সংলাপে বাংলাদেশ ন্যাপের তিন দফা প্রস্তাব
স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন করা যায়নি, যা এ যাবত কালের শাসকগোষ্টির চরম ব্যর্থতা ছাড়া অন্য কিছুই নয় মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি।
তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এই দীর্ঘ সময় পরও সরকারগুলো জনগনের আস্থা অর্জনের মত একটি গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে। শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশন গঠনে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আহ্বান করতে হয়, যা জাতি হিসেবে লজ্জার।’
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সংলাপ শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের সংলাপের মধ্য দিয়ে মার্চ কমিটি গঠন ও পরবর্তীতে সার্চ কমিটির সুপারিশের মাধ্যমে গঠিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে অতীতের মতই ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচন এবং সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন জনগনকে নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর সম্পূর্ণরূপে আস্থাহীন করে দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নির্বাচনী ব্যবস্থাই প্রধান সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে।’
জেবেল রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ ন্যাপ মনে করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ছাড়া অর্থবহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। বার বার এই কমিশন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়া রাষ্ট্রের জন্য শুভ নয়। তাই নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি দ্রুততম সময়ে সংবিধানের ১১৮ বিধি বাস্তবায়নে আইন অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য একটি আইন প্রণয়ন করার বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে আশা রাখি।’
গ্রহযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে তিন দফা প্রস্তাবও তুলে ধরে বাংলাদেশ ন্যাপ। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. নির্বাচন কমিশনকে একটি আধুনিক ইল্কেট্রোরাল ম্যানেজম্যান্ট সিষ্টেম (ইএমএস) অর্থাৎ একটি আধুনিক নির্বাচন ব্যবস্থা বা পদ্ধতি গ্রহন করতে হবে।
২. বাংলাদেশের সশস্রবাহিনী বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন পরিচালনা করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সময় এসেছে সশস্রবাহিনীকে দেশের নির্বাচন পরিচালনায় সহযোগি শক্তি হিসাবে অর্ন্তভুক্ত করা।
৩. বর্তমান বিশ্বে তদারকি (মনিটরিং) ও নিরাপত্তা (সিকিউরিটি) জন্য নানা বিধ প্রযুক্তি সহজলভ্য। আমরা মনে করি প্রতিটি নির্বাচনী কেন্দ্রকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণে জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব। যেমন: পিপলস্ কাউন্টিং মেশিন, সিসিটিভি/আইপি ক্যামেরা, রের্কডিং ও লাইফ ষ্টিমিং প্রযুক্তি অর্ন্তভুক্ত করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।
সংলাপে বাংলাদেশ ন্যাপ’র প্রতিনিধি দলে দলের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ছাড়া দলটির মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিষ্টার মশিউর রহমান গানি, ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, যুগ্ম মহাসচিব আতিকুর রহমান, কৃষক মো. মহসীন ভুইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া ও মিতা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচ/এমএমএ/