শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপ

আইন তৈরিতে একমত সকল পক্ষ, তবুও..

প্রতিটি রাজনৈতিক দলের দর্শন ও আদর্শে কিছু না কিছু ভিন্নতা রয়েছে। তবে এবার একটি জায়গায় সকলেই ঐক্যমতে পৌঁছাতে পেরেছে। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে সকল রাজনৈতিক দলের দাবি এক মোহনায়। তা হলো নির্বাচন কমিশন আইন। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গত ২০ ডিসেম্বর সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা পর্ব।

রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে পাঠানো তালিকা ও সময়সূচি অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৩২টি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বঙ্গভবন। আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত সংলাপে অংশ নিয়েছে ১৭টি দল। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ (বিএনপি) ৭টি দল রাষ্ট্রপতির সংলাপ প্রত্যাখান করেছে। বৃহস্পতিবার ১৩ জানুয়ারি ৩টি দলের জন্য সময়ে রেখেছে বঙ্গভবন। সর্বশেষ ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপ করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনা শেষ করবেন রাষ্ট্রপতি।

এখন পর্যন্ত যেসকল রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশগ্রহণ করেছে প্রতিটি দল নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি পৃথক আইন করার পরামর্শ দিয়েছে। কোনো কোনো দল বিশেষ অধিবেশন ডেকে হলেও আইন করার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছে। আবার কোনো কোনো দল অধ্যাদেশ জারি করে হলেও নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি আইন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এরপর নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ চার কমিশনার বাছাই করতে একটি সার্চ কমিটি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি। সেই সার্চ কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে যোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে রাষ্ট্রপতির কাছে নাম প্রস্তাব করবেন। প্রস্তাবিত সেই নামগুলো থেকে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অপর চার কমিশনার নিয়োগ করবেন। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর আগে নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেবেন।

সার্চ কমিটি গঠনে রেওয়াজ অনুযায়ী আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে সার্চ কমিটি গঠন করেন রাষ্ট্রপতি। সার্চ কমিটিতে হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি)সহ ২-৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক থাকেন। এবারও হয়তো তাই হতে পারে।

নির্বাচন কমিশন গঠনে সংবিধানের পথে হাটার পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তিনি বলেছেন, ‘সার্চ কমিটি এলো কোথা থেকে? এটা তো সংবিধানে নাই। সংবিধানে যা আছে সেই মাপে চলার কথা বলেছি।’

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ শেষে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেছিলেন, ‘আমরা বরাবরই ইসি গঠনে আইন করার কথা বলেছি। গত অধিবেশনেও বলেছি। আইনমন্ত্রীকে বলেছিলাম আপনি না পারেন, আমাকে বলেন আমি আইনটা আনি। আমাকে এখনও বললে এক সপ্তাহের মধ্যে আইনটা আনতে পারব।”

সংলাপ শেষে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সংবিধানের ১১৮ বিধি বাস্তবায়নার্থে আইনের বিধানাবলি অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য একটি আইন তৈরি করতে হবে’।

তিনি আরও বলেছেন, সম্প্রতি সময়ে যে আইন হচ্ছে সেই আইনগুলোর কোন কোনটা করতে সময় ২ ঘণ্টা বেশি লাগে নাই। যেদিন আইন কমিটিতে যাবে পরদিন বসে আইন পাস করা সম্ভব। কাজেই হুদা কমিশনের ড্রাফ আছে। উনারা যদি চান সারা রাত বসে খেটে আইনের ড্রাফ করে দেব’।

আইন করার পক্ষে মত দিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। দলটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু সংলাপ শেষে বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন করতে হবে।

বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী সংলাপ শেষে বলেছেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতিও দু:খ প্রকাশ করেছেন। তিনি একমত পোষণ করেছেন যে আইন হওয়া প্রয়োজন। যেহেতু আইনটা সংবিধান আছে। আমি বিষয়টির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি তিনিও মনে করেন যেন এটা নিয়ে বার বার কথা না ওঠে। একটা আইন থাকলে আইনের মাধ্যমে সুন্দরভাবে সবকিছু হবে। রাষ্টপতি একমত। তিনি নিজেও চান আইনটা দ্রুত হোক।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও কার্যকরভাবে গড়ে তুলতে সংবিধান অনুযায়ী আইন করার জোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)।

আইন করার পক্ষে আইনমন্ত্রীও। কিছুদিন আগে এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘আইন করা উচিত আমিও বলি। আইন হবে। কিন্তু যদি ওই করোনার সময়ে সংসদ বসে, তবে আমরা সব সংসদ সদস্যদের ডাকি না। আমাকে বলা হয়েছিল, এই নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে একটি অর্ডিন্যান্স করে দেন। আমি বলেছি, সেটা সম্ভব না।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ রকম একটা আইন সংসদকে পাশ কাটিয়ে করতে আমি রাজি না।’ তিনি মন্ত্রী আরও বলেন, আগামী নির্বাচন কমিশন গঠন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি সংলাপ শুরু করেছেন। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। আইনের ব্যাপারে একটা কথা হচ্ছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি এই নির্বাচন কমিশনের সময় শেষ হচ্ছে। সংসদ যখন একটা আইন করতে পারবে না, তখন সার্চ কমিটি এই কাজ করছে। সার্চ কমিটিতে ছয়জনের মধ্যে চার সদস্য সাংবিধানিক পোস্টধারী, বাকি দুজন সিভিল সোসাইটির। এখানে রাজনৈতিক দলের কেউ নেই।

আইন করার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও। এরইমধ্যে আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন সভা সমাবেশে আইন করার কথা তুলে ধরেছেন। তবে এখনই না আগামীতে আইন করার হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, খুব শিগগিরই নির্বাচন কমিশন গঠনে কাজ শুরু করব’। আমরা আশাকরছি হয়তো আগামী এক বছর বা কাছাকাছি সময়ে এটা করা সম্ভব হতে পারে।

আইনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যে বিশ্লেষণ করে একথা অনুমেয় যে এবার আইন হচ্ছে না। হয়তো এই কমিশন সার্চ কমিটি দিয়ে করে পরবর্তি সময়ে আইন হতে পারে।
আইন করতে কি আসলে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন নাকি রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার অভাব এমন প্রশ্নে দুইজন বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন। তাদের মতে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সুবিধা নিতেই আইন করতে রাজী হন না।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘এটা তো অর্ডিন্যান্স করে করা যাবে না। এটা করতে হলে পার্লামেন্টে নিতে হবে। পার্লামেন্টে আলোচনা হবে তারপর এটা পাস হবে। সেইটার জন্য সময়টা বাড়াতে বলেছে। পার্লামেন্টে সেশনে কি আইন আসবে সেটা মন্ত্রণালয় প্রসেস করে। প্রসেস করার পর সেটা যাবে পার্লামেন্টারি কমিটিতে। সংসদীয় কমিটি অনুমোদন দিলে তারপর যাবে সংসদে এটা সময়ের ব্যাপার। যে প্রসেস আছে তার জন্য আইটনা করতে এক মাস যথেষ্ট না’।

অর্ডিন্যান্স করে করা যাবে না কেন এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অর্ডিন্যান্স করে কোনটা? এটা তো নির্বাচনের ব্যাপার, রাষ্ট্রীয় ব্যাপার। এটা তো ছোট খাটো ব্যাপার না, যে অর্ডিন্যান্স করে করা যাবে। এটা তারাহুড়োর বিষয় না।’

এবিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, কেন সময় নেই? আমরা তো সেটাই বুঝতে পারছি না। আমরা ড্রাফট করে আইন মন্ত্রীকে দিয়েছি। আইন ড্রাফট করতে একদিন, কি দুই দিন লাগে। এটা ৩-৪ পৃষ্ঠার একটা আইন। আমরা ড্রাফট করেছি। শামসুল হুদা কমিশনও একটা ড্রাফট করে গেছে। সময় নেই বলে যে কথা বলছে তারা এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।’
সংলাপে অংশগ্রহণকারী সকল দলই চান আইন হোক কিন্তু কেন হচ্ছে না আইন করলে কার ক্ষতি এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এবার করবে না তারা (আওয়ামী লীগ)। তারা পুরনো পথেই হাঁটবে। অনুগতদের দিয়ে নির্বাচন করতে চায়।’

আইন করলে কি অনুগতদের আসার পথ বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করেন আপনি? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন,‌ থাকে, কিন্তু একটু দুরহ। আইন করা হলে কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে। স্বচ্ছতা থাকে। তাদের বিরুদ্ধে মানুষের অভিযোগ থাকলে সেটা তুলে ধরতে পারবে। যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারিত থাকবে। আইন হলে তাদের হাতটা একটু বাঁধা থাকে।

তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সুবিধা নিতেই এতোদিন আইন করেনি? জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আইনটা করতে চায় না কেন? সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদে আছে শুধু প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ আর প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ছাড়া সবক্ষেত্রে রাস্ট্রপতিকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে। তাই রাষ্ট্রপতি কাকে নিয়োগ দেবেন তিনি সেটার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রী যাদের সুপারিশ করবেন রাষ্ট্রপতি তাই করবেন। অতীতেও তাই করেছে, এবারও তাই করবে। আইন করলে একটু বাঁধা সৃষ্টি হতে পারে। অতীতে যেগুলো করেছে সেগুলো পরীক্ষিত পথ। এই পথে প্রধানমন্ত্রী যাকে চাইবে তাকেই নিয়োগ করবেন। যেহেতু এই পথে ফল পেয়েছে, এবারও তাই করবে।’

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হলো এই সময়ে অনেক দল ক্ষমতায় ছিল তাহলে তারা আইনটি করেনি কেন? তার মানে আপনি বলতে চান দলগুলা নিজেদের সুবিধা নিতেই আইন করেনি? জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, হ্যাঁ, হ্যাঁ।

একটি আইন করতে যেসকল ধাপ অতিক্রম করতে হয়। প্রথমে আইনের খসড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর মন্ত্রিসভার অনুমোদিত খসড়া বিলটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সংসদে স্পিকারের অনুমতি নিয়ে উত্থাপন করেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বিলটি উত্থাপনের পর ওই মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে যাচাই-বাছাই করার জন্য প্রেরণ করেন। সংসদীয় কমিটি বৈঠকে বসে যাচাই-বাছাই করে বিলটি চূড়ান্ত করে পাসের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এরপর সংসদীয় কমিটির চূড়ান্ত বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী। সেখানে সংসদ সদস্যদের আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে যদি কোন সংশোধনী থাকে সেগুলোসহ স্থিরিকৃত আকারে আইনটি পাস হয়।

সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির হাতে। এর আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ২০১২ সালে এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৭ সালে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে সর্বশেষ দুই নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিয়েছিলেন।

সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং এ বিষয়ে প্রণীত কোনও আইনের বিধান সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেবেন।

সংবিধানের ১১৮ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, সংবিধানের বিধানাবলী-সাপেক্ষে কোন নির্বাচন কমিশনারের পদের মেয়াদ তাহারা কার্যভার গ্রহণের তারিখ হতে পাঁচ বৎসরকাল হবে।

কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন ইসি গঠনের আগে ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সেবার সংলাপ শুরু করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। একমাস ধরে ৩১টি দলের সঙ্গে চলা ওই সংলাপ ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি শেষ হয়। সার্চ কমিটি গঠন করার পর সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই কমিটির কাজের সাচিবিক দায়িত্বও থাকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের হাতে।

এসএম/

 

 

Header Ad

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি। ছবি: সংগৃহীত

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফিরলেন আরও ৮২ জন বাংলাদেশি। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাত ১১টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরেন তারা। তাদের মধ্যে ৭৬ জন সম্পূর্ণ সরকারি ব্যয়ে ও ছয়জন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার অর্থায়নে দেশে ফিরেন। এ নিয়ে ১১টি ফ্লাইটে এখন পর্যন্ত ৬৯৭ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ দূতাবাস, বৈরুত, লেবানন এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় তাদের দেশে ফেরত আনা হয়েছে।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দেশে আসা ৮২ বাংলাদেশির মধ্যে ৭৬ জন লেবাননের বৈরতে বাংলাদেশ দূতাবাসে রেজিষ্ট্রেশন করেন। আর বাকি ছয়জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থায়। এ পর্যন্ত ১১টি ফ্লাইটে ৬৯৭ জন বাংলাদেশিকে লেবানন থেকে দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, প্রত্যাবাসন করা এসব বাংলাদেশিকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা।

এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মোস্তফা জামিল খান যুদ্ধের ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলেন ও তাদের খোঁজ-খবর নেন। এ পর্যন্ত একজন বাংলাদেশি বোমা হামলায় নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত, লেবাননে চলমান সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থায় যতজন প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসতে ইচ্ছুক তাদের সবাইকে সরকার রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে ফেরত আনার ঘোষণা দিয়েছে।

Header Ad

পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ৪৫

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় যাত্রীবাহী গাড়িবহরে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একাধিক যাত্রীবাহী গাড়িতে এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয়, যার ফলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আফগানিস্তানের সীমান্তের কাছের কুররম অঞ্চলে এই হামলা ঘটে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী মহসিন নকভি নিশ্চিত করেছেন যে, হামলার স্থানটি আফগান সীমান্তের কাছাকাছি। জেলা পুলিশ এবং স্থানীয় হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে নিরাপত্তা কর্মকর্তা, নারী ও শিশুরাও রয়েছে। তাদের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

পুলিশ এখনো আততায়ীদের খুঁজে বের করার জন্য অভিযান শুরু করেছে। কুররম জেলা সম্প্রতি শিয়া এবং সুন্নি মুসলিমদের মধ্যে সম্প্রদায়গত সহিংসতার জন্য পরিচিত। তবে এই হামলার দায় কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এখনও স্বীকার করেনি।

এই অঞ্চলে সম্প্রতি জমি নিয়ে বিতর্ক এবং সশস্ত্র সংঘর্ষের কারণে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। আগস্ট এবং অক্টোবর মাসে জমি নিয়ে বিতর্কে সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়, যা কয়েক সপ্তাহ ধরে চলেছিল এবং এতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। এছাড়া, গত কয়েক সপ্তাহে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানি সেনাদের মধ্যে ২০ জন নিহত হয়েছেন।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসে পাকিস্তানজুড়ে একাধিক সন্ত্রাসী হামলায় ৬০ জনেরও বেশি নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশিরভাগ সহিংসতার দায় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) সংগঠনটি স্বীকার করেছে। এই গোষ্ঠীকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে জাতিসংঘ তালিকাভুক্ত করেছে এবং ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে যে, আফগানিস্তানের তালেবান শাসনের অধীনে থাকা ‘অভয়াঞ্চল’ থেকে টিটিপি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ বালোচ বৃহস্পতিবার বলেন, তাদের সরকারের দীর্ঘদিনের অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, আফগান ভূখণ্ডে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আফগান তালেবান কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তালেবান নেতারা দাবি করেছেন, তারা টিটিপি বা অন্য কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেন না এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার জন্য কাউকে সুযোগও দেন না।

এই হামলার ঘটনা পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের তীব্রতার একটি নতুন উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Header Ad

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে পদাধিকারবলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র এ কমিটির সদস্য থাকবে।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

১৮ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা হলেন- মো. মাহিন সরকার, রশিদুল ইসলাম রিফাত, নুসরাত তাবাসসুম, লুৎফর রহমান, আহনাফ সাঈদ খান, তারেকুল ইসলাম (তারেক রেজা), তারিকুল ইসলাম, মো. মেহেরাব হোসেন সিফাত, আসাদুল্লাহ আল গালিব, মোহাম্মদ রাকিব, সিনথিয়া জাহিন আয়েশা, আসাদ বিন রনি, নাইম আবেদীন, মাহমুদা সুলতানা রিমি, ইব্রাহিম নিরব, রাসেল আহমেদ, রফিকুল ইসলাম আইনী ও মুঈনুল ইসলাম।

১৮ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাহী কমিটির তালিকা। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গত ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন একপর্যায়ে গণ–অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার সেই অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। আন্দোলন পরিচালনায় ৮ জুলাই ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক টিম গঠন করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে ৩ আগস্ট তা বাড়িয়ে ১৫৮ সদস্যের করা হয়। ২২ অক্টোবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক টিম বিলুপ্ত করে চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটিতে হাসনাত আবদুল্লাহকে আহ্বায়ক, আরিফ সোহেলকে সদস্যসচিব, আবদুল হান্নান মাসউদকে মুখ্য সংগঠক ও উমামা ফাতেমাকে মুখপাত্র করা হয়। এই কমিটি দিয়ে এতদিন সংগঠনটির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ৪৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন
তামিমকে অধিনায়ক করে বাংলাদেশের দল ঘোষণা
নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার