শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৬ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ সাক্ষাৎকার

ছাত্রলীগকে বিতর্কিত জায়গা থেকে ফিরিয়ে এনেছি: জয়

নিজেদের কর্মকাণ্ডে ছাত্রলীগ যখন আলোচনার কেন্দ্রে যখন সংগঠনের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ ঠিক সেই সময় ছাত্রলীগকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশনা দেন সংগঠনটির সাংগঠনিক নেত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী গত সেপ্টেম্বরে বরখাস্ত হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে এসেছিলেন আল নাহিয়ান খান জয় এবং লেখক ভট্টচার্য্য। এরপর ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দুজনের ‘ভারমুক্তি’র ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।

উল্লেখ্য, ছাত্রলীগের সর্বশেষ ২৯তম জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে। নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন ছাড়াই শেষ হয় সম্মেলন। তার আড়াই মাস পর ৩১ জুলাই শোভনকে সভাপতি ও রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই বছর মেয়াদি আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে সম্মেলনের আগেই বিদায় নিতে হয় শোভন ও রাব্বানীকে। যে অভিযোগে বিতর্কিত হয়েছিলেন শোভন-রাব্বানী সেই অবস্থা থেকে ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি কতটা উদ্ধার করতে পারল বর্তমান সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এসব বিষয়ে ঢাকাপ্রকাশের মুখোমুখি হয়েছিলেন আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য্য। দুইজনের পৃথক দুটি সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘ছাত্রলীগকে বিতর্কিত অবস্থা থেকে ফিরিয়ে এনেছি।’

ঢাকাপ্রকাশ: যে অবস্থায় আপনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, সেই জায়গা থেকে আপনাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারছেন কি না? কমিটিগুলোর কী অবস্থা?

আল নাহিয়ান খান জয়: একটি বিশেষ সময়ে অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা দায়িত্ব পেয়েছি। দায়িত্ব পাওয়ার পর দেখেছি ছাত্রলীগের প্রতিটি ইউনিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছিল। সেই মেয়াদ উত্তীর্ণ জায়গাগুলোর মধ্যে যেগুলোর দীর্ঘমেয়াদি কমিটি হয়নি, সেগুলো বিবেচনা করে আমরা কাজ করেছি। দায়িত্ব পাওয়ার পর আমাদের প্রধান ও চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল ছাত্রলীগকে বিতর্কমুক্ত করা এবং যারা পদবঞ্চিত ছিল তাদের পদায়ন করা। আমরা সেই কাজটি সুন্দরভাবে পালন করার চেষ্টা করছি। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আমাদের ভারমুক্ত করেন। আজ ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি ২ বছর অতিবাহিত করছি। আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি, তখন থেকেই করোনা মহামারি। করোনাকালে সারাবিশ্ব যখন হোঁচট খেয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে কিন্তু আমাদের নেত্রী যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, তাতে অনেককাংশেই করোনাকে জয় করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। দায়িত্ব পাওয়ার দুই-তিন মাস পর করোনা মহামারি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছিল যে কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যায়। যেহেতু বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের সংগঠন এবং শিক্ষার্থীরাই হচ্ছে এই সংগঠনের প্রাণ। সেই সংগঠনে যখন শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস বন্ধ থাকে, সেই কারণে আমরা কমিটিগুলো করতে পারিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। তবে এর মধ্যেও আমরা ২৬টি জেলা কমিটি করেছি। করোনার সময়ে অনেক কষ্ট করে নেতা-কর্মীরা কাজ করেছেন। নেতা-কর্মীরা জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন। আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে সুন্দরভাবে আমাদের কাজ করছি, কিন্তু কেউ যদি অন্যায় করে ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে আমরা কাউকে ছাড় দেইনি। সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। সফলতা ব্যর্থতা হিসাব মানুষের উপর ছেড়ে দিলাম। এদেশের তরুন সমাজ এদেশের শিক্ষার্থীরাই বলতে পারবে আমরা কতটুকু সফল হয়েছি।

ঢাকাপ্রকাশ: বিতর্কিত জায়গা থেকে কি ছাত্রলীগ মুক্ত হতে পেরেছে?

আল নাহিয়ান খান জয়: ছাত্রলীগ ৫০ লাখ নেতা-কর্মীর সংগঠন। এই সংগঠনের এত নেতা-কর্মী, আমরা চেষ্টা করি সারাদেশে একটি চেইন অব কমান্ড মেইনটেইন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চলবে। সেখানে আমরা চেষ্টা করেছি বিতর্কিত অবস্থান থেকে মুক্ত করার এবং আমরা পেরেছি। কিন্তু অনেক সময় অনেকে মিথ্যা অভিযোগ করে। সেই মিথ্যা অভিযোগগুলো আমরা তদন্ত করি। তদন্তে করে বেশিরভাগ জায়গায় পেয়েছি অভিযোগটি মিথ্যা। বিতর্কিত অবস্থান থেকে মুক্ত করার যে প্রয়াস, সেটি অব্যাহত আছে। অনেকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ছাত্রলীগকে বদনাম করার চেষ্টা করে। যারা নিজের স্বার্থে বা ব্যক্তি স্বার্থে ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করবে, তাদের কোনোভাবেই আমরা ছাড় দেব না।

ঢাকাপ্রকাশ: ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই টেন্ডারবাজি বা চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া যায়। তা ছাড়া অর্থের বিনিময় কমিটি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে যদি বলেন...

আল নাহিয়ান খান জয়: এক সময় বিশেষ করে বিএনপি জোট সরকারের আমলে ছাত্রদল সারা বাংলাদেশে প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি করেছে। জনপ্রিয় সরকার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কোনো জায়গায় টেন্ডারবাজি করেছে বলে শুনেছেন? বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জনপ্রিয় সংগঠন। শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে এই সংগঠন। সেই কাজটি আমাদের নেতা-কর্মীরা করছে। ছাত্রদল অছাত্রদের সংগঠন। সেখানে ৪৫ থেকে ৫০ বছরের বয়সীরাও শিক্ষার্থীদের সংগঠনের নেতা হয়। এটি আমাদের ভাবতে হবে। ছাত্রলীগ আছে বিধায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে জনপ্রিয়তা সঙ্গে তরুণ প্রজন্মের আলোকবর্তিকা নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কাজ করে যাচ্ছে। কেউ অভিযোগ করতে পারে; কিন্তু সেই অভিযোগের সত্যতা তো থাকতে হবে। কোথায় টাকার বিনিময়ে কমিটি হয়েছে? শুধু অভিযোগ দিলে তো হবে না। সত্যতা যাচাই করার সুযোগ দেবেন। অভিযোগ দিয়ে অনেকে সেটাকে সত্য বানানোর চেষ্টা করেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম, গুজব ছড়ানোরও একটি মাধ্যম হিসেবে অনেকে এটিকে ব্যবহার করেন। গুজব না ছড়িয়ে সত্যকে সত্য বলতে হবে। মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে হবে। অভিযোগ দিলে তার সত্যতা যাচাই করব। যদি কেউ টাকার বিনিময়ে কমিটিতে আসার চেষ্টা করে বা এসেছে এরকম কোন খবর যদি আমরা পাই তাহলে তার তদন্ত করে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

ঢাকাপ্রকাশ: ঢাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে আখ্যায়তি করেছে। ছাত্রলীগের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরার ঘোষণা দিয়েছেন। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

আল নাহিয়ান খান জয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় সৃষ্টি করেছিল সাবেক ভিপি নুর। সে একজন নাটকবাজ। যে কি না শিক্ষার্থীদের কোনো দাবি দাওয়ায় কাজ করেনি। ডাকসুর ভিপি থাকা অবস্থায় শিক্ষার্থীদের জন্য তিনি কী কাজ করেছেন? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিকট এই প্রশ্ন রেখে গেলাম। তিনি ঢাবিতে বহিরাগত এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করেছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস। সেই ইতিহাস যারা জানে না তারাই ছাত্রলীগ নিয়ে কথা বলার সাহস পায়। যদি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কেউ না জানে এদেশের সৃষ্টির ইতিহাস যারা না জানে সেই নুরু গংরা যারা স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে চলে, যারা বিকাশে টাকা এনে চলে, রকেট-বিকাশ দিয়ে যারা সংগঠন চালানোর চেষ্টা করে, তারা বিভিন্ন সময় নিজেদের অন্তঃকলহের কারণে তারা কিন্তু আলাদা হয়ে গেছে। তারা বলেছে সাবেক ভিপি নুর বিভিন্নভাবে টাকা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গেছে। টেন্ডারবাজির একটি অডিও প্রকাশ পেয়েছে। শিক্ষার্থীদের মন নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলে যারা শিক্ষার্থী বান্ধব না তারা নাটক করে সোস্যাল মিডিয়ায় নামসর্বস্ব সংগঠন নিয়ে কখনোই এগিয়ে যেতে পারবে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এমন একটি সংগঠন যে সংগঠন সারাবিশ্ব জানে জাতির পিতা এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই সংগঠনের একটি গৌরজ্জল ইতিহাস রয়েছে। সেই ইতিহাস ভুলুণ্ঠিত করে নুরুরা কখনোই এগিয়ে যেতে পারবে না। ছাত্রলীগ তার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নিয়ে বর্তমান এবং আগামী দিনে নেতৃত্ব দেবে এই দেশে।

ঢাকাপ্রকাশ: ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী যদি আপনাদের কেন্দ্রীয় সম্মেলন করার নির্দেশ দেন সে ক্ষেত্রে আপনার কতটুক প্রস্তুত?

আল নাহিয়ান খান জয়: ছাত্রলীগ জননেত্রী শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন। আমাদের নেত্রী সম্মেলনের বিষয়ে অবগত থাকেন এবং তিনি নির্দেশনা দেন সম্মেলন করার। যখনই সম্মেলনের সময় জানতে পারব, তখন থেকেই সম্মেলন আয়োজন করার ব্যবস্থা করব এবং বিভিন্ন মাধ্যমে সেই সংবাদ পৌঁছে দেব।

ঢাকাপ্রকাশ: সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

আল নাহিয়ান খান জয়: আপনাকেও ধন্যবাদ।

Header Ad
Header Ad

প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির

ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো কোনো আরব নেতা সিরিয়া সফরে গেলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় তিনি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে পৌঁছান। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের পর এই প্রথমবার কোনো সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধান দেশটি সফর করলেন। বর্তমানে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আহমেদ আল-শারা। সফরের সময় দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে কাতারের আমিরকে স্বাগত জানান তিনি।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, নতুন সিরীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাতার মাঠপর্যায়ে কাজ করতে আগ্রহী। বিশেষ করে সিরিয়ার জনগণের জন্য চলমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা করা, ইসরায়েলি দখলদারিত্ব প্রতিহত করা এবং সিরিয়ার ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সহায়তা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।

বিশ্লেষকদের মতে, কাতারের আমিরের এই সফর মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর এই সফর দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন হত্যাকাণ্ডে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি। তবে এই প্রতিবেদন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তদন্ত কর্মকর্তারা পুলিশের দায় এড়াতে পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন দিয়েছেন এবং ইয়ামিনকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

সমালোচকরা বলছেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে পুলিশের নৈতিক অবক্ষয় এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে গণঅভ্যুত্থানের পরও তারা নিজেদের পরিবর্তন করতে পারেনি। বরং, কঠিন চাপে থেকেও পুলিশের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড মাঝে মাঝেই প্রকাশ পাচ্ছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশের দাবি, ইয়ামিন এপিসি (সাঁজোয়া যান) কারে উঠলে বাইরে থেকে সন্ত্রাসীরা গুলি ছোঁড়ে, যা তাকে আহত করে। এরপর এএসআই মোহাম্মদ আলী তাকে নামানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তার হাতে ব্যথা থাকায় ফসকে পড়ে যান ইয়ামিন। পুলিশ আরও জানায়, জনগণের কাছে হস্তান্তরের জন্য তাকে রোড ডিভাইডারে রাখা হয়, যাতে কেউ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারে।

তবে এই বক্তব্যের সঙ্গে ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজের কোনো মিল পাওয়া যায়নি। ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, পুলিশের সদস্যরা নীল রঙের এপিসি কারের ওপর ইয়ামিনকে ফেলে রেখে টহল চালায় এবং ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায়। কিছুক্ষণ পর এপিসি কারটি সাভারের রানা প্লাজা ও ভ্যাট অফিসের মাঝামাঝি এলাকায় আসে। এরপর এপিসির ভেতর থেকে এক পুলিশ সদস্য দরজা খুলে দেয় এবং আরেকজন ইয়ামিনকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় ফেলে দেয়।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ ইয়ামিন তখনও জীবিত ছিলেন। প্রচণ্ড কষ্টে নিশ্বাস নিতে দেখা যায় তাকে। তার পরনে ছিল নেভি ব্লু ট্রাউজার ও খয়েরি রঙের জামা। এপিসি থেকে ফেলে দেওয়ার পর তার দুই হাত দুই দিকে ছড়িয়ে যায় এবং একটি পা এপিসির বাঁ দিকের চাকার সঙ্গে আটকে থাকে। মৃত ভেবে পুলিশের সদস্যরা তার পায়ে আর গুলি না করে রাস্তার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টেনে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেয়। এরপর আরও দুই পুলিশ সদস্য নেমে এসে তাকে সার্ভিস লেনে ফেলে রেখে চলে যায়।

পুলিশের এই প্রতিবেদনকে ‘চরম পক্ষপাতদুষ্ট’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে অগ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, তদন্ত কর্মকর্তারা শুধু পুলিশ সদস্যদের বক্তব্য নিয়েছেন, অথচ কোনো প্রত্যক্ষদর্শী, সংবাদকর্মী বা সাধারণ মানুষের সাক্ষ্য নেননি। এ কারণে তদন্ত প্রক্রিয়াকে পক্ষপাতদুষ্ট ও অবিশ্বাস্য বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এক প্রতিবেদনে পুলিশের আচরণকে ‘ভয়ংকর বর্বরতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটির তিন পুলিশ সদস্য দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছেন এবং অপেশাদারসুলভ আচরণ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখাকে সুপারিশ করা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ নীল এপিসি কার থেকে ইয়ামিনের গুলিবিদ্ধ দেহ রাস্তায় ফেলে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। ঘটনাটি ঘটে সাভারের আশুলিয়া এলাকায়। কোনো ময়নাতদন্ত বা আনুষ্ঠানিক মৃত্যুসনদ না দিয়েই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইয়ামিনের লাশ হস্তান্তর করে।

ঢাকা ও সাভার রেঞ্জের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ইয়ামিনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা না করার জন্য পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায়। পরে, পরিবার তাকে সাভারের তালবাগে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে চাইলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান বাধা দেন। শেষ পর্যন্ত ব্যাংক টাউন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ দায় মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু ভিডিও ফুটেজের ভয়ংকর দৃশ্যগুলো ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনার সঙ্গে পুলিশের বক্তব্যের কোনো মিল নেই। তাহলে, শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে যদি সত্য প্রকাশ না পায়, তবে স্বাধীন তদন্ত কমিটির মাধ্যমে পুনরায় এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি উঠেছে। নিহত ইয়ামিনের পরিবার এবং আন্দোলনকারীরা ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও একাধিক হত্যা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৯টায় রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডের পোস্ট অফিসের গলির এক বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ শিবলী কায়সার।

উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের পর থেকে মোহাম্মদ নুরুজ্জামান আত্মগোপনে ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দীর্ঘদিনের নজরদারির পর অবশেষে তাকে গ্রেফতার করা হলো।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির
শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক
রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান
কোটা পদ্ধতি পুনরায় পর্যালোচনার নতুন ৩ সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের
আমরা কারও কাছে চাঁদা চাইনি, চাইবোও না: জামায়াত আমির
নওগাঁ বারের নির্বাচনে সব পদে বিএনপি প্যানেলের জয়
আরব আমিরাতে চাঁদ দেখা গেছে, পবিত্র শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি
ডিপসিকের চেয়েও কার্যকর নতুন এআই আনার দাবি আলিবাবার
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গুণগত পরিবর্তনই আমাদের মূল লক্ষ্য: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
বাণিজ্য মেলায় সংঘর্ষ, আহত ১৬
শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচার দাবিতে আমরণ অনশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলে নিজেই জানিয়ে দিবো: তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম
সাত কলেজের জন্য হচ্ছে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’
ভোটারদের আস্থা পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নিতে বলেছে ইইউ: ইসি সচিব
রংপুরের টানা চতুর্থ হার, প্লে-অফের দৌড়ে টিকে রইলো খুলনা
চিরতরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ঢাকার মধুমিতা সিনেমা হল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'জয় বাংলা' স্লোগান, আটক ৫
প্রধান উপদেষ্টার উদ্বোধনে শুরু হচ্ছে একুশে বইমেলা
সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানো সেই যুবককে গুলি করে হত্যা
বাংলাদেশ পুলিশে ১৬টি শূন্য পদে নিয়োগ, আবেদন শুরু ২ ফেব্রুয়ারি