সরকার ভেতরে ভেতরে শূন্য হয়ে গেছে: মির্জা ফখরুল
আওয়ামী লীগের প্রথম ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন বিদ্যুৎ, কয়দিন পর দেখবেন জ্বালানি তেল রিজার্ভ শূন্য হচ্ছে। আকাশচুম্বী হয়ে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে। এখন আর দফা-টফা নেই এখন এক দফা এক দাবি এ সরকারের পদত্যাগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, 'পরিষ্কার কথা এ মুহূর্তে পদত্যাগ করুন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে এ সংসদকে বাতিল করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন করে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেন।'
'এ সরকার মুখে বড় বড় কথা বলে, অনবরত মিথ্যা কথা বলে, মানুষকে প্রতারণা করে বোকা বানিয়ে রাখে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে তারা শূন্য হয়ে গেছে, একেবারে ফোকলা অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। কারণ এ অনির্বাচিত অবৈধ সরকার আওয়ামী লীগের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে লুটপাট ও দুর্নীতি'- যোগ করেন বিএনপিরেএ নেতা।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিদ্যুতের লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
দলের নেতা-কর্মীদের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আর সময় নেই। এখন সবাইকে জেগে উঠতে হবে। এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী ভয়ংকর দুর্নীতিবাজ সরকারকে একটা ধাক্কা দিতে হবে। মনে রাখতে হবে সেই বিখ্যাত উক্তি ‘দড়ি ধরে মারো টান রাজা হবে খানখান’। সেই লক্ষ্যে অগ্রসর হতে হবে, মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হবে এবং মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এ ভয়াবহ এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে।”
সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তাই এদের আর কোনো সুযোগ দেওয়া যাবে না, সময় দেওয়া যাবে না। এরা যত বেশিক্ষণ সময় থাকবে, থাকলেই বাংলাদেশকে ধ্বংস করে ফেলবে।'
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে দেশে কোনো ঘাটতি নেই- ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, 'ঘাটতি নেই তাহলে লোডশেডিং কেন? ঘাটতি নেই তাহলে ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ নেই কেন? কেন আজকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন বাংলাদেশে এখন অশনি সংকেত। এ আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতি করে চুরি করে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সর্বনাশ করে দিয়েছে।'
অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'কয়েকদিন আগে তিনি বললেন আমরা আইএমএফ এর কাছ থেকে টাকা নেব না। আমরা অর্থনৈতিকভাবে এখনো শক্তিমান। অথচ গতকাল দেখতে পেলাম সাড়ে ৪০০ মিলিয়ন ডলার তারা চেয়েছেন।'
সভা সমাবেশে বাধা দেওয়া হবে না- সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, 'ঢাকা শহরে একটি সভা করার মতো জায়গা তারা দেয় না। ঢাকা মহানগর উত্তর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার জায়গা চেয়েছিলেন কিন্তু সেখানে ও তাদের জায়গা দেওয়া হয়নি। মুখে বলবেন এক কথা কাজে করবেন আরেকটা। গণতন্ত্রের অবশিষ্ট কোনো কিছু রাখা হয়নি। এখানে জনগণের কোনো অধিকার নেই, রাজনৈতিক দলগুলোকে সভা সমাবেশ করতে সুযোগ দেওয়া হয় না। সত্য কথা বললে তাদের শাস্তি দেওয়া হয়। সাংবাদিকরা লিখলে তাকে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে কারাগারে পাঠানো হয়।'
এসএন