বিএনপির আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি কোটি টাকা
বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে মেনে না নিলেও দলের আয় ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে গেছে বিএনপি প্রতিনিধি দল।
এ সময় তারা এক পঞ্জিকা বৎসরের আয়-ব্যয়ের হিসাব বিবরণী জমা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া বিবরণী থেকে জানা গেছে, আগের বছরের চেয়ে আয় ও ব্যয় কমলেও বিএনপি ২০২১ পঞ্জিকা বছরে আয়ের চেয়ে এক কোটি টাকার বেশি ব্যয় করেছে।
নির্বাচন কমিশনে দেওয়া আর্থিক প্রতিবেদনে গত বছরে বিএনপি আয় দেখিয়েছে ৮৪ লাখ টাকা। আর বছরজুড়ে ব্যয় করেছে ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, যা আগের জমা টাকা থেকে মেটানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে নির্বাচন কমিশনে বিএনপির বার্ষিক আর্থিক লেনদেনের নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আয়-ব্যয়ের এসব তথ্য জানান।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দলটির ২০২১ সালের আয় ও ব্যয় দুটোই আগের বছরের চেয়ে কমেছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়।বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৩৯টি।
গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী পর পর তিন বছর দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
নির্বাচন ভবনে ইসি সচিবের কাছে নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর রিজভী জানান, ২০২১ সালে দলের আয় হয়েছে ৮৪ লাখ ১২ হাজার ৪৪৪ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে এক কোটি ৯৮ লাখ ৪৭ হাজার ১৭১ টাকা। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হয়েছে এক কোটি ১৪ লাখ ৩৪ হাজার ৭২৭ টাকা। দলটির আগের ব্যাংক স্থিতি থেকে এ অতিরিক্ত ব্যয় মেটানো হয়েছে।
দলীয় সদস্যদের চাঁদা, নমিনেশন ফরম বিক্রি, অনুদান, ব্যাংকের সুদ হিসাব থেকে দলের আয় আসে বলে আয়-ব্যয়ের হিসাবে দেখানো হয়েছে।
অপরদিকে অফিস স্টাফদের বেতন, বোনাস, ইউটিলিটি বিল, ত্রাণ সহায়তা, আহত নেতা-কর্মীদের সহযোগিতাসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় হয়।
কোভিড মহামারির প্রথম বছর ২০২০ সালে বিএনপির আয় হয়েছিল ১ কোটি ২২ লাখ ৫৩ হাজার ১৪৯ টাকা। আর ব্যয় করে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৫২ হাজার ৫১৩।
বৃহস্পতিবার সংলাপে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের জানান, ‘(অডিট রিপোর্ট জমা) এটা রুটিন ওয়ার্ক। এটা নির্বাচন কমিশন অফিসে দিতে হয়। সংলাপ তো রাজনৈতিক বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এই নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থাশীল নই। ইসি এখন পর্যন্ত যে কথাবার্তা দেখছি, সেটা একেবারেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে- এটা আমরা আশা করছি না। এটা তাদের আচরণের মধ্য দিয়ে দিয়ে প্রমাণ করছে।’
তিনি জানান, এ সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে। এবং সেই সরকারের অধীনে যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে, তার মাধ্যমে হতে হবে নির্বাচন।
ইসির কোনো আমন্ত্রণেই আসবেন না, বর্জন করে যাবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ‘আমরা আজ এসেছি অডিট রিপোর্ট জমা দিতে। যদি ইসির আচরণ এরকম হয়, সে যদি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সটেনশন হিসেবে যদি ব্যবহার করেন, আগামী নির্বাচনগুলো যদি তার ইচ্ছা অনুযায়ী করতে চান এবং কর্মকাণ্ডের মধ্য যদি সেই ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে; নিশ্চয়ই সে ইসি জনগণের আস্থাভাজন হবে না। সেই ইসির অধীনে তো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। নিশ্চয় আন্দোলন হবে।’
এসএম/এমএমএ/