জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃতদের দলে ফেরাতে রওশনের নির্দেশ
জাতীয় পার্টি থেকে যেসব নেতাকে বহিষ্কার করেছেন পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের, তাদের দলে ফেরাতে নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিদেশে চিকিৎসারত রওশন এরশাদ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই আদেশ দেন।
সম্প্রতি জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন নেতাকে পার্টি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন, বহিষ্কার করেছেন ও কমিটি থেকে বাদ দিয়েছেন জিএম কাদের। এসব নেতার সবাইকে বিনা কৈফিয়তে দলে অন্তর্ভুক্তির আদেশ দিয়েছেন এইচ এম এরশাদের সহধর্মিনী রওশন এরশাদ।
বেশ কিছু দিন থেকে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের মধ্যে এক ধরনের মনস্তাত্বিক দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে।
জাতীয় সংসদের প্যাডে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের কাছে পাঠানো নির্দেশনামূলক এক চিঠিতে তিনি এ আদেশ দেন। চিঠি স্বাক্ষর করা হয় মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর)।
জাপা চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির সর্বময় ক্ষমতার সংরক্ষক হিসেবে পার্টির গঠনতন্ত্রের ধারা ২০ এর উপধারা-১; প্রধান পৃষ্ঠপোষকের ক্ষমতাবলে গঠনতন্ত্রের বিশেষ ক্ষমতা এবং মৌলিক অধিকার পরিপন্থী ধারা ২০ এর উপধারা ২ এর সব বিধান স্থগিতের নির্দেশনা দিয়েছেন।
এতে রওশন এরশাদ বলেন, ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে অনুমোদিত পার্টির গঠনতন্ত্রের ধারা-২০ এর উপধারা ১ এর সব বিধানের অপব্যবহার হয়। যা গণতন্ত্র ও সংবিধান পরিপন্থী। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান মেনেই তার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। সেখানে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র লঙ্ঘনের সুযোগ নেই। শুধু তাই নয়, দেশজুড়ে পার্টির সব তৃণমূল নেতা-কর্মীরাও এসব ধারার বিপক্ষে। এটা বাতিল চান লাখ লাখ পল্লীবন্ধুপ্রেমী কর্মী ও সমর্থকরা।
জাপা প্রধানকে পাঠানো আদেশে প্রধান পৃষ্ঠপোষক বলেন, আপনার মন্তব্য অনুযায়ী সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সংসদ ও সরকার পরিচালনা ব্যবস্থা যেমন এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে, ঠিক তেমনই নবম সম্মেলনের মাধ্যমে দলীয় গঠনতন্ত্রে ২০ ধারার উপধারা ১ এর সব উপধারা ও অনুচ্ছেদ। এর মাধ্যমে যখন তখন তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যন্ত কোনো ধরনের শোকজ বা বিনা নোটিশে বহিষ্কার ও অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। যা একজন রাজনৈতিক কর্মীর গণতান্ত্রিক অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রকৃতপক্ষে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ গৃহীত হওয়ার একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও যৌক্তিকতা রয়েছে। কিন্তু জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০ ধারার ১(১), উপধারা-২ ও উপধারা-৩ বর্ণিত বিধানাবলীর সঙ্গে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের ন্যূনতম কোনো মিল নেই।
এসএম/এসএন