৪ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর ইসলামী আন্দোলনের স্মারকলিপি
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর চরমোনাই বলেছেন, সিলেবাস থেকে নাস্তিক্যবাদী ও ধর্মহীন শিক্ষা বাদ না দিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধর্মহীন নাস্তিক্যবাদী জাতি বানাতে দিতে পারি না। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড, সভ্যতার মাপকাঠি। সুশিক্ষা ব্যতীত কোনো জাতি সভ্যতার প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না। ঠকবাজির মাধ্যমে যেমন কোনো ব্যবসা টেকে না, তেমনি নীতি, নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ ছাড়া কোনো জাতি উন্নতির শিখরে উঠতে পারে না।’
শনিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে বরিশালের রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঘোষিত পাবলিক পরীক্ষাসহ শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা ও ডারউইনের বিবর্তবাদ সকল সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে দেশব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে দেশব্যাপী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত জাতীয় শিক্ষানীতির প্রাক-কথনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য, এই শিক্ষানীতির উল্লেখযোগ্য দিক হলো-এখানে ধর্ম, বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বর্তমান শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত শিক্ষা কারিকুলাম ২০২১-এ ইসলাম ধর্ম শিক্ষা বাদ দিয়ে মূল্যবোধ ও নৈতিকতা নামে ইসলাম শিক্ষাকে একপ্রকার উপেক্ষা করা হয়েছে যা প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের বিপরীত।
অধিকন্তু ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ইসলাম ধর্ম শিক্ষা বিষয় বাদ দে য়া হয়েছে, যা এদেশের ধর্মপ্রাণ জনগণের মনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। শিক্ষানীতি-২০১০ এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যে বলা হয়েছে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ ধর্ম ও নৈতিকতা শিক্ষার মাধ্যমে উন্নত চরিত্র গঠনে সহায়তা করা।
তিনি আরও বলেন, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা অংশে ইসলাম ধর্ম শিক্ষা সম্পর্কে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের মনে আল্লাহ, রাসূল সা. ও আখিরাতের প্রতি অটল ঈমান ও বিশ্বাস যাতে গড়ে ওঠে এবং তাদের শিক্ষা যেন আচার সর্বস্ব না হয়ে তাদের মধ্যে ইসলামের মর্মবাণীর যথাযথ উপলব্ধি ঘটে, সেভাবে ইসলাম শিক্ষা দেওয়া হবে।
সংগঠনির বরিশাল মহানগর আয়োজিত লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা সৈয়দ নাসির আহমদ কাওছার। এ সময় মহানগর ও থানা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তিনি ৪ ডিসেম্বর সারাদেশে জেলা প্রশাসকের বরাবর স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
পীর চরমোনাই বলেন, নীতিমালার কথার সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নের মধ্যে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। বতর্মান শিক্ষা কারিকুলামে ইসলাম ধর্ম শিক্ষাকে শুধু সঙ্কুচিত ও উপেক্ষাই করা হয়নি বরং রীতিমতো ইসলাম শিক্ষার সঙ্গে উপহাস করা হয়েছে। কেন না ইসলাম ধর্ম শিক্ষাসহ বাংলা সাহিত্য, ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান পাঠে ইসলামী আকিদা সংক্রান্ত বিষয় সমূহ যেমন সংকুচিত করা হয়েছে, অপরদিকে ইসলামী আকিদা বিরোধী বিভিন্ন বিষয় ও পরিভাষার অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছে কৌশলে।
তিনি বলেন, সুশীল ও শিক্ষিত মহল মনে করে, বতর্মান শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রবর্তিত শিক্ষা কারিকুলামে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমষ্টির ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি বরং এর মাধ্যমে দেশে অশান্তির বীজ বপন করা হয়েছে।
এ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবেলায় দেশের সর্বস্তরের সুশীল, শিক্ষিত ও আলেম-ওলামাদের জাগ্রত হওয়ার এখনই সময়। এ সময় তিনি ১০ দফা দাবি জানান।
এমএমএ/