পরাজয়ের গ্লানি থেকে তৈমূরকে অব্যাহতি দিয়েছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আসলে বিএনপি অনুধাবন করতে পেরেছে যে তৈমূর আলম খন্দকারের বিজয় লাভের কোনো সম্ভাবনা নাই। এটি অনুধাবন করতে পেরে আগেই তাকে বিভিন্ন পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে পরাজয়ের যে গ্লানি, সেটি থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করছে।’
মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন সমাবেশে হাজার হাজার নয়, কয়েকশ' মানুষ দেখেই মির্জা ফখরুল সাহেবরা খেই হারিয়ে ফেলেছেন।'
তিনি আরো বলেন, ‘আসলে মির্জা ফখরুল সাহেবরা তো বছরের পর বছর দলীয় কার্যালয় নয়াপল্টনের সামনে কয়েকশ’ মানুষ দেখতেই অভ্যস্ত ছিলেন। এখন বিভিন্ন জেলায় তাদের সমাবেশে আমরা দেখেছি তারা মারামারি করে নিজেরা নিজেদের সমাবেশ পণ্ড করেছেন। বিভিন্ন সমাবেশে হাজার হাজার নয়, কয়েকশ মানুষ দেখে মির্জা ফখরুল সাহেবরা খেই হারিয়ে ফেলেছেন।'
'বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে এবং সরকারের সাথে আছে, নির্বাচনে তারা (বিএনপি) সেটি অনুধাবন করতে পারবেন’-যোগ করেন হাছান মাহমুদ।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি ছাত্রলীগ গঠিত হয়েছিল, আওয়ামী লীগ গঠিত হওয়ার এক বছর আগে। স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতাযুদ্ধে ছাত্রলীগের অবদান জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে। দেশ স্বাধীনতা অর্জনের পরও বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ছাত্রলীগ দেশ গঠনে ভূমিকা রেখেছে। ছাত্রলীগের কাছে আমার প্রত্যাশা হচ্ছে ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় দেশকে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। ছাত্রলীগের মধ্যে যেন কোনো অনুপ্রবেশকারী ঢুকে বদনাম করতে না পারে। যারা চুন থেকে পানি খসলেই কিংবা কিছু হলেই সেটার সাথে ছাত্রলীগে কোনোভাবে এক সময় নাম লিখিয়েছিল কিংবা লেখায় নাই, সেই গন্ধ খুঁজে ছাত্রলীগের গায়ে কালিমা লেপন করার অপচেষ্টা করে, তাদের সেই মানসিকতা পরিহারের অনুরোধ জানাই।
নির্বাচন কমিশন গঠনে সংলাপ নিয়ে বিএনপির বিরূপ মন্তব্যের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যে সংলাপ করছেন এর কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না। নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়াটিকে স্বচ্ছ করার জন্য তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছেন। বিএনপি যে কথাগুলো বলে সেগুলো মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়েও বলতে পারে। কিন্তু সেটি না করে ক্রমাগতভাবে বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তারা যে গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে না সেটিই প্রমাণ করছে।
এর আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে টেলিভিশন এন্ড ডিজিটাল প্রোগ্রাম প্রডিউসারস এসোসিয়েশন অভ বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব) সঙ্গে বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মী আইন বিষয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির সময় গণমাধ্যমকর্মীদের শ্রমিক বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেটি নিরসন করা প্রয়োজন ছিল, এই আইনে সেটি নিরসন করা হয়েছে। সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মূল বিষয় ঠিক রেখে অর্থাৎ যে বিষয়গুলো সাংবাদিক সমাজের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল সেগুলো ঠিক রেখে আইনটি তৈরি করা হয়েছে। তবে এরপর কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে এটি সংসদীয় কমিটিতে উত্থাপন করা যায়। সংসদীয় কমিটি চাইলে সেখানে পরিমার্জন, পরিবর্ধন করতে পারেন।’
এছাড়া নাট্য প্রযোজকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, টেলিভিশন এমন একটি গণমাধ্যম যেটি মানুষের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলে। এজন্য আপনারা যখন কোনো নাটক, টেলিফিল্ম বা অনুষ্ঠান বানাবেন, সেই ক্ষেত্রে দেশ বিনির্মাণ ও উন্নত জাতি গঠনের লক্ষ্যটি যেন ভাবনায় থাকে সে অনুরোধ জানাই।
প্রযোজকবৃন্দ নাট্যনির্মাণ ও বিপণন খাতের বিভিন্ন বিষয়ে মন্ত্রীর সাথে বিশদ আলোচনা করেন।
এনএইচবি/এসআইএইচ