খালেদার সঙ্গে দলের সিনিয়র নেতাদের সাক্ষাৎ
প্রায় এক বছর পর ঈদের দিনে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
মঙ্গলবার (৩ মে) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সাত সদস্য।
সাক্ষাত শেষে ‘ফিরোজা’ থেকে বেরিয়ে এসে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রায় দুই বছর পরে আজকে আমরা জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এক সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম। আমরা আগেও সাক্ষাৎ করেছি যখন তিনি কারাগারে ছিলেন না, গৃহে অন্তরীণ ছিলেন না। ওই সময় প্রতি বছরই আমরা বাইরের লনে বসে ঈদের দিনে সাক্ষাৎ করতাম, শুভেচ্ছা বিনিময় করতাম।’
‘আমাদের এবারকার এ সাক্ষাৎ নিসন্দেহে খুব বেশি আনন্দময় ছিল না। আনন্দময় যতটুকু ছিল এজন্য যে, প্রায় বছর খানেক পর আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারলাম, তার কথা শুনতে পারলাম। তিনি যেন সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন এ প্রার্থনা করি।’
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এখন অসুস্থ আপনারা জানেন। এ অসুস্থতার মধ্যে তিনি আগেও দেশবাসীর কথা চিন্তা করেছেন,এখনো দেশবাসীর অবস্থার কথা জানতে চেয়েছেন। এ ছাড়া বর্তমানে অবস্থার ব্যাপারে জেনেছেন আমাদের মাধ্যমে। দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এদেশের মানুষ যেন ভালো থাকে, সুস্থ থাকে, গণতন্ত্র ফিরে পায়, মানুষ তার অধিকার ফিরে পায়- এ প্রার্থনা তিনিও করেছেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি এখনো সুস্থ নন। ডাক্তাররা আছেন তারা এ বিষয়ে বলতে পারবেন। এটুকু আমি বলতে পারি যে, এখনো তিনি অত্যন্ত অসুস্থ আছেন। এখনো হেঁটে খাবার টেবিলে যেতেও তার খুব কষ্ট হয়। এটাই বাস্তবতা। তাহলেই আপনারা বুঝতে পারবেন তিনি কেমন আছেন।’
দলে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে কোনো বার্তা আছে কি না প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তিনি একই কথা বলেছেন, দেশের জন্য তাদের ভালোবাসা যেন প্রবল হয় এবং দেশকে তারা যেন মুক্ত করে।’
রাত ৮টায় মহাসচিবের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ঢোকেন। এক ঘণ্টা তারা সেখানে ছিলেন। ‘শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে’ ফিরোজার দোতলায় দলীয় প্রধানের সঙ্গে তারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সর্বশেষ গত বছরের কোরবানির ঈদের দিন খালেদা জিয়ার দেখা পেয়েছিলেন এ নেতার। গত রোজার ঈদে বিএনপি চেয়ারপারসন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় দলের নেতাদের সঙ্গে তার সাক্ষাত হয়নি।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয় বিএনপি প্রধানকে। এরপর থেকে গুলশানের ওই বাসায় থাকছেন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত ৭৬ বয়সী খালেদা জিয়া। যেখানে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থক কেউই নেত্রীর সাক্ষাৎ পান না। এর আগে সকালে খালেদা জিয়ার বোন সেলিনা ইসলাম ও ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারসহ নিকট স্বজনদের নিয়ে দুপুরে খালেদা জিয়া দুপুরের খাবার খান।
এসএন