‘রওশন এরশাদকে সরানোর প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি বলায় ক্ষিপ্ত জিএম কাদের’
জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করায় এখন মুক্তভাবে ঘোরাফেরা করতে পারবেন মন্তব্য করে মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, জিএম কাদের আমাকে বহিষ্কার করতে পারেন, এটা আমি জানতাম। আমি অখুশি নই।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিতে গণতন্ত্র নেই, গণতান্ত্রিক ধারায় না চললে আমি দলে থাকব না।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সব পদ থেকে অব্যাহতির বিষয়ে জানাতেই তিনি এই সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেন।
তিনি আরও বলেন, আমি কাউন্সিলের সময় বলেছিলাম ওই ধারাটি বদলাতে হবে। আমার গঠনতন্ত্র জিএম কাদেরও চেয়েছিলেন। কিন্তু কিছু চামচার কারণে উনি এই ধারা বহাল রেখেছেন। ধারাটি পরিবর্তন করা না হলে দল করব না। অন্যদলেও যাব না। আগামীতে দুটি দল ছাড়া আর কোনো দল থাকবে না। আমি থাকি, না থাকি যায় আসে না। দলটা যেন ভালোভাবে চলতে পারে, খরা বন্যায় মানুষের পাশে দাঁড়াব।
রাঙ্গা বলেন, আমি শুধু বলেছি, রওশন এরশাদকে সরানোর প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি। এতেই ক্ষেপেছেন জিএম কাদের। আকস্মিকভাবে আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আমি যদিও এখনো চিঠি পাইনি, মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি। ১৮ বছর ধরে প্রেসিডিয়াম সদস্য। আমাকে কোনো শোকজ করা হয়নি, পান দোকানে কর্মচারীকেও বাদ দিতে গেলে শোকজ করা হয়। আমাদের গঠনতন্ত্রে ধারা ১৩-এ চেয়ারম্যান যা খুশি তাই করতে পারেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি রওশন এরশাদ কাউন্সিলের জন্য চিঠি দেন। সেই চিঠির পর পার্টির চেয়ারম্যান আমাকে সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকতে বলেন। আমি এজেন্ডার কথা বললে উনি (চেয়ারম্যান) প্রয়োজন নেই বলেন। আমরা ৩১ আগস্ট সভা করি, চিঠিতে স্বাক্ষর করা হয় ১ সেপ্টেম্বর। রওশন এরশাদকে বিরোধী দলীয় নেতার পদ থেকে সরানোর চিঠি দিতে গেলেন। স্পিকার বললেন, কী দিলেন! এই কয়টা দিন উনি থাকলে কী হতো?
রাঙ্গা বলেন, এরশাদ সাহেব মারা গেলে দল ভাঙার উপক্রম হয়েছিল। একদিকে জিএম কাদের অন্যদিকে রওশন এরশাদ। আমি দুইজনকেই বুঝিয়েছি। রওশন এরশাদ বারবার ডাকলেও আমি তার কাছে যাইনি। দলটি যদি এবার ভাঙে আটবার হবে।
তিনি বলেন, গতকাল আমার ছবিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমার সামনে দিক আপত্তি করব না, এটি গণতান্ত্রিক অধিকার, আমাকে তারা পছন্দ নাও করতে পারেন। গতকাল মারামারি করে লোকজন আহত হয়ে আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারত, তাতে কি দলের ভালো হবে? আমি বলে দিচ্ছি রংপুরে আর কোনো সংঘাত হবে না।
১৪ সেপ্টেম্বর কোনো রকম শোকজ কিংবা নোটিশ ছাড়াই তাকে অব্যাহতি দিয়েছে জাপা। মসিউর রহমান রাঙ্গা গত কাউন্সিলে মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছিলেন। কয়েক মাসের মাথায় তাকে মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে দেন জিএম কাদের। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে জাপার তৎকালীন মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে রাঙ্গাকে মহাসচিব করেছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এরশাদের মৃত্যুর পর জিএম কাদের এর চেয়ারম্যান পদ নিয়ে জাপায় বিভক্তি দেখা দিলে শক্তহাতেই ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন পার্টিকে।
এসএম/এসএন