প্রধানমন্ত্রীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে: গয়েশ্বর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়তে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, 'অনেকদিন আগেই আপনার (শেখ হাসিনা) একমাত্র জামাতা দুবােইতে আছেন। তিনি নজরদারিতে নয়, গৃহবন্দি। দেশেও আসতে পাচ্ছেন না কোথাও যেতে পাচ্ছে না। অপরাধ ছিল মুদ্রাপাচার। জামাই টাকা পাচার করেছেন সেটা শাশুড়ির আঁচলের টাকা নাকি জামাইয়ে পকেটের টাকা? সেটা তো জাতির সামনে আসে। সুতরাং যাওয়া পথটা কিন্তু রুদ্ধ। কিন্তু থাকার পথটা রুদ্ধ নয়। যত অপরাধ করুক মানুষ যদি ক্ষমা চায় দেশের মানুষ তাদের ক্ষমা করবে সংস্কৃতি ও ইতিহাস দেশে আছে।'
বিএনপি নেতা বলেন, ‘এখন শত অপরাধের জন্য যদি ক্ষমা প্রার্থী হন এবং প্রায়শ্চিত্ত করেন এবং সরকার থেকে পদত্যাগ করে সংসদ বিলুপ্ত করে নির্বাচন ঘোষণা দেন, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করে ঘোষণা দেন দেখবেন দেশের মানুষ অনেকে আপনার প্রতি সহানুভূতিশীল হবে। ভোট হয়তো আপনাকে না দিতে পারে কিন্তু ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ দিলে মানুষ সন্তুষ্ট হতে পারে। তাতে দেশে বসবাস করার একটি পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে। সেই পথ আপনি অবলম্বন করবেন কিনা সেটা আপনার বিবেচ্য বিষয়। যদি গণতন্ত্র বিশ্বাস করতেন গণতন্ত্রের পাতা খুলতেন বা আমাদের দেশের সামাজিক সংস্কৃতিবহাল রাখতে পারতেন তাহলে আমার বিশ্বাস পথে ফিরত আসবেন। এই পথ ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা নাই আপনার পরিত্রাণের জন্য। আপনাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে যদি জীবিত থাকেন। অর্থ্যাৎ আপনার হায়াত যদি থাকে ততদিন আপনাকে অনেক অভিযোগের কারণে কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে।'
৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (সাগর রুনি হলরুম) এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
'খালেদা জিয়াকে বিনা অপরাধে জেল দেওয়া হয়েছে। জামিন দেন নাই, চিকিৎসা করার সুযোগ দিচ্ছেন না। যে দৃষ্টার্ত স্থাপন করছেন তা অনুরুপভাবে তারা যদি আপনার পথ অনুস্বরণ করে তাহলে আপনার পথ কতটুকু ভয়াবহ তা নিশ্চিয়ই পরিমাপ করা যায়।'
গয়েশ্বর বলেন, 'সরকার যতদিন আছে আওয়ামী লীগ ততদিন থাকবে। সরকারে না থাকলে আওয়ামী লীগও থাকবে না। ৭১ সালে যেমন কাউকে কাউকে বাসাবাড়ির সামনে লিখে রাখতে দেখা গেছে যে, এখানে রাজাকার নেই তেমনি রাস্তার মোড়ে বিলবোর্ডে লিখা থাকবে এখানে কেউ আওয়ামী লীগ নেই, আওয়ামী লীগের লোক নেই।'
পররাষ্ট্রমন্ত্রির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ অন্য দেশে অপরাধ হয় হচ্ছে বলে আমাদের দেশেও অপরাধ হতে পারে সেই লাইসেন্স আপনাকে কে দিয়েছেন? আমেরিকা আমাদের দেশের ৭ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন তাহলে তো আপনাকেও তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপকরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন?'
গয়েশ্বর বলেন, মাত্র ৭ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় দেশব্যাপী তুলপার। একটি অংশের বুকে কাপুনি ধরেছে আর বৃহত্তর অংশ আশার আলো দেখছে। দুষ্ট দমনে আমরা ব্যর্থ হলেও গণতান্ত্রিক বিশ্বের চোখ কান খোলা। তারা নিন্দা করছে বা সরকারকে পথ পরিহার করতে সতর্ক করছে, পরামর্শ দিচ্ছে। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিদিন কারো কারো ভিসা বাতিলের খবর উঠে আসছে। দিনদিন পথ রুদ্ধ হচ্ছে তারপর দেখা যাবে শেখ হাসিনা স্বয়ং নিস্তার পায় কিনা? তিনি নিস্তার পেলেও তার গর্ভজাত সন্তানরা রেহাই পায় কিনা সে বিষয়ে আশঙ্কা রয়েছে।'
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়াপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম।