‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জরুরি সম্মিলিত পদক্ষেপ নিতে হবে’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ভয়াবহতা থেকে রক্ষার জন্য মহান রব্বুল আলামিনের কাছে সাহায্য প্রার্থনার আহ্বান করেছেন।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থেকে বেশি বেশি তওবা ও ইস্তেগফার করতে হবে। এর আগেও সিডর, নার্গিস নামে বিভিন্ন বিপদ-আপদ, বালা-মুসিবতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন বিপদ-আপদ, বালা-মুসিবত দিয়ে আমাদেরকে সতর্ক করে থাকেন। যেন আমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভুলে না যাই। যেকোনো বিপদে ধৈর্যহারা না হয়ে মহান রব্বুল আলামিনের উপর পরিপূর্ণ আস্থা রেখে ধৈর্যধারণ করা এবং আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা আমাদের কাজ।
রেজাউল করীম বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। বন্যা, খরা, ভূমিধস, টর্নেডো, শৈত্যপ্রবাহ, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিবছর ব্যাপক সম্পদ ও প্রাণহানি ঘটে। এর মধ্যে ধেয়ে এসেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। এ অবস্থায় সরকার ও সরকারি প্রশাসনকে কার্যকরী ও জরুরি সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
চরমোনাই পীর বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে জনগণের ক্ষয়ক্ষতি, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা। আশ্রয়কেন্দ্রে নারী-পুরুষ ও শিশুদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা এবং শিশু ও বয়স্কদের খাদ্য নিশ্চিত করা, খাবার পানির ব্যবস্থা করা, ঝড়ের সময় মানুষ ও গবাদিপশু ক্ষতিগ্রস্ত থেকে নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীলদের চরম দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার বিষয়ে সদা দৃষ্টি রাখা এবং প্রয়োজনে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
এ ছাড়া গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী সরকারি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার পরামর্শ, নিয়মিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরামর্শ এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উপকূলীয় শাখা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাদের প্রতি জরুরি কিছু নির্দেশনা:
১. জনসচেতনতার জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে মাইকিং
২. পর্যাপ্ত পরিমাণ স্বেচ্ছাসেবক টিম প্রস্তুতকরণ
৩. পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী মজুদ করে রাখা। যাতে বিপদকালীন ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো যায়।
এদিকে দলের আমিরের নির্দেশে একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকালে এ কমিটি গঠন করেন দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। দলের যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলমকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্যের এ কমিটিতে সদস্য সচিব এম আতিকুর রহমান, সদস্য মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা খলিলুর রহমান, উপাধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা শোয়াইব হোসাইন। কমিটিকে সংশ্লিষ্ট সব জেলার খবর নিয়ে রিপোর্ট ও করণীয় বিষয়ে সুপারিশ করতে মহাসচিবের পক্ষ হতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এমপি/এসজি