দলীয় লোক দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন আইন করছে সরকার: নজরুল
দলীয় লোকদের আইনি প্রক্রিয়ায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন আইন করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘অনুগত ও অপদার্থ নির্বাচন কমিশন গঠনের চলমান প্রক্রিয়াকে দলীয় স্বার্থে আইনি রূপ দেওয়ার সরকারি অপপ্রয়াস হবে।’
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিনা ভোটে অনির্বাচিত একটি অবৈধ সরকারের কাছ থেকে জনগণ এর চেয়ে বেশিকিছু প্রত্যাশা করে না বলে মনে করে বিএনপি। বিএনপি মনে করে যে, একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন, যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের নৈতিক যোগ্যতা ও সামর্থ্য আছে শুধু একটি নির্বাচিত সরকারের।’
দলীয় অনুগত লোকদের দ্বারা নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকার আইন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা নজরুল খান।
নজরুল ইসলাম খান বলেছেন 'এতদিন ধরে যা প্রশাসনিক কায়দায় হয়েছে এখন সেটি আইনি প্রক্রিয়ায় হবে। আইনে প্রস্তাব করা হয়েছে যে, দীর্ঘদিন সরকারি চাকরিতে অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন লোক ছাড়া কেউ সদস্য হতে পারবে না। অর্থাৎ সিাভিল সোসাইটির কেউ, শিক্ষাবিদ বা আইনজ্ঞ তারা কেউ এখানে সদস্য হতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে সারাজীবন সরকারি আদেশ মেনে চলা যাদের অভ্যাস তাদের দিয়ে শুধু নির্বাচন কমিশন হবে, এমন আইন হবে।'
নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন তৈরির সময় নেই আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ' দুর্ভাগ্য আমাদের আইনমন্ত্রী কোনো কথায় স্থির থাকেন না। একেক সময় একেক ধরণের কথা বলেন এবং পরস্পর বিরোধী কথা বলেন।'
নতুন আইনে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে তার অধীনে নির্বাচনে যেতে হবে বিএনপিকে তাই কেমন কমিশন হবে বলে আশঙ্কা করছেন প্রশ্নে তিনি বলেন, ' আমরা তো এই সরকার, এই প্রশাসন, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যেতে রাজী না। আমরা বলে দিয়েছি, এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় এবং তাদের সাজানো যে প্রশাসন তাদের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাচ্ছি না। তাদের দ্বারা গঠিত নির্বাচন কমিশন যে হবে অপদার্থ ও অযোগ্য তাদের অধীনে তো নয়ই। আর তারা এবার যেটা করতে যাচ্ছে তা আল্টিমেটলি একই জিনিস দাড়াবে যা আইনে উল্লেখ করা রয়েছে। সংবিধানে বলা আছে সমস্ত ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে, কাজেই যে আইনের কথা বলা হোক না কেন, যে আইন তৈরি করা হোক ফাইনালি উনার (প্রধানমন্ত্রী) অনুমোদন ছাড়া কিছুই হবে না। আর উনি এতোদিন যা করে এসেছেন তার বাইরে গিয়ে কিছু করবেন এমনটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ফলে এইসরকার তাদের প্রশাসন এবং তাদের কর্তৃক যে নির্বাচন কমিশন তৈরি হোক তাদের অধীনে বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়া পরের কথা আগে দেশের জনগণ নির্বাচন হতে দেয় কিনা সেটা দেখেন?।'
রাষ্ট্রপতির সংলাপকে অর্থহীন দাবি করে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যারা সংলাপে অংশ নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন তাদের যেমন ক্ষমতা নেই সেই অর্থে রাষ্ট্রপতিরও ক্ষমতা নেই। সংলাপে কোনো কিছু অর্জিত হয়নি। কাজেই সংলাপের জায়গায় সংলাপ, সিদ্ধান্তের জায়গায় সিদ্ধান্ত।’
বিএনপিতে তৈমূর আলম খন্দকারকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এ ব্যাপারে বিএনপিতে এখনো কোনো চিন্তাভাবনা নেই।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনকে কীভাবে মূল্যায়ন করছে বিএনপি প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন একটি দরকারি জিনিস; কিন্তু নির্বাচনের নামে যদি নির্বাচনী প্রহসন চলে তাহলে সমালোচনা থাকবেই।’
এমএইচ/এসএ/