বাংলাদেশ বিপরীত স্রোতে চলছে: জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিব বলেছেন, 'মুক্তিযুদ্ধের স্পষ্ট ঘোষণা ছিল বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সামাজিক মর্যাদা ও ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠা করা। আজকে ৫১ বছর পরে এসে দেখছি রাষ্ট্রের বাহিনীগুলো মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। রাতের বেলা তারা ভোটের বাক্সগুলো জাল ভোটে ভর্তি করছে। আজকে স্বাধীনতার এত বছর পরে এসে ওই যে মুক্তিযোদ্ধার ঘোষণা বাংলাদেশ তার বিপরীত স্রোতে চলছে।'
বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের আজকে কর্তব্য হচ্ছে নতুন করে জাগ্রত হয়ে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সেটা করতে হলে আমাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের লক্ষ্যকে সামনে রেখে সমস্ত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা। ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গেলে রাষ্ট্রের ক্ষমতার ভারসাম্য এবং জবাবদিহিতা না এনে সেটা আমরা পারব না। কাজেই ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে রেখে সর্বস্তরের মানুষের এক গণজাগরণ দরকার, একটা বৃহত্তর ঐক্য দরকার। জনগণের মাঝে এই বৃহত্তর গণজোয়ার গড়ে উঠেবে এবং অচিরেই এই ফ্যাসিবাদী কর্তৃতবাদী সরকারকে বাধ্য করবে জনগণের দাবি মেনে নিতে। আজকে এই বিজয়ের দিনে আমরা এই শপথ নিয়েছি, আমরা এ লড়াই চালিয়ে যাব।'
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি-এ বিষয়ে দু:খ প্রকাশ করে জুনায়েদ সাকি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে রাষ্ট্র কেবল তাদের একটিমাত্র সংখ্যা বানিয়ে রেখেছে। রাষ্ট্রের কর্তব্য হচ্ছে সকল শহীদদের পরিচয় সনাক্ত করা। তাদের পরিবারের মর্যাদা এবং অধিকার নিশ্চিত করা। এই কাজ ৫১ বছরে হয়নি। এ নিয়ে রাজনীতি চলে কিন্তু আসল কাজটি কেউ করেনি।
তিনি আরও বলেন, 'যেখানে নাগরিকের মর্যাদা আছে, নাগরিক ন্যায় বিচার এবং নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা আছে-এ রকম একটি বাংলাদেশ চাই। এমন বাংলাদেশ চাইলে প্রথম কাজ হচ্ছে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই যে বিদ্যমান সংবিধান কাঠামো এর যে শাসন ব্যবস্থা তার মধ্যে এটা সম্ভব না। এই শাসন ব্যবস্থা বদলে একটা জবাবদিহিতা মূলক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষের মধ্যে একটা জাগরণ দেখা যাচ্ছে। একটা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে উঠবে।'
জুনায়েদ সাকি বলেন, 'রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়। পার্টি অফিসে ঢুকে লণ্ডভণ্ড করে। রাতের আঁধারে নেতা-কর্মীদের তুলে নিয়ে যায়। এ রকম রাষ্ট্র মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ছিল না। এমন রাষ্ট্র দেখতে লাখ লাখ লোক জীবন দেননি। কাজেই লাখ লোক যে কারণে জীবন দিয়েছেন তাদের আকাঙ্ক্ষার রাষ্ট্র আমরা প্রতিষ্ঠা করব।'
এ সময় তার সঙ্গে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসআইএইচ
