নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জাপা’র ৬ প্রার্থী, যা বললেন জি এম কাদের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। ফাইল ছবি
হতাশা বাড়ছে জাতীয় পার্টিতে। সমঝোতার ২৬ আসনসহ কয়েকটি আসনে দলটি লড়াই করলেও বাকিগুলোতে নেই প্রচার-প্রচারণা। একে একে সরে যেতে শুরু করেছেন লাঙ্গলের প্রার্থীরা। এদিকে বছরের প্রথম দিনেই (১ জানুয়ারি) কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বরিশাল ও গাজীপুরের লাঙ্গলের ৬ প্রার্থী।
গুঞ্জন রয়েছে দলটির আরও অনেক প্রার্থী একযোগে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিতে পারেন। নির্বাচন প্রত্যাহার করা প্রত্যেক নেতাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন শীর্ষ নেতাদের প্রতি।
এ দিন নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন হবিগঞ্জ-২ আসনের (বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জ) জাতীয় পার্টির প্রার্থী শংকর পাল। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, এই নির্বাচনে থাকা না থাকা একই কথা। তারা ২৬ আসন নিয়ে খুশি। তারা লিখছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত। তাহলে আমি কী সমর্থিত লিখবো। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের অভাব রয়েছে। আছে ক্ষমতাসীনদের পেশিশক্তির প্রভাব। আমি আমার কর্মী-সমর্থকদের কথা চিন্তা করে নির্বাচন থেকে সরে আসছি।
এর আগে গাজীপুর-২ ও গাজীপুর-৫ আসনের জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গাজীপুর মহানগর জাতীয় পার্টির একাধিক সূত্র জানায়, গত মে মাসে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জামানত হারান এম এম নিয়াজ উদ্দিন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধারণা ছিল গাজীপুরের একটি আসন জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেবে আওয়ামী লীগ। আসন সমঝোতা না হওয়ায় এবং দলীয় ভিত্তি মজবুত না থাকায় নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাপা প্রার্থী নিয়াজ উদ্দিন।
একই দিনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন আখ্যা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান বরিশাল-২ ও ৫ আসনের দলীয় প্রার্থী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস এবং বরগুনা-১ আসনের প্রার্থী খলিলুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, নির্বাচন কমিশনের আচরণে মনে হচ্ছে তারা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। সরকার কিছু রাজনৈতিক দলকে ঘুষ বরাদ্দ দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হচ্ছে ৭ই জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
প্রার্থীদের সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, এটা দলের নয়, তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে নানা অসন্তোষের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাচন না আসা পর্যন্ত সঠিক করে বলা যাচ্ছে না। নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকবো কিনা সেটা সময়ই বলে দেবে। সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। অনেক সময় অনেক প্রার্থী নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকেন না, কেউ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ করেন, আবার কেউ ঘোষণা করেন না। কেউ এমনিতেই বসে যান।
তিনি আরও বলেন, পার্টির প্রার্থীদের মধ্যে আমার একটা নির্দেশ আছে, যারা নির্বাচন করতে চান, করতে পারেন। নির্বাচন করতে না চাইলে সেটিও সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা রয়েছে।