান্য দলগুলো এলো কি এলো না। এটাকে কি নির্বাচন কমিশন বলব? তার কি দায়-দায়িত্ব আছে, বলব?

আপনারা জনগণের কথা চিন্তা করে তো নির্বাচন কমিশনে যেতে পারেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমরা জনগনের কথা চিন্তা করেই তো এই দাবিগুলো বলছি। আমরা তো বলছি না, বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাও। আমরা বলেছি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করো, একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করো। আমরা তো এখনই বলছি না যে, আমাদের আপনারা এখনই ক্ষমতায় বসিয়ে দেন। আমরা বলছি যে, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে, সমানভাবে, সমান অধিকার নিয়ে করতে পারি-সেই জিনিসটা চাচ্ছি। ‘উই ওয়ান্ট এ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’। আপনি একদিকে আমার সমস্ত লোকদেরকে ধরে ধরে জেলে পুড়বেন, আপনি মিটিংয়ে মধ্যে আক্রমণ করবেন, মারবেন। আপনি শান্তির সমাবেশ করবেন আর আমাকে মারতে মারতে ঢুকাই দেবেন-এটা তো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না।’

তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশটা কোথায়? বলেন। ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) জেলে রাখবেন। উনাকে ছাড়েন। মামলাগুলো সব প্রত্যাহার করেন। নির্বাচন পরিবেশ তৈরি করেন।তখন আপনি বলবে, এখন কেনো যাচ্ছেন না। তার আগে এ কথা আপনি বলতে পারেন না।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমার খুব কষ্ট হয়। এই রকম একজন বিশাল মানুষের কণ্যা। আমরা কেউ বলি না বলি এটা তো সত্য কথা যে, শেখ মুজিবুর রহমান নিঃসন্দেহে এদেশের ওয়ান অব দ্য গ্রেটেস্ট সান। তার মেয়ে গোটা জাতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিল। উনি (শেখ মুজিবুর রহমান) ও দিয়েছিলেন ওই যে বাকশাল তৈরি করে। ওই যে বলি না-বডি কেমেস্ট্রিতে আছে আওয়ামী লীগের। ওরা লুট করবে, ওরা ভোগ করবে আর পায়ের তলে সাধারণ মানুষকে পিষে মারবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ইতিমধ্যে আমাদের ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ দফা’ সংস্কার কর্মসূচিতে উল্লেখ করেছি যে ভবিষ্যতে অবাধ নির্বাচনে জনগণ বিএনপিকে নির্বাচিত করলে সকল কালাকানুন বাতিল করা হবে। দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

দলমত জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেককে চলমান গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী সরকার অপরিণামদর্শী ভ্রান্ত নীতি, অব্যবস্থাপনা ও নানাবিধ দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে যে মহাবিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে; তা কাটিয়ে ওঠা পরবর্তী যেকোনো সরকারের পক্ষেই হবে এক বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা দেশবাসীকে জানাতে চাই বিএনপি সরকার গঠন করলে দেশের স্বার্থ বিনষ্টকারী সকল চুক্তি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনসহ সকল কালো আইন বাতিল করা হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য, বিকল্প ও মিশ্র-জ্বালানির সংস্থান করা হবে। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ খাতকে পুনর্গঠন ও টেকসই করে গড়ে তোলা হবে। কিন্তু তার আগে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত বর্তমান সরকারকে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে একটি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনায় অবাধ ও গ্রহণযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পবিত্র রমজানে পূর্বের বৎসরগুলোর মতো এবারও এতিম ও আলেম ওলামাদের, পেশাজীবিদের, বিশিষ্ট নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের ও বাংলাদেশে অবস্থিত কূটনীতিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে। আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই অনির্বাচিত, দুর্নীতি পরায়ণ ফ্যাসিষ্ট সরকারের দুর্নীতির খতিয়ান জন সম্মুখে উম্মোচন করার লক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এমএইচ/এমএমএ/

 

Header Ad
Header Ad

অতিরিক্ত ও সহকারী পুলিশ সুপার পদের ১২৪ কর্মকর্তাকে বদলি

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ১১৭ ও সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৭ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।

সোমবার (৩ মার্চ) পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সই করা পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বদলি করা কর্মকর্তাদের ১৯ মার্চের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থলের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। না হলে পরদিন থেকে তাদের তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) হিসেবে গণ্য করা হবে।

সরকার পতনের পর পুলিশ বাহিনীতে রদবদলের ধারাবাহিকতায় এর আগেও কয়েক দফায় বড় রদবদল হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার গত বছরের ২০ নভেম্বর আগের পুলিশ প্রধান মো. ময়নুল ইসলামকে সরিয়ে নতুন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব দেয় বাহারুল আলমকে।

নতুন আইজিপি দায়িত্বে আসার পর বাহিনীতে রদবদলের ধারাবাহিকতায় আরেকটি আদেশ এলো।

এসব কর্মকর্তাকে ডিএমপি, এসবি, সিআইডি, র‌্যাব, জেলা পুলিশ, পুলিশ সদর দপ্তর, পিবিআই, এপিবিএন ও ট্যুরিস্ট পুলিশে বদলি করা হয়েছে।

বদলি কর্মকর্তাদের নামের তালিকা ১ ও তালিকা ২ দেখতে ক্লিক করুন।

Header Ad
Header Ad

সম্ভবত ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হবে: প্রধান উপদেষ্টা

ইইউ-এর সমতা, প্রস্তুতি ও সংকট ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কমিশনার হাজদা লাহবিব ও অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ভোট সম্ভবত চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।

সোমবার (০৩ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সমতা, প্রস্তুতি ও সংকট ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কমিশনার হাজদা লাহবিব দেখা করতে গেলে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

ইইউ এ বছর বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলা ও মায়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে সংঘাতে আটকে পড়া মানুষের সহায়তায় ৬৮ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছেন হাজদা লাহবিব।

অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি তার সরকারের অব্যাহত সমর্থনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। বহু বছর ধরে এটা চলমান, কিন্তু এর সমাধানের কোনো তারিখ নেই।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আপনার বাংলাদেশ সফর আমাদের জন্য আনন্দের। জাতিসংঘের মহাসচিবও আসছেন। আমরা রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছি।

ইইউ কমিশনার বলেন, এ সংকটের একমাত্র সমাধান শান্তি। মানবসৃষ্ট দুর্যোগসহ সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এমন দুর্যোগের মধ্যে ‘ভুল তথ্য ছড়ানো’ও রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে তারা নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির সুযোগ, বন্যা ব্যবস্থাপনা, এই অঞ্চলে, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগসহ জ্বালানি সংযোগ নিয়েও আলোচনা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির জন্য ইইউ’র সমর্থন চান, কারণ এটি নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে বাংলাদেশের উত্তরণের পথ প্রশস্ত করবে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা সহজ করবে।

ইউনূস বলেন, আমরা পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তি সম্পর্কে কথা বলি এবং এখানে নবায়নযোগ্য শক্তি আছে। নেপাল এবং ভুটান উভয়ই আমাদের কাছে পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তি বিক্রি করতে খুব আগ্রহী।

ইইউ কমিশনার বলেন, আপনি এক ব্যতিক্রমী সময়ে অসাধারণ কাজ করেছেন। আমার মূল বার্তা হলো, আমরা আপনাদের সঙ্গে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে প্রস্তুত রয়েছি।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচির প্রতি ইইউ'র সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত পরিবর্তনের সময় দেখছি। আমরা জানি, যখন কিছু পরিবর্তন করতে চান, তখন প্রতিরোধ আসে। তাই অনেক কিছু করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আমরা আপনাদের পাশে আছি।

Header Ad
Header Ad

ছয় মাসে ১০ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে দুদক

দুর্নীতি দমন কমিশন। ছবি: সংগৃহীত

পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীদের সম্পদ জব্দে তৎপর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ৫ আগস্টের পর থেকে দেশে-বিদেশে প্রায় ১০ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে সংস্থাটি।

সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলার পাশাপাশি আদালতের মাধ্যমে সম্পদ জব্দের নির্দেশনা পাচ্ছে দুদক।

দুদকের গত ছয় মাসের তথ্য বলছে, ৭৪টি আদেশে দেশে থাকা স্থাবর-অস্থাবর ১০ হাজার ৩১০ কোটি টাকা ও বিদেশে থাকা ১৬৫ কোটি টাকার সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। যদিও বিদেশে সম্পদ জব্দ বাস্তবে কতটুকু প্রতিফলন ঘটছে, তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

দুদক জানায়, ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির বিভিন্ন নেতাকর্মী ও আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ব্যাবসায়ীদের এসব সম্পদ আদালতের মাধ্যমে জব্দ করা হয়েছে।

দুদকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে মোট ১০ হাজার ৩১০ কোটি ২৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৭১ টাকা এবং বিদেশে ১৬৫ কোটি ৬১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও জব্দ করা হয়েছে।

বিগত সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী আনিসুল হক কিংবা জুনায়েদ আহমেদ পলক। একইভাবে ব্যাংক খাতে হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ থাকা এস আলম গ্রুপ কিংবা বিদেশে বিনিয়োগ থাকা বিভিন্ন গ্রুপ। ইতোমধ্যে তাদের দেশে–বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ করছে দুদক।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অতিরিক্ত ও সহকারী পুলিশ সুপার পদের ১২৪ কর্মকর্তাকে বদলি
সম্ভবত ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হবে: প্রধান উপদেষ্টা
ছয় মাসে ১০ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে দুদক
জাতিসংঘকে শাপলা চত্বর ও সাঈদীর রায়কেন্দ্রিক হত্যাকাণ্ড নথিভুক্ত করার অনুরোধ
নুর ভাই নিজেই তার দল বিলুপ্ত করে আমাদের সাথে যুক্ত হতে আগ্রহী: হান্নান মাসউদ
দুই দিনের মধ্যে সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
নওগাঁ ও পাবনায় বাস ডাকাতির ঘটনায় ছয়জন গ্রেপ্তার
টাঙ্গাইলে সালিশি বৈঠকে সংঘর্ষ, ৭০ দোকান ভাঙচুর, থমথমে পরিস্থিতি
শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের নতুন নাম ন্যাশনাল ক্রিকেট গ্রাউন্ড
২০৩০ দশকে এআই মানবসভ্যতাকে ধ্বংস করতে পারে: ইলন মাস্ক
দেশে প্রথমবার জিকা ভাইরাসের ক্লাস্টার শনাক্ত, আক্রান্ত ৫
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের নতুন নাম বাংলাদেশ স্যাটেলাইট-১
দল না পাওয়া সেই আজিঙ্কা রাহানে কেকেআরের নতুন অধিনায়ক
ওএসডি হলেন দেশের ২৯ সিভিল সার্জন
উপদেষ্টা হিসেবে ফারুকী ঠিক আছেন: প্রিন্স মাহমুদ
খাদ্যপণ্যের দাম গত রমজানের তুলনায় সহনীয় পর্যায়ে: প্রেস সচিব
প্রাথমিকের ৬৫৩১ শিক্ষক নিয়োগে কোনো বাধা নেই: আপিল বিভাগ
ভোক্তা পর্যায়ে কমলো এলপি গ্যাসের দাম
বার্ধক্যজনিত কারণে রোজা রাখতে না পারলে কী করবেন?
শিক্ষা সফরের ৪ বাসে ডাকাতির ঘটনায় আরও ২ জন গ্রেফতার, লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার