দড়ি ধরে টান মারার সময় এসেছে: মির্জা ফখরুল
সময় থাকতে বিএনপির দেওয়া ১০ দফা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘এখনো সময় আছে বিএনপির দেওয়া ১০ দফা মেনে নিন। পদত্যাগ করুন, সংসদ বিলুপ্ত করুন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নতুন নির্বাচন গঠন এবং তাদের পরিচালনায় জনগণের ভোটে সরকার গঠিত হবে।’
বুধবার (৮ মার্চ) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৭তম কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বিএনপি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের স্পষ্ট কথা; এটাই শেষ সময়। মেনে নেন, অন্যথায় পালাবারও পথ কোথাও পাবেন না। যদিও এ কথা বলা হলে আপনাদের (আওয়ামী লীগ) গায়ে লাগে। কিন্তু সত্য হচ্ছে অতীতেও আপনারা পালিয়েছেন পাকিস্তান ও ভারতে। এবার কিন্তু সেই পথও খুজে পাবেন না।’
আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে ধ্বংস করা যাবে না। মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে আটক রেখে, তারেক রহমানকে নির্বাসিত করে, নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে কোনো লাভ হবে না।’
অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যথায় জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলনে গণতন্ত্রকামী মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। গণআন্দোলন প্রতিদিন শক্তিশালী হচ্ছে।
সেই আন্দোলনের কারিগর হচ্ছেন তারেক রহমান। তিনি দেশের মানুষকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। কাজেই আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে না। এতো অত্যাচার নির্যাতনের পরও বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীকে থেকে সরিয়ে অন্য দলে নিতে পারেনি।চলমান আন্দোলনে বিএনপি একা নয়, সেখানে বাম ডান মধ্যপন্থী সবাই আছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের (আওয়ামী লীগ) স্বার্থে সংবিধান পরিবর্তন করেছেন এখন জনগণের স্বার্থে সেই সংবিধান নিয়ে আসুন। কারণ, আমাদের সামনে কোনে বিকল্প নাই। কথায় আছে এরা সহজে যায় না; তাই ধাক্কা মারতে হয়। হীরক রাজার গল্পের মতো ‘দড়ি ধরে মারো টান রাজা হবে খান খান…আমাদের সেই ধরি ধরে টান মরার সময় এসেছে’।
চট্টগ্রাম, সাইন্স ল্যাব ও সিদ্দিকবাজারের বিস্ফোরণ সম্পর্কে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিস্ফোরণের ধারাবাহিক ঘটনাসমূহ দেখে মনে হচ্ছে যেন কারও এর দায় নেই। সরকারের কোনো নজর নেই। তাদের একমাত্র নজর চুরি ও দুর্নীতি করা।
বুড়িগঙ্গার দূষিত গন্ধকে এখন ছাড়িয়ে ঢাকার বাতাসে দুর্নীতির গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল।
আলোচনা সভায় বক্তব্যে রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম প্রমুখ।
পঞ্চগড়ের ঘটনা আওয়ামী লীগের সৃষ্টি
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পঞ্চগড়ের হামলার ঘটনায় আমাদের জড়ানোর জন্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বক্তব্য দিয়েছেন যে, বিএনপিও জড়িত আছে। আমাদের প্রায় দেড়শ মানুষকে সেখানে গ্রেপ্তার করেছে। এখন পঞ্চগড় থেকে মানুষ বাইরে চলে যাচ্ছে। এর উদ্দেশ্যটা কী? উদ্দেশ্য একটাই আবার সেই ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে আবার সাম্প্রদায়িক ঘটনার জন্য দায়ী করে উদোর-পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে চায়।’
কিন্তু এখন আর জনগণ তাদের সেই কথা শুনবে না, তাদের সেই মিথ্যা মন্তব্য শুনবে না। তারা খুব ভালো করে জানে যে, আওয়ামী লীগ চক্রান্তমূলকভাবে নিজেরাই এই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে, তাদের লোকেরাই ঘটিয়েছে, যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে তাদের (সরকার) রেলমন্ত্রী সেখানে গিয়েছিলেন। রেলমন্ত্রী যখন সেখানে গেছেন তখন আহমদীয়া সম্প্রদায়ের লোকেদের জিজ্ঞাসা করেছেন এর জন্য দায়ী কে, কারা করেছে? তখন তারা বলেছেন, আপনার (মন্ত্রী) পাশে যারা যারা আছে তারাই এজন্য দায়ী, আওয়ামী লীগের লোকেরা করেছে।’
এমএইচ/এমএমএ/